বসিরহাট: তিনি সক্রিয়ভাবে দল করেন না বলে দাবি করলেন সন্দেশখালির (Sandeshkhali) তৃণমূল বিধায়ক সুকুমার মাহাত (Sukumar Mahato)। শুক্রবার সুকুমার সাংবাদিকদের কাছে স্বীকার করেন, গত ৫ জানুয়ারি বাড়িতে ইডি অফিসারদের উপর হামলার পর শাহজাহানকে তিনিই ফোন করে আর যাতে মারামারি বা গোলমাল না হয়, তা দেখতে বলেছিলেন।
সুকুমার বলেন, সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ যখন আমি ফোন করি, তখন সব ঝামেলা মিটে গিয়েছে। এর পরই বিধায়ক বলেন, আমি তো সক্রিয়ভাবে দল করি না। মানুষ আমাকে ভোট দিয়েছেন। বিধায়ক হিসেবে যেটুকু করার করি।
স্থানীয়রা অবশ্য বিধায়কের এই দাবি মানতে নারাজ। এলাকার অনেকেই বলেন, শেখ শাহজাহানের সঙ্গে বিধায়কের দারুণ দহরম মহরম রয়েছে। এমনকী ৫ জানুয়ারির ঘটনার পর তিনি শাহজাহান নির্দোষ বলেও দাবি করেছিলেন। বিরোধীরা বিধায়ককে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি। বিজেপির স্থানীয় নেতারা বলেন, এখন শাহজাহান সিবিআই হেফাজতে চলে গিয়েছেন। তাই ইডি, সিবিআইয়ের ভয়ে বিধায়ক পিঠ বাঁচানোর জন্য সক্রিয়ভাবে দল না করার কথা বলছেন। বিজেপির জেলা নেতা তাপস মিত্র বলেন, সন্দেশখালির বেশিরভাগ তৃণমূল নেতার সঙ্গেই শাহজাহানের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। সুকুমারের এই মন্তব্য ঘিরে শাসকদলের অন্দরেও প্রশ্ন উঠেছে। এক নেতা বলেন, বিধায়ক এ কথা বলতে গেলেন কেন, জানি না।
আরও পড়ুন: বিচারপতি এসএসসিকে বলেন, আপনারা কী লুকাতে চাইছেন?
শাহজাহানের দুটি মোবাইল ফোনের কল ডিটেল এখন সিবিআইয়ের কাছে বড় তাস। ওইদিন শাহজাহানের সঙ্গে কোন কোন নেতার সঙ্গে কথা হয়েছিল, সিবিআই সেই তালিকা তৈরি করছে। সিবিআই সূত্রের দাবি, কল ডিটেল খতিয়ে দেখেই তারা বিধায়কের নাম জানতে পারে। শাহজাহান সিবিআইয়ের কাছে দাবি করেন, ঘটনার দিন তিনি কাউকে ফোন করেননি। তবে তাঁকে অনেকে ফোন করেছিলেন। ইডি ৫ জানুয়ারির পরই জানায়, ওইদিন অফিসাররা শাহজাহানের দুটি ফোনেই কথা বলার চেষ্টা করেন। একটি ফোন কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই কেটে যায়। অপর মোবাইলটি দীর্ঘক্ষণ ধরে ব্যস্ত ছিল।
এদিকে সিবিআই এদিন সকাল থেকে সন্দেশখালিতে অভিযান চালায়। গ্রামের অনেকের সঙ্গে কথা বলেন অফিসাররা।
শাহজাহানের মাছের আড়তের ম্যানেজার দিলদার বক্সকে দীর্ঘক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এই দিলদারই ইডির বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেন। এছাড়া ডুগরিপাড়ায় দিন আলি শেখের বাড়িতেও সিবিআই অফিসাররা যান। তিনি বাড়িতে ছিলেন না। অফিসাররা পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন। শাহজাহান ঘনিষ্ঠদের খোঁজে সিবিআইয়ের একটি দল ক্যানিং থানার হামিদপুরেও যায়।
আরও খবর দেখুন