দেরাদুন: উত্তরাখণ্ডের (Uttarakhand Congress) ঘরোয়া কোন্দল অনেকটাই সামাল দিল কংগ্রেস হাইকম্যান্ড (Congress High Command)৷ শুক্রবার উত্তরাখণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হরিশ রাওয়াত (Ex CM Harish Rawat) ও অন্য নেতাদের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করেন রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi-Harish Rawat)৷ নেতারা পৃথকভাবে রাহুলের সঙ্গে দেখা করে যাবতীয় ক্ষোভের কথা জানান৷ পরে রাহুলের নির্দেশেই এআইসিসি-র সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) কে সি বেণুগোপালের সঙ্গে রাজ্যের কংগ্রেস নেতাদের আরেক দফা বৈঠক হয়৷ স্থির হয়েছে, হরিশ রাওয়াতের নেতৃত্বেই আগামী বিধানসভার ভোটে কংগ্রেস লড়াই করবে৷ রাওয়াতই হবেন কংগ্রেসের প্রচারের প্রধান মুখ৷ তবে তাঁকেই মুখ্যমন্ত্রীর মুখ হিসেবে সামনে রাখা হচ্ছে না৷ ভোটে জিতলে কে মুখ্যমন্ত্রী হবেন, সে ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী স্বয়ং৷
উত্তরাখণ্ডে কংগ্রেস বেশ কিছুদিন ধরে ঘরোয়া কোন্দলে জর্জরিত৷ প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী রাওয়াতের সঙ্গে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি গণেশ গোনিয়াল, পরিষদীয় নেতা প্রীতম সিং, প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি কিশোর উপাধ্যায় প্রমুখের মন কষাকষি লেগেই ছিল৷ উত্তরাখণ্ডের ভারপ্রাপ্ত এআইসিসি-র সাধারণ সম্পাদক দেবেন্দর যাদবের বিরুদ্ধেও রাওয়াতের বিস্তর ক্ষোভ ছিল৷ রাওয়াতকে পঞ্জাব কংগ্রেসের কোন্দল মেটানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল৷ কিন্তু সেই কোন্দল মেটাতে না পেরে অনেকবারই দায়িত্ব থেকে অব্যহতি চেয়েছিলেন তিনি৷ অবশেষে হাইকম্যান্ড তাঁকে সেই দায়িত্ব থেকে অব্যহতি দেয়৷ তখন থেকেই রাওয়াতের পাখির চোখ ছিল উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীর আসন৷ সম্প্রতি তিনি দিল্লির বিরুদ্ধেও ক্ষোভ উগরে দেন৷ দিন কয়েক আগে রাওয়াত মন্তব্য করেন, ‘ওপর মহল আমার হাত-পা বেঁধে রেখেছে৷ ভোটের সাগরে নামিয়ে দিয়ে একগাদা কুমির ছেড়ে দেওয়া হয়েছে৷’ তাঁর আরও অভিযোগ, দিল্লি তাঁকে খুব একটা পাত্তা দিচ্ছে না৷ কথার ছলে তিনি রাজনীতি ছেড়ে দেওয়ারও ইচ্ছে প্রকাশ করেছিলেন৷
এই পরিস্থিতিতে রাওয়াত-সহ সব নেতাকে শুক্রবার দিল্লিতে তলব করেন রাহুল গান্ধী৷ তিনি আলাদা করে উত্তরাখণ্ডের নেতাদের সঙ্গে কথা বলেন৷ মনযোগ দিয়ে সকলের ক্ষোভের কথা শোনেন৷ সূত্রের খবর, রাওয়াত কেন ওই সব মন্তব্য করেছিলেন, রাহুল তাও জানতে চান৷ শেষে অবশ্য রাহুল গান্ধী রাওয়াতের ক্ষোভ প্রশমিত করেন৷ বৈঠক শেষে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি গোদিয়াল জানান, উত্তরাখণ্ডে ভোট হবে রাওয়াতের নেতৃত্বে৷ তিনিই হবেন প্রচারের প্রধান মুখ৷ কংগ্রেস হাইকম্যান্ড রাওয়াতকে সকলকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করতে বলেছেন৷ তাঁকে ‘ফ্রি হ্যান্ড’ দেওয়া হবে৷ রাওয়াত জানান, মুখ্যমন্ত্রী কে হবে তা ঠিক হবে ভোটের পর৷ ভোটে জিতলে কংগ্রেস পরিষদীয় দল তাঁদের মতামত কংগ্রেস সভানেত্রীকে জানাবে৷ তিনিই পরিষদীয় নেতার নাম চূড়ান্ত করবেন৷ প্রচার কমিটির প্রধান হিসেবে তিনিই ভোট পরিচালনা করবেন বলে দাবি রাওয়াতের৷