কলকাতা: ২০১৪ সালে প্রাথমিকের টেট পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে ভুল নিয়ে তিন সদস্যের যে বিশেষজ্ঞ কমিটি করা হয়েছিল, তাঁদের বয়ানে বিস্তর অসঙ্গতি রয়েছে বলে আদালতের পর্যবেক্ষণ। আদালতের নির্দেশে কমিটির দুই সদস্য দেবজ্যোতি ঘোষ এবং পঞ্চানন রায় শুক্রবার বিচারপতি অভিজিত গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে হাজির হন। অপর সদস্য ৮৫ বছরের বৃদ্ধা সিস্টার এমিলিয়া অশক্ত থাকায় হলফনামা জমা দেন। দুই সদস্যের বয়ান বিশ্বাসযোগ্য বলে মনে হয়নি আদালতের।
এদিন আদালত দেবজ্যোতি এবং পঞ্চাননের বয়ান রেকর্ড করে। তাঁরা জানান, কমিটির বৈঠকে ঢোকার সময়ে রেজিস্টারে সই করতেন। কিন্তু মিনিটস বা রেজোলিউশনে তাঁরা সই করতেন না। আদালত জানতে চায়, ২০১৭ সালের ২০ নভেম্বর প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ বিশেষজ্ঞ কমিটির যে বৈঠক জাকে, তাতে তাঁরা হাজির ছিলেন কি না। দুজনেই জানান, তাঁরা হাজির ছিলেন। অপর সদস্য এমিলিয়া জানান, সব টেট পরীক্ষার্থীকে ভুল প্রশ্নের জন্য বাড়তি ১ নম্বর করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।
আরও পড়ুন: Paresh Adhikari ED: টানা ৯ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর পরেশের বাড়ি ছাড়ল ইডি
আদালতের আরও পর্যবেক্ষণ, কোনও বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই দ্বিতীয় নিয়োগ তালিকা প্রস্তুত করে পর্ষদ। মোট ২৭৩ জনের তালিকা প্রকাশ করা হয়। সেই তালিকা থেকে ২৬৫ জনের চাকরি হয়। আদালত আগেই এই ২৬৫ জনের চাকরি বাতিল বলে ঘোষণা করে। তাঁদের মধ্যে কয়েকজন একক বে়ঞ্চের এই রায়ের বিরুদ্ধে ডিভিশন বেঞ্চে আপিল করেছেন। সেই আপিল মামলারও শুনানি চলছে বিচারপতি সুব্রত তালুকদার এবং বিচারপতি লোপিতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে।
আরও পড়ুন: আদালতের উপর অভিমান, প্রাথমিকে নিয়োগ মামলা থেকে সরে দাঁড়ালেন সিবিআই আইনজীবী
আদালত দেবজ্যোতি এবং পঞ্চাননকে আগামিকাল, শনিবার দুপুরে সিবিআই গঠিত সিটের মুখোমুখি হওয়ার নির্দেশ দেয়। পর্ষদ আদালতে হলফনামা দিয়ে জানিয়েছিল, বিশেষজ্ঞ কমিটির বৈঠকে প্রশ্ন ভুলের জন্য বাড়তি ১ নম্বর দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। তার ভিত্তিতেই ২৭৩ জনের তালিকা তৈরি হয়। কিন্তু আদালত দেখে, বৈঠকের নথিতে পর্ষদ সভাপতি ছাড়া বাকি তিন সদস্যের স্বাক্ষর নেই। আদালতের প্রশ্ন, কমিটির কোনও কোনও সদস্য বলছেন, সব পরীক্ষার্থীকে বাড়তি ১ নম্বর করে দিতে বলা হয়েছিল। তা হলে বেছে বেছে কেন ২৭৩ জনকে ১ নম্বর করে দেওয়া হল।