পৃথিবীতে (Earth) এমন অনেক জায়গাই আছে, যার মধ্যে রহস্য ঘণীভূত হয়ে আছে পুরোপুরি। আর এই রহস্যময় বিশ্ব-ব্রহ্মাণ্ডের রহস্যভেদের ইচ্ছে সর্বদাই মানুষকে খোঁচা দিয়ে এসেছে। যুগ যুগ ধরে মানুষ সেই সব রহস্যেরভেদের চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছেন। কিন্তু এখনও অনেক রহস্যে ভেদ হয়নি। কিছু পর্যটক আবার রহস্যের খোঁজে বিশ্বজুড়ে পর্যটন চালিয়ে যান। তাই বিশ্বের কিছু রহস্যময় স্থানে মানুষ পৌঁছেও গিয়েছে। কিন্তু জানেন কী এমন একটি গ্রাম রয়েছে, যেখানে গেলে কেউ জীবিত ফিরে আসে না। বিজ্ঞানীরাও এর রহস্য সমাধানে অনেক গবেষণা করেছেন। লোকে গ্রামটিকে মৃতদের শহর বলে ডাকে।
গ্রামটি রাশিয়ার উত্তর ওশেটিয়ার একটি নির্জন এলাকায় অবস্থিত। গ্রামটির নাম ডারগাভস। এটি এমন এক জায়গা যেখানে শুধু মৃতরাই বাস করেন। গ্রামটিকে ঘিরে রয়েছে পাঁচটি খাড়া পাহাড়। আর গ্রামের ঘরগুলো সব পাহাড়ি পাথরে তৈরি করা হয়েছে। গ্রামটি দেখতেও খুবই সুন্দর। কিন্তু কেউ এই গ্রামে যেতে সাহস পান না। কারণ এর আরেক নাম, ‘মৃতদের শহর’। যেখানে শুধু মৃতদেহরাই বাস করে। বিশ্বাস করা হয়, যে স্থানীয় মানুষরা ওই গ্রামের ঘরগুলোতে তাদের আত্মীয়-স্বজনদের মৃতদেহগুলো রেখে আসেন। পাহাড়ি এই গ্রামে এমন অসংখ্য ভবন আছে যেগুলোতে ভূগর্ভস্থ ঘরও আছে। এই গ্রামের কয়েকটি ভবনে চারটি পর্যন্ত তলা আছে। আসলে এটি বিশাল এক গোরস্থান। এই ভবনগুলোর প্রতিটি তলায় মৃতদেহ কবর দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন:Parenting Tips | সন্তানের আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর ৫ কৌশল জেনে নিন
গ্রামটিতে প্রায় ৯৯টি ভবন আছে। আজ থেকে প্রায় পাঁচশ বছর আগে সেই ১৬০০ থেকেই এই ভবনগুলোতে মৃতদেহ করব দেওয়া হতো।
স্থানীয়দের বিশ্বাস, যারা একা একা এই ভবনে যায় তারা আর কখনও জীবিত ফিরে আসে না। আর এ কারণেই এই গ্রামে কখনও কোনও পর্যটকও যাননি। এ ছাড়া পাহাড়ি এলাকা হওয়ার কারণে এখানকার আবহাওয়া ক্ষণেক্ষণেই বদলে যায়। যা ভ্রমণকারীদের জন্য উপযোগী নয়।
যদিও, এখানকার স্থানীয়দের মধ্যে একটি অদ্ভুত বিশ্বাস প্রচলিত আছে। ১৮০০ শতকে স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁদের গুরুতর অসুস্থ আত্মীয়দেরকে এই গ্রামের ভবনগুলোতে রেখে আসতেন। তাঁদেরকে সময়ে সময়ে খাদ্য ও পানীয় সরবরাহ করা হতো। কিন্তু মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা সেখান থেকে বের হতে পারতেন না। প্রত্মতাত্ত্বিকদের মতে, মৃতদেরকে সেখানে নৌকাকৃতির কফিনে ভরে কবর দেওয়া হতো। এই বিশ্বাস থেকেই এমনটা করা হতো যে, এতে মৃতদের জন্য স্বর্গে যাওয়া সহজ হবে। নৌকাকৃতির কফিন তাদেরকে স্বর্গে পৌঁছে দেবে। গবেষকরা প্রতিটি ভূগর্ভস্থ স্থানের সামনে একটি করে কুয়ো দেখতে পেয়েছেন। মৃতদের কবর দেওয়ার পর, তাঁর আত্মীয়-স্বজনরা ওই কুয়োয় কয়েন ফেলত। কোনেও কয়েন যদি অন্য একটি কয়েনের সঙ্গে লেগে উচ্চ আওয়াজ তৈরি করত তাহলে গ্রামবাসীরা বিশ্বাস করতেন, মৃত ব্যক্তি স্বর্গে যাবেন!