কলকাতা: সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি বিধানসভার স্পিকারের। তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহাকে গ্রেফতারের খবর কেন ৪৮ ঘণ্টা পর বিধানসভাকে জানানো হল, সে ব্যাপারে সিবিআইয়ের কৈফিয়ত তলব করা হল। স্পিকার জানান, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে জবাব দিতে হবে। না হলে বিধানসভা যথযথ আইনি ব্যবস্থা নেবে। তাঁর দাবি, বিধানসভার অনেক আইনি সংস্থান আছে। তিনি বলেন, আমি নীরব দর্শক হয়ে থাকতে পারি না। স্পিকার এদিনই সিবিআইয়ের ডিআইজিকে চিঠি দিয়ে জবাব চেয়েছেন।
স্পিকার মঙ্গলবার জানান, বিধানসভার নিয়ম অনুযায়ী কোনও বিধায়ককে গ্রেফতার করা হলে অবিলম্বে তা বিধানসভাকে জানাতে হয়। কিন্তু সিবিআই জীবনকৃষ্ণের গ্রেফতারির বিষয়ে ৪৮ ঘণ্টা পর বিধানসভাকে খবর দিয়েছে। তিনি বলেন, বিধানসভাকে অবজ্ঞা করার, এড়িয়ে চলার দৃষ্টান্ত এটি। সিবিআই বা কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা যেভাবে বারবার বিধানসভাকে এড়িয়ে চলছে, তা চলতে পারে না।
আরও পড়ুন: Birbhum BJP | শাহ’র সভার পরেই বীরভূম বিজেপিতে ভাঙন, ইস্তফা উপপ্রধানের
প্রসঙ্গত, সোমবার ভোরে মুর্শিদাবাদের বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহাকে নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ডে গ্রেফতার করে সিবিআই। তার আগে জীবনের আন্দির বাড়িতে দীর্ঘ প্রায় ৬৫ ঘণ্টা তল্লাশি চালায় সিবিআই। তাঁকে এবং পরিবারের অন্য সদস্যদের বাড়ির বাইরে যেতে দেওয়া হয়নি। তিনি সিবিআই অফিসারদের নজর এড়িয়ে দুটি মোবাইল বাড়ির পুকুরে ফেলে দেন। সিবিআই পাম্প চালিয়ে জল ছেঁচে সেই মোবাইলদুটি উদ্ধার করে। স্পিকার জানান, সিবিআই সেই গ্রেফতারির খবর মঙ্গলবার বিকেল তিনটে দশ মিনিটে বিধানসভাকে জানায়। এতেই ক্ষুব্ধ হন স্পিকার।
স্পিকার বলেন, বিধানসভার অনেক সংস্থান আছে। সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কী কী সেই সংস্থান, তা আমি বলব না। বিধানসভাকে দুর্বল ভাবার কোনও কারণ নেই। বারবার একই ঘটনা ঘটতে দেওয়া যায় না।
জীবনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি নিজে এজেন্ট হিসেবে স্কুলে চাকরি দেওয়ার নামে কোটি কোটি টাকা তুলেছেন। তাঁর সঙ্গে জেলবন্দি শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। তাকে কাজে লাগিয়েই জীবন টাকা তুলেছে নিজের জেলা এবং বাইরের জেলা থেকেই।
সোমবার জীবনের গ্রেফতারি নিয়ে মুখ খোলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তিনি বলেন, ঘর থেকে টাকা পাওয়া গেলেই একজন দোষী হয়ে যায় না। আসলে একের পর এক বিধায়ককে গ্রেফতার করে বিধানসভায় আমাদের বিধায়ক সংখ্যা কমানোর চক্রান্ত করছে বিজেপি।