কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: জিনগত পরিবর্তন ঘটিয়ে শূকরের হৃৎযন্ত্র (Pig Heart Transplantation) বসানো হয়েছিল মানব শরীরে৷ কিন্তু সেই হৃৎপিণ্ড নিয়েও বেশিদিন বাঁচতে পারলেন না ডেভিড বেনেট (David Bennett)৷ মাত্র ২ মাসের মধ্যেই মারা গেলেন তিনি৷ ডেভিড বেনেটের আগেও বিশ্বে প্রথম শূকরের হৃৎপিণ্ড প্রতিস্থাপন করা হয়েছিল৷ সেটা হয়েছিল ভারতে৷ ওই অস্ত্রোপচারটি করেছিলেন চিকিৎসক ধনীরাম বড়ুয়া৷ অসমের গুয়াহাটিতে ওই অস্ত্রোপচার হয়েছিল৷ শূয়োরের শরীর থেকে সরাসরি হৃদযন্ত্র বসানো হয়েছিল মানব শরীরে৷ তারপর ওই ব্যক্তি মাত্র ৭ দিন বেঁচে ছিলেন৷ তবে বেনেটের শরীরে বসানো হয়েছিল জিনগত পরিবর্তন ঘটানো হৃৎপিণ্ড৷ ঐতিহাসিক সেই সফল অস্ত্রোপচারের পর অনেকেই ভেবেছিলেন অঙ্গদানের অভাবে আর মরতে হবে না মানুষকে৷ কিন্তু বেনেটের মৃত্যু নতুন করে ভাবিয়ে তুলল চিকিৎসা বিজ্ঞানকে৷
গত মঙ্গলবার ইউনিভার্সিটি অফ মেরিল্যান্ড মেডিক্যাল সেন্টারে (University of Maryland Medical Center) মারা যান ৫৭ বছর বয়সী বেনেট৷ বুধবার তাঁর মৃত্যুর খবর জানায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ৷ যদিও বেনেটের মৃত্যুর কারণ এখনও স্পষ্ট নয়৷ মেরিল্যান্ডের মুখপাত্র ডেবোরা কটজ বলেন, ‘বেনেটের মৃত্যুতে আমরা বিধ্বস্ত৷ লড়াকু পেশেন্ট ছিলেন৷ তাঁর পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাই৷ তবে বেনেটের মৃত্যুর কারণ নিয়ে গবেষকরা রিসার্চ করে জার্নালে প্রকাশিত করতে চায়৷’ বেনেটের শরীরে অঙ্গ প্রতিস্থাপন করেছিলেন চিকিৎসক বার্টলে গ্রিফিথ৷ বিবৃতি দিয়ে তিনি বলেন, ‘সাহসিকতার জন্য বিশ্বের লক্ষ লক্ষ মানুষের কাছে পরিচিত হয়ে উঠেছিলেন বেনেট’
গত জানুয়ারি মাসের ৭ তারিখ মেরিল্যান্ডের চিকিৎসকরাই বেনেটের শরীরে শূকরের হৃৎপিণ্ডের সফল প্রতিস্থাপন করেছিলেন৷ যদিও তার আগে শূকরের হৃৎপিণ্ডের জিনগত অনেক পরিবর্তন করা হয়েছিল৷ অস্ত্রোপচারের পর অনেকটাই সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন বেনেট৷ তবে কয়েকদিন আগে তাঁর স্বাস্থ্যের অবনতি হয়৷ হাসপাতালে ভর্তি হন৷ মঙ্গলবার মারা যান৷ শূকরের হৃৎপিণ্ড নিয়ে মাত্র দু’মাস তিনি বেঁচেছিলেন৷
আরও পড়ুন: Sumy evacuation flights: সুমির ভারতীয় পড়ুয়ারা বৃহস্পতিবারই পোল্যান্ড থেকে দেশে ফিরবেন
গত বছর আমেরিকার ৪১,৩৫৪ জন অঙ্গ প্রতিস্থাপন করেছেন৷ অধিকাংশই কিডনি রোগী৷ কিন্তু অঙ্গদানের অভাবে প্রতিদিন সেখানে মানুষের মৃত্যু হচ্ছে৷ নিউ ইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, গত বছর ৩ হাজার ৮০০ জন আমেরিকানের শরীরে মানব হৃৎপিণ্ড প্রতিস্থাপন করা হয়৷ যা আগের বছরগুলোর তুলনায় অনেকটাই বেশি৷ তাসত্ত্বেও অঙ্গের অভাবে অঙ্গপ্রতিস্থাপনের চাহিদা পূরণ করতে পারছে না হাসপাতালগুলি৷ সেজন্য শূকরের অঙ্গের জিনগত পরিবর্তন ঘটিয়ে সেটি মানব উপযোগী করে তোলার পরীক্ষা-নিরীক্ষা অনেকদিন ধরেই চালাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা৷ বেনেটের সফল প্রতিস্থাপনের পর তাই আশায় বুক বেঁধেছিলেন চিকিৎসকরা৷ কিন্তু চিকিৎসকদের অনেক চেষ্টার পরেও দু’মাসের বেশি বাঁচতে পারলেন না বেনেট৷