Placeholder canvas
কলকাতা রবিবার, ০২ জুন ২০২৪ |
K:T:V Clock

Placeholder canvas
চতুর্থ স্তম্ভ: কার বিকাশ?
সম্পাদক Published By:  • | Edited By:
  • প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার, ২৬ আগস্ট, ২০২১, ১০:৪৭:২৮ পিএম
  • / ৩৫৭ বার খবরটি পড়া হয়েছে
  • • | Edited By:

পাঁচজন সহায়ক শিক্ষিকা বিকাশ ভবনের সামনে প্রতিবাদ করতে এলেন, সঙ্গে কিছুটা বিষ নিয়ে এলেন, খেলেন। মানে আত্মহত্যার চেষ্টা করলেন, তারপর তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হল, আপাতত তাঁরা বিপদমুক্ত। এই সহায়ক শিক্ষিকাদের মাস মাইনে ১০,৩৪০ টাকা ছিল, কিছুদিন আগে তা বাড়িয়ে ১৩,৩৯০ টাকা করা হয়। মানে ৩০৫০ টাকা বৃদ্ধি, বছরে ৩% করে তাঁদের মাইনে বৃদ্ধি হবে। তাঁদের প্রত্যেককে পরিবার সমেত স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের আওতায় আনা হয়েছে। বছরে ১৮ দিন ক্যাজুয়াল লিভ দেওয়া হচ্ছে, মেডিক্যাল লিভও আছে। গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে, তাঁদের প্রভিডেন্ড ফান্ডেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। এটা কি যথেষ্ট? কখনোই না। শিক্ষক হিসেবে, তাঁরা এর থেকে বেশি দাবি করতেই পারেন, পাওয়াও উচিত। একথা শুধু তাঁদের জন্যই নয়, প্রত্যেক চাকুরিজীবীদের ক্ষেত্রেই একই কথা বলা যায়, মাইনে বাড়ানো, সুযোগ সুবিধা বাড়ানোর দাবি চলতেই থাকে, সেটাই স্বাভাবিক। প্রশ্ন হল সেই দাবি নিয়ে আন্দোলন চলাকালীন, তাঁদের পাঁচ জন শিক্ষা দফতর, বিকাশ ভবনের সামনে হাজির হয়ে বিষ খাবেন? এটা কী ধরনের আন্দোলন? কেমন আন্দোলন? আন্দোলনের বহু ধরন আমরা দেখেছি, মিছিল, মিটিং, শ্লোগান, ডেপুটেশন, ধরণা, অবরোধ, অনশন, গণঅনশন। এসব আমরা জানি। ৬৩ দিন অনশনে বসে মারা গিয়েছিলেন বিপ্লবী যতীন দাস, আইরিশ বিপ্লবীদের কথাও আমরা জানি, লাগাতার অনশন করেছেন, মারাও গেছেন, গান্ধীজি অনশনকে এক ধারালো হাতিয়ার করে তুলেছিলেন, কিন্তু পকেটে বিষ নিয়ে গিয়ে তা খেয়ে আত্মহত্যা? কে কবে কোথায় শুনেছে? এমন কি বিরাট মানুষজন জড় করে গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যার হুমকি, কিম্বা সত্যিই গায়ে আগুন লাগানোর ঘটনাও এদেশে হয়েছে, কিন্তু পাঁচজন মহিলা বিকাশ ভবনের সামনে হাজির হলেন, প্রতিবাদ জানানোর জন্য বিষ খেলেন, এ ঘটনা অভূতপূর্ব। আন্দোলনের এ স্টাইল আমাদের জানা নেই!

