Placeholder canvas
কলকাতা রবিবার, ১৯ মে ২০২৪ |
K:T:V Clock

Placeholder canvas
চতুর্থ স্তম্ভ: বাইসাইকেল ডে, বাইসাইকেল কিসসা
কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক Published By:  • | Edited By:
  • প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ৭ জুন, ২০২২, ১০:৩০:৩৩ পিএম
  • / ২৮৯ বার খবরটি পড়া হয়েছে
  • • | Edited By:

৩ জুন বাইসাইকেল ডে চলে গেল৷ এটা এক্কেবারে নতুন৷ ইউনাইটেড নেশন ২০১৮ তে এই দিনের ঘোষণা করেছিল৷ ওই বছর থেকেই, চুমু, কোলাকুলি, বাবা, মা, বন্ধু ইত্যাদি দিবসের পাশাপাশি বাইসাইকেল ডে চালু হয়৷ মানুষের কাছে সহজলভ্য, পরিবেশ বান্ধব, ইজি মেকানিজমকে মাথায় রেখেই এই ঘোষণা করা হয়৷ আজ বাইসাইকেল ডে, আর বাইসাকেল কিসসা নিয়েই আলোচনা।

বাইসাইকেল নিয়ে অনেক মজার মজার তথ্য আছে, আসুন একবার দেখে নিই। ১৮৬০ সালের আগে বাইসাইকেল কথাটা তৈরিই হয়নি৷ যদিও তার বহু আগে ১৮১৭ তে, কার্ল ভন ড্রেইজ নামে একজন টানা বাহনের জায়গায় নিজেই চালানো যায় এমন এক যন্ত্র আবিস্কার করেছিলেন৷ যন্ত্রটার নাম হয়েছিল ড্রেইজন। তো সেই ড্রেজনই ছিল, বলা চলে আজকের সাইকেলের ঠাকুরদা। এরপর, ১৮৭০ এ একটা বিরাট বড় আর পিছনে একটা পুঁচকে চাকা নিয়ে এক যন্ত্রের আবির্ভাব হয়৷ সেটাও ছিল, কাছাকাছি বাইসাইকেল। তারপর ফরাসি বিপ্লবের আগে, ১৮৬০ এ বাইসাইকেল কথাটা চালু হয়৷ দুটো চাকার জন্য, রাইট ব্রাদার, যাঁরা এরোপ্লেন আবিস্কার করেছিলেন, তাঁদের দোকানেও এই বাইসাইকেল তৈরি হত৷ ১৯০৩ এ ফ্রান্সে প্রথম বাইসাইকেল ট্যুর শুরু হয়৷ ট্যুর দ্য ফ্রান্স৷ এখনও পর্যন্ত এটাই বাইসাইকেল নিয়ে সবচেয়ে বড় ইভেন্ট৷

১৯৩৫ এ ২৫ বছরের যুবক ফ্রেড এ ব্রিকমোর পৃথিবী চক্কর কাটেন, এশিয়া, ইউরোপ আমেরিকার ৪০০০০ মাইল জুড়ে৷ তারমধ্যে সাইকেল চালিয়েছিলেন ২৫ হাজার মাইল৷ বাকিটা সাইকেল ছিল জলযানে। একটা সাধারণ মোটর গাড়ির জায়গায় ১৫ টা বাইসাইকেল রাখা যায়, একটা খুব সাধারণ গাড়ির তুলনায় সাইকেলের দাম অনেক অনেক কম৷ পৃথিবীতে আজকের দিনে, বছরে ১০ কোটি বাইসাইকেল তৈরি হয়৷ পৃথিবীতে যত মোটর গাড়ি আছে, তার দ্বিগুণেরও বেশি আছে বাইসাইকেল৷ সবচেয়ে বেশি বাইসাইকেল আছে চীনে৷ কেবল সেখানেই কমবেশি ৫০ কোটি সাইকেল আছে৷ সাইকেল নিয়ে অজস্র গল্প, কবিতা, সিনেমা হয়েছে৷ এরমধ্যে বিখ্যাত হল ভিত্তারিও দে সিকার বাইসাইকেল থিফ৷ পরে থিয়েটারও হয়েছে।

