চন্দননগর: দুর্ঘটনায় দু’টুকরো হয়ে গিয়েছিল থাই বোন৷ অপারেশনের পর সেখানে একটি বড়সড় প্লেট বসিয়ে দেন ডাক্তারবাবু৷ ওই অবস্থায় শুক্রবার নার্সিংহোমের বিছানায় শুয়ে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিল দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী মাম্পি কুন্ডু৷ এত বড় অপারেশনের ধাক্কা কাটিয়ে মেয়েটির পরীক্ষায় বসার সিদ্ধান্তে অবাক এবং খুশি চিকিৎসক ভাস্কর দাস৷ তিনি জানিয়েছেন, পরশুদিন অপারেশন হয়েছে৷ আজ সে একদম ফিট৷ মাম্পি যে পরীক্ষা দেওয়ার কথা চিন্তা করেছে সেটা দেখেই আমার ভালো লেগেছে৷
মাম্পির বাড়ি গুপ্তিপাড়া চারাবাগান এলাকায়৷ সেখানকার একটি স্কুল থেকে এবার সে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে৷ কয়েকটা পরীক্ষা নির্বিঘ্নে দেওয়া হয়েও গিয়েছিল৷ তারপরই ঘটল বিপত্তি৷ একদিন সাইকেলে চেপে প্রাইভেট টিউটরের কাছে পড়তে যাচ্ছিল মাম্পি৷ তখনই উল্টোদিক থেকে প্রচণ্ড গতিতে আসা একটি মোটরসাইকেল ধাক্কা মারে তাকে৷ রাস্তায় লুটিয়ে পড়ে সে৷ স্থানীয় লোকজন ও বাড়ির লোকেরা মিলে মাম্পিকে ধরাধরি করে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যায়৷ এক্স রে করে দেখা যায়, উচ্চমাধ্যমিক ছাত্রীর ডান পায়ের থাই বোন ভেঙে দু’টুকরো হয়ে গিয়েছে৷ দিনটা ছিল ১৩ এপ্রিল৷ ১৩ শুনলেই অনেকে বলেন আনলাকি থার্টিন৷ উচ্চমাধ্যমিক ছাত্রী মাম্পির জীবনে ১৩ তারিখটা সত্যিই আনলাকি প্রমাণিত হয়৷
প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে মাম্পিকে নিয়ে আসা হয় চন্দননগরের একটি প্রাইভেট নার্সিংহোমে৷ সেখানে চিকিৎসক ভাস্কর দাসের তত্ত্বাবধানে তার পায়ে অপারেশন করে থাই বোনে একটি প্লেট বসানো হয়৷ তারপর শুক্রবার মেয়েটি হাসপাতালের বিছানায় বসে এডুকেশন পরীক্ষা দেয়৷ ওই চিকিৎসক জানান, থাই বোন শরীরের সবথেকে বড় শক্ত হাড়৷ হাড় ভাঙলে শরীরে একটা এফেক্ট পড়ে৷ মেয়েটির মনের জোর রয়েছে৷ অন্য কেউ হলে অপারেশনের পর বিছানায় শুয়ে থাকত৷ মেয়েটি উঠে বসেছে৷ পড়াশোনা করেছে৷ আজ সহজভাবে পরীক্ষা দিয়েছে৷ তিনি আশা করছেন খুব তাড়াতাড়ি মাম্পি সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে পারবে৷