 শ্বশুর বাড়িতে অত্যাচার না সহ্য করতে পেরে, প্রেমিক বা প্রেমিকার সম্পর্কে ভাঙন ধরার পরে এমন ঘটনা অবশ্য আকছার ঘটে। তাকে অবশ্য আন্দোলন বলে না, এ ধরনের মানসিক অবস্থাকে, আত্মহত্যার প্রবণতাকে সাইক্রিয়াটিস্টরা অসুস্থতা বলছেন, কমরেড বিকাশ ভট্টাচার্য অবশ্য একে আন্দোলন বলেই মনে করেন। তিনি বলেছেন, তিনি নিশ্চিত যে এটা শিক্ষকদের দাবি প্রতিষ্ঠার লড়াই। তাঁকে অশিক্ষিতও বলা যাবে না। বিএসসি অনার্স করার পরে এলএলবিও পাশ করেছেন। টাটারও উকিল, বিজেপি নেতারও উকিল, কংগ্রেসেরও উকিল, মার্কসবাদী কমিউনিস্ট দলের সাংসদও বটে। এরকম এক রঙিন, বর্ণময় মানুষ আসরে নেমেছেন এই অপরিনামদর্শী অবিবেচক হঠকারিতাকে সমর্থন করতে, অবশ্য এটা নতুন কিছু নয়, এই অবিমৃষ্যকারিতা তিনে আগেও দেখিয়েছেন, রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে গোমাংস খেয়ে। গোমাংস খাওয়া অন্যায় নয়, খাবার মানুষের ব্যক্তিগত রুচি, তাতে যারা ধর্ম মানে তার প্রভাবও থাকতে পারে, তা নিয়ে ফতোয়া দেয় আরএসএস – বিজেপি, তার প্রতিবাদ হওয়াই উচিত। তাই বলে প্রকাশ্যে চৌরাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে গোমাংস খেয়ে, নিজেকে সেকুলার জাহির করার মত অবিমৃষ্যকারিতা তিনি দেখিয়েছেন। সেই তিনিই আবার মাঠে এবার আত্মহত্যার চেষ্টাকে আন্দোলন, দাবি প্রতিষ্ঠার লড়াই বলে ঘোষণা দিলেন। তাঁর দল? সম্ভবত এখনও অতটা অবিবেচক নয়, এখনও সিপিএম এই ঘটনাকে সমর্থন করে কোনও বিবৃতি দেয়নি, কিন্তু দিলীপ ঘোষ দিয়েছেন। যিনি গরুর কুঁজে সোনা খুঁজে পান, সেই তেনার সঙ্গে এনার মত মিলে গেলো। গৈরিক অভিনন্দন জানানো ছাড়া আমাদের আর কিই বা করার থাকতে পারে?

এদিকে কমরেড বিকাশ ভট্টাচার্য কমিউনিস্ট, উনি গরীব, খেটে খাওয়া মানুষের আন্দোলনের কথা বলেন, ভ্যানগার্ড অফ দ্য প্রোলেতারিয়েত কমিউনিস্ট পার্টির সাংসদও বটে। গ্রিসে, বহুকাল আগে থিয়েটারে পুরুষরাই মহিলাদের ভূমিকায় নামতেন, বাইরে বিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ থাকতো। লেখা থাকতো, লুক, দ্য মেল আর প্লেয়িং ফিমেল, ওহে দর্শকগণ, এখানে যে মেয়েদের দেখছেন, তাঁরা মহিলা নন, পুরুষ। তেমনি মার্কসবাদী কমরেড বিকাশ ভট্টাচার্যের প্রসঙ্গ আসার আগেই, বলে রাখা উচিত, উনি গরীবদের কথা বলেন মাত্র, উনি গরীব নন, কারণ ওনার দেওয়া হিসেব মত, ওনার বাসভবনের মূল্য মাত্র  ৩ কোটি ৫৬ লক্ষ! হ্যাঁ মাত্র ৩ কোটি ৫৬ লক্ষ টাকা। উনি এবং ওনার ছোট্ট পরিবার থাকেন মাত্র ৫০০০ স্কোয়ার ফুটের এক বাড়িতে, উনিই জানিয়েছেন। আন্ডার ভ্যালুয়েশন কিনা তা তো উনিই বলতে পারবেন, ৫০০০ স্কোয়ার ফিটের বাড়িতে থেকেও, ওনার মন প্রাণ হু হু করে কাঁদে গরীবদের জন্য। তাই বার কয়েক নির্বাচনেও দাঁড়িয়েছিলেন, মেয়রও হয়েছিলেন, কলকাতা পুরসভার ব্যর্থ মেয়রদের তালিকায় তিনি শিখরে। তাঁর সময়ে কলকাতার রাস্তাঘাট আমরা দেখেছি, এখনও দেখছি, মানুষও জানেন, জানেন বলেই দায়িত্ব নিয়ে তাঁকে, তাঁর দলকে অপসারণও করেছে। তো সেই তিনি ২০১৯ এ লোকসভা  নির্বাচনে সিপিএম প্রার্থী হলেন, হেরেছেন কেবল নয়, তৃতীয় স্থানে চলে গেছেন, এটাও আমরা জানি। কিন্তু এনার নির্বাচনী প্রচারের মধ্যে ছিল এক জঘন্য বিশ্বাসঘাতকতা, আজ বলা যাক।

