শুধু কলকাতা নয়, মুম্বইয়েও ২ হাজার মানুষকে দেওয়া হয়েছে ভুয়ো ভ্যাকসিন। মনে করা হচ্ছে, টিকায় ওষুধের জায়গায় ছিল স্যালাইন বা জল। মঙ্গলবার টিকার ভায়ালগুলিতে ওষুধের জায়গায় কী ছিল তা খতিয়ে দেখতে বম্বে পুরসভাকে নির্দেশ দিল বম্বে হাইকোর্ট। প্রায় ২ হাজার মানুষ মুম্বইয়ে ভুয়ো ক্যাম্পে টিকা নিয়েছেন। পুলিশের কাছে এ বিষয়ে ৭টি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত ৮ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতদের মধ্যে একজন মহিলাও রয়েছেন। যিনি টিকার শংসাপত্র তৈরি করতে তাঁর কোউইন অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড দিয়েছিলেন। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে হত্যার চেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে। মুম্বই পুলিশ জানিয়েছে, এই ক্যাম্পে যাঁরা টিকা নিয়েছেন, তাঁদের সম্ভবত নুন জল বা স্যালাইন ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়েছে। পুলিশ আরও জানিয়েছে, ৮ জন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁদের কাছে থেকে ভুয়ো টিকা দিয়ে হাতিয়ে নেওয়া ১২ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। প্রধান অভিযুক্ত মণীশ ত্রিপাঠী ও মহেন্দ্র সিংয়ের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন মুম্বইয়ের জয়েন্ট কমিশনার অফ পুলিশ বিশ্বাস এন পাটিল। তাঁরা এই সিন্ডিকেটেরই আরও ৮টি এ-রকম ভুয়ো ক্যাম্পের খোঁজ পেয়েছেন বলেও জানান বিশ্বাস এন পাটিল। পুলিশ সুত্রের খবর, এই ভুয়ো কোভিশিল্ডের ভায়ালগুলি গুজরাত থেকে আনা হয়েছিল। কিন্তু তার ভিতর কী ছিল তা এখনও স্পষ্ট নয়। এই শিপমেন্টের ব্যাচ নম্বর খুঁজে বার করতে সহায়তা করার জন্য বৃহন্মুম্বই মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনকে অনুরোধ করেছে কোভিশিল্ডের প্রস্তুতকর্তা সিরাম ইন্সটিটিউট।
আরও পড়ুন : ভুয়ো ভ্যাকসিনে অ্যামিকাসিন
গত সপ্তাহে মুম্বইয়ের কান্দিভেলিতে এক আবাসনের সোসাইটি থেকে অভিযোগ জানানো হলে এই খবর সামনে আসে। হিরানন্দানি হেরিটেজ নামে ওই সোসাইটির তরফে জানানো হয়, তাঁরা প্রতারিত হয়েছেন। একটি বেসরকারি হাসপাতালের প্রতিনিধিত্ব করার দাবি করে অভিযুক্তরা আবাসনের বাসিন্দাদের জন্য একটি টিকাকরণ শিবিরের আয়োজন করে। টিকা নেওয়ার পর সার্টিফিকেট না পাওয়ায় সন্দেহ হলে অভিযোগ জানান এক মহিলা। পরে রমেশ তৌরানি নামে এক ফিল্ম প্রোডিউসারও একই অভিযোগ জানান।
আরও পড়ুন : ভুয়ো আইবি অফিসার সেজে অপহরণ
এই চক্রের মাথা মহেন্দ্র সিং বলে জানায় মু্ম্বই পুলিশ। সঞ্জয় গুপ্তা নামে একজন ভুয়ো টিকাকরণ শিবিরের আয়োজন করত।
মঙ্গলবার বম্বে হাইকোর্ট বম্বে মিউনিসিপ্যালিটিকে টিকার ভায়ালগুলিতে কী ছিল তা খতিয়ে দেখতে নির্দেশ দিল। একইসঙ্গে যাঁদের টিকা দেওয়া হয়েছে, তাঁদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার পাশাপাশি কোভিড অ্যান্টিবডি টেস্ট করার জন্যও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাঁদের সঠিক টিকাকরণের জন্যও নির্দেশ দিয়েছে রাজ্যের হাইকোর্ট। ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনা যাতে এড়িয়ে যাওয়া যায়, তার জন্য এসওএসের ভিত্তিতে, রাজ্য ও বৃহন্মুম্বই মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনকে বেসরকারি টিকাকরণ শিবির নিয়ে কোনও নির্দিষ্ট গাইডলাইন বা নীতি আনার জন্যও নির্দেশ দেয় আদালত।