বাঁকুড়া: টুসু গানের (Tusus Song) কথায় ফুটে ওঠে সমাজ জীবনের নানান কাহিনী। সারা পৌষ (Poush) মাস ধরে সন্ধ্যা নামলে শোনা যায় রাঢ় বাংলার সেই চেনা মেঠো কোরাস। টুসু গানে টুসু বন্দনার মধ্য দিয়ে জানান দেয় আসছে মকর পরব। কিছুটা ফিকে হয়েছে টুসু গান ও বন্দনায়। তবে টুসু শিল্পী আর তাদের উৎসাহে যুগের সাথে পাল্লা দিয়ে বেঁচে আছে টুসু গানের সেই চেনা সুর। আর সেই চেনা সুর শোনা গেলে বাঁকুড়া (Bankura) শহর লাগোয়া রামুরডাঙ্গা গ্রামে।
ভাদ্র মাসে ভাদু, অঘ্রাণে ইতু আর পৌষে টুসু হল রাঢ় বাংলার অতি প্রাচীন লোক সংস্কৃতি। তবে পৌষে টুসু বন্দনার সঙ্গে পিঠে পুলির উৎসব জমে ওঠে লাল মাটির জেলা বাঁকুড়ায়। বর্তমান সমাজের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সারা পৌষের সন্ধ্যায় গ্রামের অলি গলি আর মেঠো পথে শোনা যায় টুসু গানের চেনা কোরাস। মানুষের জীবনের সুখ দুঃখ সামাজিক নানান কাহিনী থাকে টুসু গানের কথায়। সেই কথা সুর মিলিয়ে গেয়ে টুসুর বন্দনা টিকে আছে রাঙা মাটির দেশে। পৌষ মাস পড়লেই মাটির খোলাতে ধানের টুস দিয়ে তাতে গাঁদা ফুল আর প্রদীপ দিয়ে সাজিয়ে করা হয় টুসু বন্দনা। সারা পৌষ মাস ধরে সন্ধ্যা বেলা বাঁধানো গানের মধ্য দিয়ে টূসু বন্দনা করা হয়। একমাস ধরে এইভাবেই গানের মধ্য দিয়ে টুসু আরাধনা আর পৌষের সংক্রান্তিতে বিসর্জন দিয়ে টুসুকে বিদায় জানানো হয়৷
আরও পড়ুন: সন্দেশখালির ঘটনায় গ্রেফতারের সংখ্যা বেড়ে হল ৪
শিল্লীদের কথায়, টুসু হল ঘরের মেয়ে। একমাস বাড়ির মেয়ের মতো রাখা হয় গানের মধ্য দিয়ে। টুসু গানের মধ্য দিয়ে টুসুর নানান আচারও পালন করা হয়। এইভাবেই পরম্পরায় প্রাচীন এই লোক সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রেখেছেন টুসু শিল্লীরা। তবে টুসুর রেওয়াজ কিছুটা ফিকে হয়েছে ঠিকই কিন্তু পৌষ এর সন্ধ্যা নামলে সেই মেঠো টুসু গানের সুর জানান দেয় বাংলার এই লোকসংস্কৃতিকে। টুসু শিল্লীদের উৎসাহে টুসু গান আর পৌষ উৎসব ফিরিয়ে আনে হারানো সেই নস্টালজিয়াকে।
আরও খবর দেখুন