শ্রীনগর: শ্রীনগরে ফার্মেসি চালাতেন মাখনলাল। মাখনলাল বিন্দ্রু। ১৯৯০-এর দশকের গোড়ায় যখন দলে দলে কাশ্মীরি পণ্ডিত (Kashmir Pandit) উপত্যকা ছেড়েছিলেন, প্রাণভয়ে, বিন্দ্রুর পরিবার ছিল ব্যতিক্রম। পাঁচ পুরুষের ভিটে আঁকড়ে কাশ্মীরেই পড়ে থাকে মাখনলালের পরিবার। সেসময় কিছু না হলেও এই সে দিন ফার্মেসিতে ঢুকে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে মাখনলালকে ঝাঁঝরা করে দিয়ে যায় জঙ্গিরা (terrorists attack)। ঘটনাস্থলেই নিহত হন এই কাশ্মীরি পণ্ডিত।
আর এক কাশ্মীরি পণ্ডিত অজয় পণ্ডিতের (Kashmir Pandit) হত্যাকাণ্ড নিয়ে সোশাল মিডিয়া তোলাপাড় হয়েছিল। কঙ্গনা রানাওয়াত থেকে প্রীতি জিন্টা, অজয় পণ্ডিতের খুনে সরব হয়েছিলেন। অনন্তনাগের গ্রামপ্রধান ছিলেন এই কাশ্মীরি পণ্ডিত। ক্ষুব্ধ কঙ্গনা সোশাল পোস্টে লিখেছিলেন, ‘জেহাদি কার্যকলাপের অ্যাজেন্ডা থাকলেই একদল তারকা, বুদ্ধিজীবী পথে নেমে বিক্ষোভ দেখান। মোমবাতি মিছিল করেন। কিন্তু কাউকে বিচার দেওয়ার সময় তাঁদের মুখ থেকে আওয়াজ বেরোয় না।’
So you wanted facts? pic.twitter.com/M2QAvMnonN
— saliltripathi (वो बनाये परिवार, हमें पसंद रविवार) (@saliltripathi) March 14, 2022
মাখনলাল বিন্দ্রু, অজয় পণ্ডিতদের হত্যাকাণ্ড উপত্যাকায় বিচ্ছিন্ন কোনও ঘটনা নয়। ১৯৮৯ সালে কাশ্মীর আন্দোলনের শুরু। তার পরেই উপত্যকায় কাশ্মীরি পণ্ডিতরা টার্গেট হয়েছেন। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, ১৯৯০ সালের ২০ জানুয়ারি কাশ্মীরি পণ্ডিতদের তিনটে পছন্দ দেওয়া হয়েছিল। রালিভ, গালিভ ও সালিভ। যার অর্থ, হয় ইসলাম স্বীকার করো, নয়তো মরো, নতুবা কাশ্মীর ত্যাগ করো…। শোনা যায়, ৪ লক্ষ কাশ্মীরি পণ্ডিত উপত্যকা ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন।
আরও পড়ুন: CWC Meet: আগামী বিধানসভা ও লোকসভা ভোটের জন্য তৈরি দল, জানিয়ে দিল কংগ্রেস
কেউ দাবি করেন উপত্যকায় এ পর্যন্ত ৬০০-র উপর কাশ্মীরি পণ্ডিত খুন হয়েছেন। কোনও কোনও সূত্রের দাবি, কাশ্মীরে নিহত পণ্ডিতের সংখ্যা ১০০০ ছাড়িয়েছে। এই দাবিগুলির কোনওটিতেই সরকারি সিলমোহর নেই। তথ্য জানার অধিকার আইনে (RTI) শ্রীনগরের জেলা পুলিস সদর দফতর থেকে দাবি করা হয়, ১৯৯০ থেকে এ পর্যন্ত ৮৯ জন কাশ্মীরি পণ্ডিত নিহত হয়েছেন। এই আরটিআই থেকেই জানা যায়, উপত্যকায় কাশ্মীরে পণ্ডিতের থেকে অনেক বেশি সংখ্যক খুন হয়েছে অন্যান্য ধর্মবিশ্বাসী মানুষ। এই নিহতের সংখ্যাটা ১,৬৩৫ জন। আরটিআইটি করেছিলেন হরিয়ানার পানিপতের জনৈক পিপি কপুর। উত্তর দিয়েছেন শ্রীনগর সদর দফতরের পুলিস সুপার।