সে এক আশ্চর্য গল্প, এক শ্রমিক, সে বিভিন্ন কাজ করে, এবার কাজ পেয়েছে দেওয়ালে পোস্টার লাগানোর৷ কিন্তু শর্ত, তাঁর সাইকেল চাই৷ এদিকে তাঁর সাইকেল আগেই সে জমা দিয়েছে কিছু টাকার জন্য৷ সাইকেল ছাড়ানোর জন্য তাঁর বৌয়ের বিয়ের সময় পাওয়া জিনিস বেচে দেয়৷ সেই টাকায় ছাড়ানো হয় সাইকেল। সাইকেল নিয়ে কাজ শুরু হওয়া মানেই পেটে খাবার, সে, তার ছেলে ব্রুনো, তাঁর বৌ। একদিন সে যখন পোস্টার লাগাচ্ছে, তাঁর সাইকেল চুরি করলো একজন৷ এরপর সেই সাইকেল খোঁজা, এক বিরাট জার্নি, বাজার, ব্রথেল, আরও কত জায়গা। চোরকে খুঁজে পেয়েও থানা পুলিশ সব হওয়ার পরে কিছুই হল না৷ সব শেষে সে আরেকটা সাইকেল চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়ল৷ তাঁকে আর তাঁর ছেলেকে দেখে সেই সাইকেলের মালিক তাঁকে ছেড়ে দিল৷ সেই শ্রমিক হেঁটে চলে যাচ্ছে, দূরে, আরও দূরে। পারলে দেখে নেবেন।

যাই হোক এই গেল সাইকেল নিয়ে যা আমি জানি, তার দু চারটে কথা। তো এই বিশ্ব বাইসাইকেল ডে তে অনেক অনুষ্ঠান এই ভারতবর্ষেও হয়েছে, বড় বড় অনেক কথাও হয়েছে৷ যদিও সাধারণভাবে আমাদের দেশের রাজনৈতিক নেতাদের দেশ, উন্নয়ন মানে হল এক্সপ্রেসওয়ে, হাইওয়ে, যেখানে তাঁদের সুমো, সাফারি, থর, ফরচুনার হু হু করে চলে যেতে পারে, হুস করে না গেলে আর উন্নয়ন হল কোথায়? মনে নেই আমাদের নরেন্দ্রভাই মোদি সৈন্য বিমান থেকে নামলেন, পূর্বাঞ্চল এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধন করার জন্য, কেবল স্পোর্টস ইউটিলিটি কার, এসইউভিই নয়, এক্কেবারে যুদ্ধ জাহাজ যে রাস্তায় নামতে পারে৷ তা দেশ গাঁ এর গরিব গুর্বোরা দেখলো, দেখালেন মোদিজী৷ সেদিন সাইকেলের কথা বলেননি৷ ওই সব রাস্তা সাইকেলের জন্য নয় ও।

আমাদের দেশের নেতারা সাইকেল চাপেন, পেট্রল ডিজেলের দাম বাড়লে, প্রতিবাদ করার জন্য, সাইকেল এক নিম্নস্তরের বাহন৷ পেট্রল ডিজেলের অভাবেই মানুষ সাইকেল চাপেন এই হল মেসেজ৷ ছিটফুট সাইকেল বিলি আগে হয়েছে বটে, তবে এই বাংলায় মমতা বন্দ্যোপাধায় সাইকেল বিলির এক রেকর্ড করেছেন৷ রাস্তায় বের হলেই চোখে পড়বে সবুজ সাথীর সাইকেল৷ এ এক অভিনব এবং রেয়ার উদ্যোগ৷ এভাবে এত বড় করে এই উদ্যোগ আগে কেউ নেয়নি৷ ফলে বাংলাতেই আপাতত সবথেকে বেশি সাইকেল৷ সাইকেল মানে পরিবেশ বন্ধু, সাইকেল মানে স্বাস্থ্য, সাইকেল মানে এক্কেবারে তলার পরিকাঠামোর উন্নয়ন, কেন? বলি সেটা, কেবল সাইকেল দিলেই তো হবে না৷ সাইকেল দিলেন, এবারে সেই ছাত্র বা ছাত্রী কিন্তু তার গ্রামের, পাড়ার রাস্তার দাবি তুলবে, ভাঙলেই সারানোর কথা বলবে, এটাই বুনিয়াদি উন্নয়ন।

