কলকাতা: মিথ্যা মামলা ও ভুল তথ্য দিয়ে চার্জশিট পেশ করায় কলকাতা হাইকোর্টে মুখ পুড়ল বারাসত পুলিসের৷ পুলিসের চার্জশিটে একটি অ্যাম্বাসাডর গাড়ির উল্লেখ রয়েছে৷ সেটি আসলে বাতিল তিন চাকার অটো৷ মামলার নথি দেখে হতবাক কলকাতা হাইকোর্ট৷ চার্জশিট খারিজের নির্দেশ দেন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ৷
পুলিসের তদন্তে হতবাক কলকাতা হাইকোর্ট৷ অভিযোগকারীকে সুবিধা পাইয়ে দিতে পুলিসের এই তদন্ত৷ এমনটাই মত আবেদনকারীর আইনজীবী সুমনশঙ্কর চট্টোপাধ্যায়ের৷ বধূ নির্যাতনের অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগের তদন্ত করতে গিয়ে পুলিসের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠল হাইকোর্টে৷
আবেদনকারীদের আইনজীবী বলেন, ‘চৈতালি আর্চাযর দেওরের সঙ্গে রুদ্রপ্রসাদ চক্রবর্তীর মেয়ের বিয়ে হয়৷ কিন্তু বিয়ের পর থেকে শুরু হয় তাঁদের অত্যাচার৷ তখন চৈতালিদের বিরুদ্ধে বধূ নির্যাতনের অভিযোগ দায়ের হয়৷ পাল্টা জিষ্ণু বিশ্বাস, বৈশাখী চক্রবর্তী ও রুদ্রপ্রসাদ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন চৈতালি আচার্য৷ তাঁর অভিযোগ, একটি অ্যাম্বাসাডর গাড়ি করে রুদ্রপ্রসাদরা তাঁদের মারধর এবং হেনস্থা করে৷ এই মর্মে বারাসত থানায় অভিযোগ দায়ের করেন তিনি৷ শুরু হয় পুলিসি তদন্ত৷
আরও পড়ুন: Basirhat TMC: বসিরহাটে তৃণমূলের প্রধানকে মারধরের অভিযোগ দলেরই পঞ্চায়েত সদস্যের বিরুদ্ধে
নিয়ম অনুযায়ী, অ্যাম্বাসাডর গাড়ির তদন্ত করতে গিয়ে পুলিস গাড়ির নম্বর দিয়ে একটি জেনারেল ডায়েরি নথিভুক্ত করে৷ ওই অভিযোগে অ্যাম্বাসাডরের নম্বর নথিভুক্ত হয় ডব্লুবি ১৯২৬৮৯৷ পরবর্তীকালে দেখা যায়, পুলিসের জেনারেল ডায়েরিতে উল্লেখিত গাড়িটি কোনও অ্যাম্বাসাডর নয়৷ সেটি ২০১০ সালে পরিত্যক্ত একটি অটোর নম্বর৷ যার মালিক মান্নান আলি৷ এর ভিত্তিতে পুলিস চার্জশিট পেশ করে৷ চার্জশিটে জিষ্ণু বিশ্বাস, বৈশাখী চক্রবর্তী ও রুদ্রপ্রসাদ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়৷
সেই চার্জশিট বাতিলের আবেদন জানিয়ে জিষ্ণু বিশ্বাস, বৈশাখী চক্রবর্তী ও রুদ্রপ্রসাদ চক্রবর্তী কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন৷ সমস্ত নথি খতিয়ে দেখে আদালতের নির্দেশ, বারাসত থানায় দায়ের হওয়া চৈতালি দেবীর অভিযোগের ভিত্তিতে যে চার্জশিট পেশ করা হয়েছে তা বাতিল করতে হবে৷ আইনজীবী মহলের মতে, পুলিসের এই ধরনের মিথ্যা নথির মাধ্যমে তদন্ত চালিয়ে চার্জশিট পেশের ফলে অনেক নিরাপরাধ মানুষকে বিনা দোষে শাস্তি ভোগ করতে হচ্ছে৷