কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: তাইওয়ানকে দেওয়া অতীতের প্রতিশ্রুতি প্রত্যাহার করল চীন। তাইওয়ানের উপর নিয়ন্ত্রণ কায়েম করতে চীন কোনওদিন ছোট্ট এই দ্বীপরাষ্ট্রে সেনা পাঠাবে না কিংবা স্থানীয় শাসনকর্তা নিয়োগ করবে না, এরকমই একটি প্রতিশ্রুতি দিয়ে রেখেছিল বেজিং। কিন্তু, বুধবার চীনের একটি সরকারি তথ্যে জানা গিয়েছে, প্রেসিডেন্ট জি জিনপিং তাইপেকে আর আগের মতো স্বশাসনের অধিকার দিতে নারাজ। বরং তাইওয়ানের স্বাধীনতা খর্ব করে এলাকা দখল করতে এবার চীন আচমকাই হানাদারি চালাতে পারে।
মার্কিন জনপ্রতিনিধিসভার স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফর নিয়ে চীন প্রথম থেকেই খড়্গহস্ত ছিল। মৌখিক নিন্দা ছাড়াও বেশ কয়েকটি কূটনৈতিক পদক্ষেপও করেছে কমিউনিস্ট শাসকদল। তাইপের ‘স্বাধীন’ সরকারকে ভয় দেখাতে ভারত মহাসাগরীয় এলাকায় সবথেকে বড় সামরিক মহড়া চালিয়েছে চারদিন ধরে। এখনও তাইওয়ানকে ঘিরে চীনা যুদ্ধজাহাজ ঘোরাফেরা করছে। তাইওয়ানের আকাশসীমার খুব কাছ দিয়ে উড়ে চলেছে বোমারু বিমান। শুধু তাই নয়, তাইওয়ানের আকাশ ও জলসীমা লঙ্ঘনের অভিযোগও উঠেছে চীনের বিরুদ্ধে।
তাইওয়ান প্রসঙ্গে ১৯৯৩ এবং ২০০০ সালে প্রকাশিত শ্বেতপত্রে চীন বলেছিল, তাইওয়ানে তারা সেনা কিংবা প্রশাসনিক কর্তা পাঠাবে না। তাইওয়ানকে বিশেষ প্রশাসনিক এলাকা হিসেবে অখণ্ড চীনের অংশ বলে ঘোষণার পর থেকে তারা স্বশাসন ভোগ করে আসছে। কিন্তু, শেষ প্রকাশিত শ্বেতপত্রে সেসব কথার আর উল্লেখ নেই। চীনের কমিউনিস্ট পার্টির প্রস্তাব, তাইওয়ান ‘এক দেশ, দুই প্রশাসন’এর পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারে। ঠিক যেভাবে ১৯৯৭ সালে সাবেক ব্রিটিশ উপনিবেশ সিঙ্গাপুর চীনের অধীনে এসেছিল।
যদিও তাইওয়ানের স্বরাষ্ট্র বিষয়ক পরিষদ ২ হাজার পাতার এই শ্বেতপত্রের নিন্দা করেছে। তারা বলেছে, তাইওয়ানের ভবিষ্যৎ কী হবে, তা এখানকার জনগণই ঠিক করবে। তাইওয়ান স্বৈরতান্ত্রিক কোনও সরকারের সিদ্ধান্ত মেনে নেবে না। চীন এই শ্বেতপত্রে দেশের ‘নয়া যুগ’ বলে বর্ণনা করেছে। যার অর্থ জিনপিংয়ের শাসনকাল। এই বছরের শেষ নাগাদ জি নিজেকে কমিউনিস্ট পার্টি কংগ্রেসে অবিসংবাদিত নেতা হিসেবে তৃতীয় দফার জন্য প্রতিষ্ঠিত করতে চলেছেন।