আবার ফিরে আসি সাইকেল দিবসে, এত্তবড় দিবস তো আমাদের মোদিজী কিছু বলবেন না? দুসস তাই হয় নাকি, তিনি বললেন, মহাত্মা গান্ধীর এক সাইকেলে চাপা ছবি টুইট করলেন, তিনি গান্ধীজির কাছ থেকে প্রেরণা পান, পেতে চান। একে পাড়ার মোড়ের ছেলেরা দোগলাবাজি বলে, এই মোদিজী তথাকথিত বীর সাভারকারের চ্যালা, যে সাভারকার গান্ধী হত্যায় জড়িত ছিলেন, কেবল জড়িত ছিলেন বললে বলা ভুল হবে, গান্ধী হত্যার মাস্টার মাইন্ড ছিলেন এই সাভারকার, তো তিনি সাভারকারের শিষ্য, আবার গান্ধীজির কাছ থেকেও প্রেরণা পান? এটা যে কথার কথা, সেটা পরিষ্কার, সাভারকার, গোলওয়ালকরের দল সাইকেল চড়তেন না? নিশ্চয়ই চড়তেন, কিন্তু ছবি নেই, তাই যাঁর ছবি পাওয়া গেল, সেটাই আপলোড করো, সঙ্গে মিথ্যে কথা।

সাইকেল নিয়ে ওনার চিন্তা উনি ক’মাস আগেই বলেছেন, এত কথা বলেন, আগের কথা ভুলে যেতে সময় লাগে না, উনি ভুলে মেরেছেন, আমরা তো ভুলিনি। উনি সাইকেলকে উগ্রপন্থার সঙ্গে জুড়েছিলেন, সমাজবাদী দলের প্রতীক চিহ্ন নিয়ে নির্বাচনী প্রচারে কুৎসা করার সময় কী বলেছিলেন, এই হলেন আসল চায়েওয়ালা, কাম চৌকিদার কাম প্রধান সেভক। যিনি সাইকেল মানে বোমা ফাটানোর যন্ত্র মনে করেন, লুঙ্গি দেখে মুসলমান চেনেন। আম আদমির আম বাহন সাইকেল নিয়ে ওনার চিন্তা থাকার কথাও নয়, উনি আম্বানি, আদানিদের নিয়ে ব্যস্ত। এবং ওই সাইকেল ডের পরেই আর এক কেচ্ছা মানুষের সামনে, নিষ্ঠুরতার চূড়ান্ত এক ছবি। মনে আছে লক ডাউন? ১২ ঘন্টার নোটিসে লক ডাউন, লক্ষ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিকের দূরাবস্তা, মানুষ পায়ে হেঁটে বাড়ি ফিরছেন, যেখানে ছিলেন, সেখানে কাজ নেই, মালিকই উধাও কবে মাইনে হবে জানা নেই, খাবার নেই, তারচেয়ে বাড়ি ফিরে চল, কিছু শ্রমিকের বাইসাইকেল ছিল৷ কেউ কেউ জোগাড় করলেন৷ সেই বাজারে কেউ ৭/৮/৯ হাজারে সাধারণ সাইকেল কিনলেন, ওটাতে চেপে যদি বাড়ি ফেরা যায়, বাচ্চা বা বৃদ্ধ বাবাকে যদি ওটাতে বসিয়ে নিয়ে আসা যায়। সেইরকম সাইকেল আরোহী পরিযায়ী শ্রমিকদের থামানো হল, হরিয়ানা বর্ডারের পর, যোগিজীর নির্দেশে, তাদের সাইকেল জমা নেওয়া হল, তারপর ক্লোরিন জলে ধুইয়ে দিয়ে পিলখনি রাধা সৎসঙ্গ ভবনে, সেখানে কোয়ারেনটাইনে থাকতে হল, তারপর বাসে চড়িয়ে রাজ্য সীমানা পার করে দেওয়া হয়েছিলষ সেই সব সাইকেলের মালিকদের একটা অংশ বহু পরে তাদের সাইকেল নিয়েছেন, বিরাট এক অংশ স্বাভাবিক কারণেই আসেননি, কোথায় পাবেন? আদৌ পাবেন কি না? পেতে গেলে আবার ক্লোরিন জলে চান করাবে কি না, আবার কোয়ারেনটাইনে রাখবে কি না? এসব প্রশ্ন তো স্বাভাবিক।

