ইসলামপুর: পঞ্চায়েত ভোটের আগে ইসলামপুর ব্লকের তৃণমূল কংগ্রেসের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব আরও প্রকট হল। মঙ্গলবার ইসলামপুর ব্লক তৃণমূল সভাপতি জাকির হোসেনকে গ্রেফতারের দাবিতে মাটিকুণ্ডা এলাকায় মিছিল করল বিধায়ক করিম চোধুরী অনুগামী তৃণমূলের কর্মীরা। অভিযুক্ত জাকির হোসেনের পাশে দাঁড়ালেন উত্তর দিনাজপুর জেলার তৃণমূল সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়াল। তাঁর দাবি, যে কেউ পুলিশের কাছে অভিযোগ করতেই পারেন। পুলিশ তদন্ত করছে। খুনের ঘটনায় যুক্ত থাকার প্রমাণ পেলে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করবে। যদিও জেলা সভাপতির এই দাবি মানতে নারাজ বিধায়ক আব্দুল করিম চৌধুরী।
এদিন আব্দুল করিম মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়কে পুলিশের হাত খুলে দেওয়ার আর্জি জানান। তিনি জানান, কীভাবে একজন খুনের আসামী পুলিশ প্রশাসনের নাকের ডগায় বসে একটি সাংবাদিক সন্মেলন করতে পারলেন। গোয়েন্দা বিভাগের ব্যার্থতার অভিযোগও করেন তিনি। এমনকী তিনি ফের মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি করেন।
আরও পড়ুন: Biman Banerjee | জীবন গ্রেফতারের খবর দেরিতে কেন, সিবিআইকে চিঠি বিধানসভার স্পিকারের
গত ৮ মার্চ উত্তর দিনাজপুর জেলার ইসলামপুর ব্লকের দক্ষিণ মাটিকুণ্ডা গ্রামে মহম্মদ সাকিব নামে এক ব্যাক্তিকে গুলি করে খুন করা হয়েছিল। মাটিকুণ্ডা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মেহেবুব আলমের গুলিতে ওই সিভিক ভলান্টিয়ার সাকিবের খুন হয়েছিল বলে অভিযোগ। তৃণমূল কংগ্রেসের ইসলামপুর ব্লক সভাপতি জাকির হোসেনের নির্দেশেই এই খুনের ঘটনা ঘটেছিল বলে অভিযোগ ওঠে। মৃত সাকিবের পরিবার ব্লক সভাপতি জাকির হোসেন এবং পঞ্চায়েত প্রধান মেহেবুব আলম সহ বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিল। পুলিশ প্রধান মেহেবুব আলম সহ বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করলেও খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত জাকির হোসেনকে এখনও গ্রেফতার করেনি। এই ঘটনার পর থেকেই ব্লক সভাপতি জাকির হোসেন গাঁ ঢাকা দিয়েছিলেন। পঞ্চায়েত ভোট ঘোষণার আগে রাজ্যের প্রতিটি জেলা, ব্লক এবং অঞ্চল কমিটি ঘোষণার নির্দেশ দিয়েছে দলের রাজ্য কমিটি। নির্দেশ মেনে জেলায় জেলায় পূর্ণাঙ্গ জেলা কমিটি ঘোষণা হয়েছে।
সোমবার অর্থাৎ ১৭ এপ্রিল রাজ্য জুড়ে ব্লক সভাপতিরা অঞ্চল কমিটি ঘোষণার শেষ তারিখ ছিল। দলের এই নির্দেশ বেশ খানিকটা বেকায়দায় পড়ে যান সাকিব খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত ফেরার জাকির হোসেন। পুলিশ তাঁকে কোনওভাবেই ছুঁতে না পারেন, তারজন্য কানাইয়ালালের অনুগামী ও যুব তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কোশিক গুন সহ অন্যান্য নেতাদের পাশে বসিয়ে অঞ্চল কমিটি ঘোষনা করেন ব্লক সভাপতি জাকির হোসেন। এই ঘটনার পরই মাটিকুণ্ডা গ্রামের মানুষ ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন।