কলকাতা: ১২ টি অ্যাকাউন্টের (Account) হদিশ, সিবিআই স্ক্যানারে এবার জীবনকৃষ্ণ সাহা (Jiban Krishna Saha) ও তাঁর স্ত্রী টগরির সম্পত্তি। যা দেখে রীতিমতো চোখ কপালে তদন্তকারীদের। রাষ্ট্রায়ত্ত ও বেসরকারি ব্যাঙ্ক মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত ১২টি অ্যাকাউন্টের (Account) হদিশ মিলেছে। এগুলির মধ্যে বিধায়কের নামে চারটি ও তাঁর স্ত্রীর নামে তিনটি অ্যাকাউন্ট রয়েছে। এই অ্যাকাউন্টগুলিতে লেনদেন সংক্রান্ত যাবতীয় নথি বিভিন্ন ব্যাঙ্কের কাছে চেয়ে পাঠিয়েছে সিবিআই (CBI)। সিবিআই আধিকারিকদের দাবি, তাঁর মোট সম্পত্তির পরিমাণ ৩০০ কোটি ছাড়াতে পারে। মঙ্গলবার জীবনের স্ত্রীকে নিজাম প্যালেসে তলব করা হয়। তাঁকে বেশ কিছুক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদ করেন সিবিআই অফিসাররা। বিকেল ৪টে নাগাদ টগরি সিবিআই দফতর ছেড়ে বেরিয়ে যান।
কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দাবি, শুধু মুর্শিদাবাদ নয়, বীরভূমের বিভিন্ন ব্যাঙ্কেও জীবনকৃষ্ণের অ্যাকাউন্ট রয়েছে। বীরভূমের সাঁইথিয়া, তালতোড়, তাতারপুর, বাঁধগোড়া ছাড়াও মুর্শিদাবাদের আন্দিতে বিধায়ক ও তাঁর স্ত্রীর নামে একাধিক সম্পত্তি রয়েছে। যার আনুমানিক মূল্য ৮-১০ কোটি টাকা। এছাড়া, জীবনকৃষ্ণের আর কোনও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বা সম্পত্তি রয়েছে কি না, তা খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে সিবিআই। বীরভূমের চার-পাঁচটি জায়গায় স্ত্রী ও জীবনের নামে জমি-বাড়ি রয়েছে। অন্য কোনও আত্মীয়র নামে আরও কোনও সম্পত্তি আছে কিনা, তার খোঁজখবর শুরু করেছেন সিবিআই আধিকারিকরা। জীবনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেও সম্পত্তি ও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের খোঁজ চলছে।
আরও পড়ুন:Jalpaiguri Didir doot | চেয়ার ছেড়ে উঠে না দাঁড়ানোয় অফিসারকে কড়া ধমক তৃণমূল বিধায়কের
সূত্রের দাবি, জীবনের হিসেববহির্ভূত বহু সম্পত্তির হদিশ পেয়েছে সিবিআই। বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে মিলেছে একাধিক এজেন্টের নাম, মোবাইল নম্বর সহ একাধিক তথ্য। তাঁদের সঙ্গে জীবনের কীভাবে তথ্য ও টাকা-পয়সা লেনদেন হত, আদৌ তা হত কি না, সেই সংক্রান্ত তথ্যও জীবনকে জিজ্ঞাসাবাদে মিলেছে বলে দাবি সিবিআইয়ের।
শুধু নিয়োগ দুর্নীতি (Recruitment Scam) নয়, গরু পাচার কাণ্ডেও (Cow Smugling Case) যোগ রয়েছে বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার (Jiban Krishna Saha), এমনটাই দাবি সিবিআইয়ের (CBI)। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দাবি, গরু পাচারের সঙ্গে সরাসরিই যোগ রয়েছে ধৃত তৃণমূল বিধায়কের (TMC MLA)। প্রায় ৬৫ ঘণ্টা ম্যারাথন তল্লাশির পর সোমবার ভোর ৫টা নাগাদ জীবনকৃষ্ণ সাহাকে বড়ঞার আন্দির বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে সিবিআই (CBI)। নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ডে তদন্তে অসহযোগিতা ও তথ্য প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা, মূলত এই দুই অভিযোগের ভিত্তিতেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে সিবিআই সূত্রে খবর।
বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা (Jiban Krishna Saha) অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mandal) ঘনিষ্ঠ ছিলেন বলে জানা গিয়েছে। অনুব্রতের গ্রেফতারের পর থেকেই সিবিআই স্ক্যানারে ছিলেন বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ। বীরভূমে জীবনের একাধিক সম্পত্তির হদিশও মিলেছে। তদন্তকারীরা গরু পাচারে জীবনের ভূমিকা খতিয়ে দেখছিলেন। সিবিআই সূ্ত্রে জানা গিয়েছে, বীরভূম থেকে গরু মুর্শিদাবাদ হয়েই পাচার করা হত। এই গরু যখন জীবনকৃষ্ণের এলাকা দিয়ে পাচারের জন্য নিয়ে যাওয়া হত, তখন তিনিও সেখান থেকে টাকা তুলতেন বলে জানতে পেরেছে সিবিআই। অনুব্রত মণ্ডলের গ্রেফতারির পর থেকেই এ সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য সিবিআইয়ের হাতে আসে।