কলকাতা: সমগ্র দেশ জুড়েই ভগবান শিব (Lord Shiva) বা মহাদেব (Mahadev) পূজিত হন ভক্তি সহকারে। গোটা দেশে তাঁর কয়েক হাজার মন্দির (Temple) ছড়িয়ে আছে। কিন্তু এর মধ্যে একটি মন্দিরের কাহিনী বাকিগুলোর চেয়ে সম্পূর্ণ আলাদা। দেশের এমন একটি মন্দির রয়েছে যেখানে শিবলিঙ্গের রং দিনে তিনবার বদলায়। তবে এই শিবলিঙ্গটি দেখতে আর পাঁচটা শিবলিঙ্গের মতই। ভক্তদের নিয়মিত ভিড় জমে এই রহস্যময় শিবলিঙ্গটি দেখার জন্য। তবে দিনে তিনবার শিবলিঙ্গের রং কেন বদলায়, এর পেছনের আসল রহস্যটাই বা কী, সেটির কারণ খোঁজ করার চেষ্টা করেছেন বিজ্ঞানীরাও।
অচলেশ্বর মহাদেব মন্দির। রাজস্থানের ঢোলপুরে চম্বল নদীর তীরে অবস্থিত এই প্রাচীন মন্দিরটি ধর্মপ্রাণ হিন্দুদের কাছে অত্যন্ত জাগ্রত। ভক্তদের মতে, এই মন্দিরটি প্রায় হাজার বছরের পুরনো। চার টন ওজনের পঞ্চধাতু দিয়ে তৈরি একটি নন্দীর মূর্তি রয়েছে এই মন্দিরে। নন্দী হলেন এই মন্দিরের রক্ষা কর্তা। মন্দিরের প্রধান আকর্ষণ হল, এখানের শিবলিঙ্গটি দিনে তিনবার রঙ বদল করে। সকালবেলা লাল রং হয়, বিকেলে জাফরান আর রাতে লিঙ্গটি সম্পূর্ণ কালো হয়ে যায়। এই রঙ পরিবর্তনের কারণ কেউ আজও জানতে পারেনি। তবে, মন্দিরের ভক্তদের অবশ্য বিশ্বাস, মহাদেবের অলৌকিক লীলার কারণেই লিঙ্গের রঙ পরিবর্তন হয়। স্থানীয় অধিবাসীদের বিশ্বাস, এই মন্দিরে শিবলিঙ্গের দর্শন করার পর মনের মতো জীবনসঙ্গী খুঁজে পাওয়া যায়। জীবনের সমস্ত অপূর্ণ ইচ্ছে পূরণ হয়। জীবনে আসে শান্তি।
ঢোলপুরের এই মন্দির নিয়ে অনেক পুরনো বিশ্বাস রয়েছে। কথিত আছে, প্রাচীনকালে একবার এই মন্দির আক্রান্ত হয়েছিল বিদেশী শক্তির দ্বারা। সেই সময় নাকি নন্দীর মুখ থেকে বেরিয়ে আসে অসংখ্য মৌমাছি। মন্দির আক্রমণকারীদের সেই মৌমাছি নাকি তাড়া করে। মন্দিরের মধ্যে অবস্থান করছে একটি রহস্যজনক স্তূপ। মন্দিরে আগত দর্শনার্থীদের বিশ্বাস স্তূপটি হল ধর্মরাজ যমের প্রতীক। মন্দিরের অদূরে পুকুর পাড়ে রয়েছে তিনটি ধাতব মহিষের মূর্তি যা তিনটি রাক্ষসের প্রতিরূপ। এক সময়ে এই রাক্ষসত্রয় আক্রমণ করেছিল এই মন্দির। তখন রাজা আদি পাল তাদের হত্যা করেন। ধোলপুরের এই মন্দিরটি এবং শিবলিঙ্গ দর্শনের বিশ্বাস ও ভক্তি বছরের পর বছর ধরে অটুট। তাই বছরের প্রায় সবদিনই মানুষের ঢল নামে এখানে।