কলকাতা: হিন্দু ধর্মে বিভিন্ন তিথিতে দেবীর বিভিন্ন রূপের পুজো করা হয়। যেমন, ভাদ্র মাসের শুরুতেই যে অমাবস্যা, সেটাই কৌশিকী অমাবস্যা (Kaushiki Amavasya 2023) নামে পরিচিত। এই পুজোর সঙ্গে জড়িয়ে আছে নানা পৌরাণিক কাহিনি। শোনা যায়, এই অমাবস্যার রাতে কিছুক্ষণের জন্য খুলে যায় স্বর্গ ও মর্তের দরজা। তন্ত্রসাধনার দিক থেকেও এই কৌশিকী অমাবস্যার গুরুত্ব রয়েছে। জেনে নিন কৌশিকী অমাবস্যার তারিখ, তিথি এবং মাহাত্ম্য।
কৌশিকী অমাবস্যা ২০২৩-র দিনক্ষণ – এ বছর কৌশিকী অমাবস্যা পালিত হবে আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর বা ২৭ ভাদ্র। ১৪ সেপ্টেম্বর ভোর ৫.৩১ মিনিটে শুরু হচ্ছে কৌশিকী অমাবস্যা। পরের দিন ১৫ সেপ্টেম্বর বা ২৮ ভাদ্র শুক্রবার সকাল ৬.৩০ পর্যন্ত কৌশিকী অমাবস্যা থাকবে। কৌশিকী অমাবস্যার পবিত্র লগ্নে তারাপীঠ মন্দিরে, বিশেষ উপাচারে পুজো করা হয় তারা মায়ের।
কৌশিকী অমাবস্যার মাহাত্ম্য- কথিত আছে সাধক বামাক্ষ্যাপা, ১২৭৪ বঙ্গাব্দে কৌশিকী অমাবস্যায় তারাপীঠ মহাশ্মশানে শ্বেতশিমূল বৃক্ষের তলায় সিদ্ধিলাভ করেছিলেন। ধ্যানমগ্ন বামাক্ষ্য়াপা এদিন তারা মায়ের আবির্ভাব পান। এছাড়াও শোনা যায়, এই তিথিতে কৌশিকী রূপে মা তারা বিশেষ সন্ধিক্ষণে, শুম্ভ- নিশুম্ভ নামক অসুরদের দমন করেছিলেন। সেই নাম থেকেই ‘কৌশিকী অমাবস্যা’ নামটি এসেছে।
আরও পড়ুন:Akshay Kumar | Fardeen Khan | পর্দায় খেলবেন অক্ষয়-ফারদিন
কৌশিকী অমাবস্যার ইতিহাস- মা তারা হলেন দশ মহাবিদ্যার দ্বিতীয় মহাবিদ্যা। কৌশিকী তারই আরেক রূপ। মার্কণ্ডেয় পুরাণ মতে, এক সময় মহিষাসুরের অত্যাচারে দেবতারা অতিষ্ট ছিলেন। তখনই দেবী দুর্গা মহিষাসুরকে বধ করেন। কিন্তু এই শান্তি বেশিদিন থাকে না। শুম্ভ- নিশুম্ভের অত্যাচারে দেবতারা অতিষ্ঠ হয়ে পড়ে। এরপর সকলে পার্বতীর স্মরণাপন্ন হলে, দেবতাদের রক্ষা করতে মা মহামায়া তাঁর ইচ্ছাশক্তি জাগ্রত করে, এক দেবীমূর্তির জন্ম দেন। দেবী কৌশিকী অযোনিসম্ভবা ছিলেন, সেই কারণে কৌশিকী দেবীই শুম্ভ ও নিশুম্ভকে বধ করেন। যুদ্ধকালীন সময়ে দেবী কৌশিকীর শরীর থেকে হাজারও যোদ্ধৃ মাতৃকাকুল সৃষ্ট হয় এবং তারাই সমগ্র অসুরকুলকে বিনাশ করে। এই ঘটনাটি ভাদ্র অমাবস্যায় ঘটে। তাই পরবর্তীকালে এটি কৌশিকী অমাবস্যা নামে পরিচিত হয়।