প্রয়াগরাজ: অখিল ভারতীয় অখন্ড পরিষদ সভাপতি নরেন্দ্র গিরির দেহের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে একটি সুইসাইড নোট। সাত আট পাতার সেই সুইসাইড নোটে আত্মহত্যার জন্য তাঁর শিষ্য আনন্দ গিরিকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন তিনি। তার সঙ্গে আরও দুই ব্যক্তি জড়িত থাকার কথা লিখেছেন নরেন্দ্র গিরি। যার ফলে স্বাভাবিকভাবেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা ঘটনায়।
সেই কথা জানতে পেরেই সোমবার উত্তরাখণ্ডের হরিদ্ধার থেকে অভিযুক্ত আনন্দ গিরিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বাকি দুই অভিযুক্তের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। এমনটাই জানানো হয়েছে পুলিশের তরফে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নরেন্দ্র গিরি তাঁর সুইসাইড নোটে একাধিক মারাত্মক বিষয়ের কথা উল্লেখ করেছেন। যার মধ্যে আশ্রমের মিনার পুনঃসংস্কার করার কথা উল্লেখ রয়েছে। পুলিশের অনুমান মূলত আশ্রম কেন্দ্রিক নানান জটিলতার কারণেই
নেতিবাচক প্রভাব পড়েছিল তার জীবনে। সেইসঙ্গে শিষ্য আনন্দ গিরির প্ররোচনাতেই আত্মহত্যার পথ বেছে নেন তিনি। আগামীকাল মঙ্গলবার মহন্তের দেহের ময়নাতদন্ত করা হবে বলে জানা গিয়েছে। ঘটনাস্থলে মোতায়েন রয়েছে বিরাট পুলিশ বাহিনী। ডগ স্কোয়াড তল্লাশি চালাচ্ছে। মহন্তের ঘরে খুঁটিয়ে পরীক্ষা করছে পুলিশের ফরেনসিক দল।
আরও পড়ুন: দরজা ভেঙে দেহ উদ্ধার, অস্বাভাবিক মৃত্যু অখণ্ড পরিষদ সভাপতি নরেন্দ্র গিরির
উল্লেখ্য, আনন্দ গিরির সঙ্গে বেশ কিছুদিন আগে থেকে বিবাদ দেখা দেয় মহন্তের। পঞ্চায়েত পরিষদ থেকে বরখাস্ত হওয়ায় বিগত কয়েক মাস ধরেই শিষ্য আনন্দের সঙ্গে একরকম ‘ঠান্ডা যুদ্ধ’ চলছিল নরেন্দ্র গিরির। বিতর্কিত পঞ্চায়েতে সম্পত্তি সংক্রান্ত জটিলতায় মৃত্যুর আশঙ্কা করেছিলেন আনন্দ গিরি। রুরকিতে তার নিজের উপার্জনে আশ্রম নির্মাণ পরিকল্পনাও বাতিল করা হয়েছিল বলে তার অভিযোগ ছিল। সেই ঘটনা নিয়েও অখন্ড পরিষদের সঙ্গে বিরোধে জড়ান আনন্দ গিরি। তারপর পঞ্চায়েত থেকে বরখাস্ত হতে হয়েছিল তাঁকে।
সেই সময় এই নিয়ে একটি ভিডিও প্রকাশ করেছিলেন তিনি। সমস্যা থাকা সত্ত্বেও ভিডিওটিতে মহন্ত নরেন্দ্র গিরিকে চিরকাল তিনি তাঁর গুরু হিসেবেই মানবেন বলে দাবি করেন। তিনি এও দাবি করেছিলেন কারও উস্কানিতে পড়েই তাঁকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন নরেন্দ্র গিরি।
আরও পড়ুন: জুনিয়র মৃধা হত্যা তদন্তে সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়ে বিস্ফোরক হাইকোর্টের আইনজীবী
গোটা ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের কাছে আবেদন জানিয়েছেন আনন্দ গিরি। তারপর থেকেই সভাপতি নরেন্দ্র গিরির সঙ্গে সম্পর্ক তলানিতে এসে পৌঁছয় শীর্ষ আনন্দ গিরির। তাই প্রতিহিংসাবশত নানান ভাবে সভাপতির ওপর মানসিক চাপ সৃষ্টি করতে থাকেন শিষ্য আনন্দ গিরি। তদন্তে নেমে এমনটাই মনে করছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ।