নয়াদিল্লি: আসন্ন চিন্তন শিবির থেকে দলকে পুনরুজ্জীবিত করার শপথ নিতে হবে বলে ঘোষণা করলেন কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী৷ সোমবার বিকেলে দিল্লিতে কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে চিন্তন শিবিরের প্রস্তুতি এবং কর্মসূচির বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেন সোনিয়া৷ তিনি বলেন, উদয়পুরের ওই চিন্তন শিবির আগেকার শিবিরগুলোর মতো গতানুগতিক পদ্ধতিতে হবে না৷ এই শিবির থেকে আমাদের দলকে আরও ঐক্যবদ্ধ, মজবুত এবং পুনর্গঠিত করার শপথ নিতে হবে৷
আগামী ১৩ থেকে ১৫ মে পর্যন্ত রাজস্থানের উদয়পুরে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে কংগ্রেসের চিন্তন শিবির৷ গত ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে এই চিন্তন শিবির করার প্রস্তাব নেওয়া হয়েছিল৷ ইতিমধ্যেই চিন্তন শিবিরের জন্য ছ’টি কমিটি গঠন করে দিয়েছেন কংগ্রেস সভানেত্রী৷ রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক ন্যায়বিচার ছাড়াও কৃষক, যুব সমাজ এবং সাংগঠনিক বিষয় নিয়ে ওই কমিটিগুলি গঠন করা হয়েছে৷ প্রতিটি কমিটিতে একজন করে শীর্ষ নেতৃত্বকে আহ্বায়কও করা হয়েছে৷ তাঁর নেতৃত্বে কমিটিগুলিতে একাধিক সদস্য রয়েছে৷
এ দিন ওয়ার্কিং কমিটির উদ্বোধনী ভাষণে সোনিয়া জানান, তিনদিনের ওই চিন্তন শিবিরে প্রায় ৪০০ প্রতিনিধি যোগ দেবেন৷ কংগ্রেস সভানেত্রী আরও জানিয়েছেন, শিবিরের শেষদিন অর্থাৎ ১৫ মে উদয়পুর নব সংকল্প নামে একটি প্রস্তাব গৃহীত হবে৷ তার আগে ওই প্রস্তাব কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে অনুমোদন করানো হবে৷ কংগ্রেস সভানেত্রী জানিয়ে দেন, দল এখন কঠিন অবস্থার মধ্যে দিয়ে চলছে৷ তিনি বলেন, আমাদের হাতে কোনও জাদুদণ্ড নেই৷ একমাত্র নিঃস্বার্থ কাজ, শৃঙ্খলা এবং লাগাতার যৌথ দায়িত্ব নিয়ে দলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে৷ আত্মসমালোচনার দিকে সব নেতা-কর্মীকে নজর দিতে হবে৷ কিন্তু তার মানে এই নয় যে, একে অপরের দিকে কাদা ছোড়াছুড়ি করবেন৷
সূত্রের খবর, এ দিনের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে দলের সাংগঠনিক নির্বাচন নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা হয়৷ অন্তর্বর্তী সভানেত্রী হিসেবে আগামী অগস্ট মাস পর্যন্ত সোনিয়া গান্ধী কার্যকালের মেয়াদ রয়েছে৷ সাংগঠনিক নির্বাচনের মাধ্যমে সেপ্টেম্বর মাসে নতুন সভাপতি চূড়ান্ত হবে৷ ওয়ার্কিং কমিটির শেষ বৈঠকের আগে কংগ্রেসের নেতৃত্ব নিয়ে বিক্ষুব্ধ একদল নেতা সোনিয়াকে চিঠি দিয়েছিলেন৷ দলের মধ্যে এবং বাইরে তাঁদের পরিচয় হয় জি-২৩ গোষ্ঠী হিসেবে৷ ওই গোষ্ঠী নতুন নেতৃত্বের দাবিতে দলের অন্দরে এবং বাইরে দীর্ঘদিন ধরেই সরব৷ ওয়ার্কিং কমিটির ওই বৈঠকের শুরুতেই আবেগমথিত ভাষায় সোনিয়া জানিয়ে দিয়েছিলেন, দল চাইলে তিনি, রাহুল এবং প্রিয়াঙ্কা এই মুহূর্তে নেতৃত্ব ছাড়তে প্রস্তুত৷ পরে অবশ্য ওয়ার্কিং কমিটি তাঁর নেতৃত্বেই আস্থা রেখে প্রস্তাব নেয়৷