তিনি ভাঙর এলাকায় প্রচার করছিলেন, ওই অঞ্চলে সিপিআইএমএল রেড স্টার, ভাঙড় পাওয়ার গ্রিড নিয়ে দীর্ঘদিন আন্দোলন চালিয়েছে। ওই চত্ত্বরে তাঁদের বেশ কিছুটা প্রভাব আছে, যখন এই আন্দোলনের নেতারা রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে, তাঁদের বেশ কিছু দাবি মেটানোর পর আন্দোলন প্রত্যাহার করেন, তখন সিপিএমের তরফে তা, একতরফা এবং ভাঙড় আন্দোলনের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা বলেই প্রচার চালানো হয়। তো সে যাই হোক, কমরেড বিকাশ ভট্টাচার্য সেই রেড স্টার নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন, তাঁরা বলেন ঠিক আছে, সাংসদ নির্বাচনে আমরা আমাদের সমর্থন আপনাদের দিচ্ছি, কিন্তু বিধানসভা নির্বাচনে আমরা ভাঙড় আসনে লড়বো, তখন এই আসনে আপনাদের সাহায্য চাই। বিকাশবাবু এক কথায় রাজি, রেডস্টারের নেতারা, অলীক, শর্মিষ্ঠা, শঙ্কর ইত্যাদিরা মিছিল মিটিং করে কমরেড বিকাশ ভট্টাচার্যকে তাঁদের সমর্থনের কথা বললেন, তাঁদের সমর্থনের পরেও বিকাশবাবু তৃতীয়, এবার বিধানসভার নির্বাচন এল, রেড স্টার কমরেড বিকাশ বাবুর সঙ্গে কথা বলে প্রতিশ্রুতির কথা মনে করালেন, প্রমিশেস আর মেড টু বি ব্রোকেন, নেতাদের প্রতিশ্রুতি তো আরও ঠুনকো, বিকাশবাবুরা তখন আব্বাস, সাব্বাস। আইএসএফের সঙ্গে জোটের কথা চালাচ্ছেন, অতএব ভাঙড় গেল আইএসএফের হাতে। রাজনৈতিক বিশ্বাসঘাতকতা, সিপিএমের প্রথম নয়, কিন্তু বিকাশবাবু? তিনি এনিয়ে কোনও কথা বললেন না। সেই তিনি এখন, আন্দোলনের নয়া রূপরেখা তৈরি করেছেন, খানিক শ্মশানে বসে থাকা অঘোরীবাবাদের মত, সেই তান্ত্রিকদের মত, যারা শবদেহের ওপর বসে তন্ত্রসাধনা করে। যত লাশ, তত ধোঁওয়া, তত মন্ত্রপাঠ, তত উল্লাস। এরপর বেকার ছেলেরা চাকরির দাবীতে নবান্ন ঘেরাও না করে, নবান্নের সামনে গিয়ে আত্মহত্যা করবে।! রাজ্য সরকারী কর্মচারীরা ডি এর দাবীতে রাজ্য জুড়ে আন্দোলনের বদলে, কালিঘাটে গিয়ে আত্মহত্যা করবে! শ্রমিকরা, শহীদ মিনার কিম্বা ব্রিগেডে জনসমাবেশ না করে চৌরঙ্গীতে চার পাঁচজন মিলে আত্মহত্যা করবে! কৃষকরা সারা ভারতের কৃষকদের আন্দোলনের সঙ্গে না থেকে, গড়ের মাঠে ফলিডল খেয়ে মরবে! যেটাকে কমরেড বিকাশ ভট্টাচার্য দাবি প্রতিষ্ঠার লড়াই বলবেন, এবং সুচেতনা এই পথেই নাকি ক্রমমুক্তি হবে, এই পথেই নাকি সমাজ বদল হবে।