তো সেই সব সাইকেল পড়েছিল খোলা মাঠে, রোদে জলে ঠান্ডায় জং লেগে, টায়ার ফেটে সেই কংকালসার সাইকেল কদিন আগে নিলাম করা হয়েছে, ওই গরিব পরিযায়ী শ্রমিকদের সাইকেল নিলামে চাপিয়ে বাইশ লক্ষ টাকা কামিয়েছেন আদিত্যনাথ যোগী৷ নিশ্চয়ই গরুর সেবা হবে, মানুষ নয় গরুর সেবাই যাদের জীবনের লক্ষ্য, তাঁদের নিশ্চয়ই আনন্দই হবে, পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘাম কবেই শুকিয়েছে সেসব সাইকেল থেকে, কিন্তু তাদের সেই দুর্দিন? তারা ভুলে যাবে? হয় কখনও? আজ সেই দুর্দিনের ফসল তুলছেন যোগী আদিত্যনাথ। সাইকেল দিবসে গান্ধিজীর কাছ থেকে প্রেরণা পাচ্ছেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী, সাইকেল দিবস অমর রহে।

পুরনো খবরের আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০ ১১
১২ ১৩ ১৪ ১৫ ১৬ ১৭ ১৮
১৯ ২০ ২১ ২২ ২৩ ২৪ ২৫
২৬ ২৭ ২৮ ২৯ ৩০ ৩১  
আর্কাইভ

এই মুহূর্তে

মুখ্যমন্ত্রীর চটি ছিঁড়ে যাওয়াকে কটাক্ষ দিলীপের
শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪
উধাও বিজেপির পতাকা, ঝাড়গ্রামে রাজনৈতিক তরজা
শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪
ভরাডুবির মরসুম নিয়ে কী সাফাই দিলেন হার্দিক
শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪
বজরংবলীর আশীর্বাদ পাবেন ৫ রাশির জাতক
মঙ্গলবার, ৭ মে, ২০২৪
Stadium Bulletin | কোন ৫ কারণে প্লে-অফের দোরগোড়ায় KKR?
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
সোশ্যাল মিডিয়ায় নির্বাচনী প্রচারে সতর্কবার্তা নির্বাচন কমিশনের
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
কখন শচীনের দ্বারস্থ হন কোহলি?
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
চোটে জর্জরিত ম্যান ইউয়ের আজ কঠিন লড়াই
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
মমতার দিদিগিরি বরদাস্ত করব না, কলকাতায় ফিরেই হুঙ্কার রাজ্যপালের
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
অবশেষে স্বস্তির বৃষ্টি কলকাতায়
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
সুদীপের বিরুদ্ধে বিধিভঙ্গের অভিযোগ বিজেপির
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
মঙ্গলবার ৪ কেন্দ্রে ভোট, সব বুথে থাকবে কেন্দ্রীয় বাহিনী
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
সন্দেশখালি ভাইরাল ভিডিওতে কন্ঠস্বর গঙ্গাধর-জবারানির, দাবি শান্তি দলুইয়ের
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
জিতলে গম্ভীরের কৃতিত্ব হারলে দায় শ্রেয়সের? প্রশ্ন কিংবদন্তির  
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
রক্ষাকবচ সত্ত্বেও গ্রেফতার বিজেপি নেতা?
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
© R.P. Techvision India Pvt Ltd, All rights reserved.   Privacy Policy
Developed By KolkataTV Team