মালদহ: বন্ধুর উপর ভরসা করে চার বছরের ছেলেকে তাঁর কাছে রেখে গিয়েছিলেন বাবা-মা৷ কিন্তু ভরসার এমন মূল্য চোকাতে হবে, তাঁরা কি কল্পনাও করতে পেরেছিলেন? একটি ভিডিয়ো ভাইরাল (Child Abuse Viral Video) না হলে বোধহয় জানতেই পারতেন না, তাঁদের অগোচরে চার বছরের সন্তানের উপর কী কী অকথ্য এবং অমানসিক অত্যাচারই (Malda Child Abuse) না করেছে বন্ধু প্রসেনজিৎ সরকার৷ ঘটনার কথা জানাজানি হওয়ার পর থেকেই পলাতক অভিযুক্ত৷ এদিকে সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে ভাইরাল ভিডিয়ো দেখে পিলে চমকে গিয়েছে সবার৷ প্রশ্ন উঠছে, অভিযুক্তের মানসিক বিকৃতি নিয়ে৷ কোনও সুস্থ মস্তিষ্কের ব্যক্তির পক্ষে চার বছরের ছেলের উপর এমন অত্যাচার করা সম্ভব?
কী দেখা গিয়েছে ভিডিয়োতে? কখনও গলায় ভারী বাসন ঝুলিয়ে কান ধরে ওঠবস৷ কখনও কাপড় দিয়ে পাখার সঙ্গে বেঁধে উল্টো করে ঝুলিয়ে মার৷ ঘরের চার দেওয়ালের ভিতর চার বছরের এক শিশুর উপর এমনই অকথ্য এবং অমানবিক অত্যাচার করছে প্রসেনজিৎ৷ মার খেয়ে আতঙ্কে ও ভয়ে কুঁকড়ে গিয়েছে ছেলেটি৷ বলছে, ‘আর মিথ্যে বলব না৷ আর মিথ্যে বলব না৷’ একটি বেলনচাকি নিয়ে যুবকটি এগিয়ে যায় ছেলেটির দিকে৷ সেটি দিয়ে দুমদাম বগলে, পিঠে মেরেই চলেছে সে৷ আর বলে, ‘কেন বলবি না’? এরপরই পাখা থেকে নামিয়ে বাচ্চাটিকে শূন্যে ঝুলিয়ে ছুড়ে ফেলে দেয় মেঝেয়৷
ঘটনাটি হায়দরাবাদের রাজীব নগর এলাকার৷ সেখানে একটি আবাসনে থাকেন শিশুটির বাবা-মা৷ ওই আবাসনেই থাকত অভিযুক্ত প্রসেনজিৎ সরকার৷ সে মালদহের বামনগোলা থানা এলাকার বাসিন্দা৷ ওই এলাকাতেই বাড়ি ছোট্ট শিশুটির৷ ভিডিয়ো দেখেই বাচ্চাটির বাবা-মা ও মালদহের পাড়া প্রতিবেশীরা প্রসেনজিতের কুকীর্তির কথা জানতে পারেন৷ শিশুটির বাবার দাবি, ঘটনাটি মাস দেড়েক আগে৷ এতদিন তিনি কিছুই জানতেন না৷ বৃহস্পতিবার সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিয়োটি ভাইরাল হওয়ার পর তিনি জানতে পারেন৷ নিজের চোখকেই অবিশ্বাস হচ্ছিল৷ বন্ধুর উপর ভরসা করেই ছেলেকে তিনি তাঁর কাছে রেখে যেতেন৷ কিন্তু ছেলের যে এমন দেখভাল হচ্ছিল সেটা ঘুণাক্ষরেও টের পাননি৷
আরও পড়ুন: BJP Joining: বিজেপিতে যোগ দিলেন ত্রিপুরার একমাত্র তৃণমূল কাউন্সিলর সুমন পাল
বামনগোলা এলাকাতেও ভিডিয়োটি শোরগোল ফেলে দিয়েছে৷ পাড়া প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, ওই শিশুর বাবা-মা বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করেন৷ তাই মাঝে মাঝে প্রসেনজিতের কাছে রেখে যেতেন তাঁরা৷ আর সেই সময় চলত অত্যাচার৷ তবে কেউ কেউ জানিয়েছেন, প্রসেনজিতের কাছে এভাবে ছেলেকে রেখে যাওয়া ঠিক হয়নি৷ বাড়িঘর সম্পত্তি যা ছিল বেচে হায়দরাবাদ চলে যায়৷ সেখানে বোধহয় কিছুই করত না৷ বাকিটা পুলিস তদন্ত করলে বলতে পারবে৷