আর এই সমাজ বদলের প্রতিষ্ঠাতা, কমরেড বিকাশ ভট্টাচার্য নবজীবনের গান নয়, পিশাচ সাধনায় মেতে উঠবেন, ফলিডলের সাপ্লাই দেবেন! কি অসাধারণ দর্শন বলুন তো? পাশাপাশি চলবে তাঁর প্র্যাকটিস, যে প্র্যাকটিসে তাঁর সম্পদ এই মুহূর্তে ১২ কোটি টাকারও কিছু বেশি। যে প্র্যাকটিসে যোগদান সব্বার, বিজেপি নেতার টাকা আছে, একচেটিয়া পুঁজির মালিকদের টাকা আছে, এখনও কংগ্রেসী নেতাদের টাকা আছে, টাকা আছে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের, যাঁদের হয়ে তিনি সওয়াল করেন সামলা গায়ে নিয়ে, কেবল একটা প্রশ্ন বিকাশ বাবু, রাতে ডাইনিং টেবলে পোড়া মাংসের গন্ধ পান না? মরে যাওয়া মানুষের গা থেকে যে গন্ধ বের হয়, তা নাকে আসে না? নাকি সে সব অনুভূতি জলাঞ্জলি দেবার পরেই মাঠে নেমেছেন? এ কোন বিকাশ? এ কিসের বিকাশ?  এ কার বিকাশ?

পুরনো খবরের আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০ ১১ ১২ ১৩ ১৪ ১৫
১৬ ১৭ ১৮ ১৯ ২০ ২১ ২২
২৩ ২৪ ২৫ ২৬ ২৭ ২৮ ২৯
৩০  
আর্কাইভ

এই মুহূর্তে

মুখ্যমন্ত্রীর চটি ছিঁড়ে যাওয়াকে কটাক্ষ দিলীপের
শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪
উধাও বিজেপির পতাকা, ঝাড়গ্রামে রাজনৈতিক তরজা
শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪
ভরাডুবির মরসুম নিয়ে কী সাফাই দিলেন হার্দিক
শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪
বজরংবলীর আশীর্বাদ পাবেন ৫ রাশির জাতক
মঙ্গলবার, ৭ মে, ২০২৪
Stadium Bulletin | কোন ৫ কারণে প্লে-অফের দোরগোড়ায় KKR?
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
সোশ্যাল মিডিয়ায় নির্বাচনী প্রচারে সতর্কবার্তা নির্বাচন কমিশনের
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
কখন শচীনের দ্বারস্থ হন কোহলি?
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
চোটে জর্জরিত ম্যান ইউয়ের আজ কঠিন লড়াই
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
মমতার দিদিগিরি বরদাস্ত করব না, কলকাতায় ফিরেই হুঙ্কার রাজ্যপালের
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
অবশেষে স্বস্তির বৃষ্টি কলকাতায়
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
সুদীপের বিরুদ্ধে বিধিভঙ্গের অভিযোগ বিজেপির
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
মঙ্গলবার ৪ কেন্দ্রে ভোট, সব বুথে থাকবে কেন্দ্রীয় বাহিনী
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
সন্দেশখালি ভাইরাল ভিডিওতে কন্ঠস্বর গঙ্গাধর-জবারানির, দাবি শান্তি দলুইয়ের
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
জিতলে গম্ভীরের কৃতিত্ব হারলে দায় শ্রেয়সের? প্রশ্ন কিংবদন্তির  
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
রক্ষাকবচ সত্ত্বেও গ্রেফতার বিজেপি নেতা?
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
© R.P. Techvision India Pvt Ltd, All rights reserved.   Privacy Policy
Developed By KolkataTV Team