শিলিগুড়ি: পাকিস্তান এবং বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া তিন রাজ্যে বিএসএফের ক্ষমতা বাড়িয়েছে কেন্দ্র। এতদিন বিএসএফের কার্যক্ষেত্রের পরিধি আন্তর্জাতিক সীমান্ত থেকে ১৫ কিলোমিটার পর্যন্ত ছিল। পঞ্জাব, অসম এবং পশ্চিমবঙ্গে তা বাড়িয়ে ৫০ কিলোমিটার করা হয়েছে। আগেই এই বিষয়ে ক্ষোভ জানিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আজ, সোমবার প্রশাসনিক বৈঠক থেকে এই সিদ্ধান্তের কড়া নিন্দা করলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। মমতা বলেন, ১৫ কিলোমিটার এলাকা থাকতেই কখনও বালুরঘাট, কখনও হিলিতে ঢুকে গুলি চালাতো। কোচবিহারেও চালিয়েছে। কখনও কোনও বিচার হয়নি। ৫০ কিলোমিটার হলে কী করবে বোঝাই যাচ্ছে। এই সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর উপর আঘাত। আমি ইতিমধ্যেই চিঠি দিয়েছে। পঞ্জাব, পশ্চিমবঙ্গ এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: কেন্দ্রের নির্দেশে বিএসএফের হাতে অতিরিক্ত ক্ষমতা, বাংলাকে টুকরো করার চেষ্টা বললেন তৃণমূল সাংসদ
কেন্দ্রের উদ্দেশে মমতার বার্তা, অযথা কনফিউশন বাড়িয়ে লাভ নেই। আইনশৃঙ্খলা পুলিশের বিষয়। বিএসএফের যেটা কাজ, সেটাই ঠিক করে করুক। আমাদের পূর্ণ সমর্থন থাকবে। রাজ্য সরকার নিজেদের আইনে চলবে। আমাদের রাজ্যে বর্ডারে কোনও সমস্যা নেই। সবার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রয়েছে। উত্তরবঙ্গে জেলাগুলির জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারদের নিয়মিত নাকা চেকিং করার নির্দেশও দেন মমতা।
সম্প্রতি পাকিস্তান এবং বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া তিন রাজ্যে বিএসএফের ক্ষমতা বাড়িয়েছে কেন্দ্র। পঞ্জাব, অসম এবং পশ্চিমবঙ্গে আন্তর্জাতিক সীমান্ত থেকে ভারতীয় ভূখণ্ডে ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত এলাকায় তল্লাশি চালাতে পারবে বিএসএফ। প্রয়োজনমাফিক জিজ্ঞাসাবাদ, গ্রেফতার এবং বাজেয়াপ্ত করার কাজ করতে পারবে তারা। CrPC, পাসপোর্ট আইন এবং পাসপোর্ট (ভারতে প্রবেশ) আইনের অধীনে এই ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: সীমান্ত পাহারায় আরও বেশি ক্ষমতা বিএসএফের হাতে, বাংলা-পঞ্জাবকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা?
বিএসএফের ক্ষমতা বৃদ্ধির জেরে উত্তরবঙ্গের সিংহভাগ এলাকা সহ বাংলার ৩৩ শতাংশ এলাকার নিয়ন্ত্রণ চলে যাচ্ছে কেন্দ্রের হাতে। বিএসএফের ক্ষমতাবৃদ্ধি প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বক্তব্য, দেশের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখেই সীমান্ত সংলগ্ন কয়েকটি রাজ্যে বিএসএফের ক্ষমতা কিছুটা বাড়ানো হয়েছে। যদিও কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের ফলে পুলিশ এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে বিএসএফের সংঘাত আরও বাড়বে বলে মনে করছে আরেকটি মহল।