কলকাতা : দলের মুখপত্রের সম্পাদকীয়তে গত সপ্তাহেই কংগ্রেসকে ‘পচা ডোবা’ বলে কটাক্ষ করা হয়েছিল । এ বার তৃণমূল কংগ্রেসের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক স্পষ্ট করে দিলেন, কংগ্রেস এবং তৃণমূল কংগ্রেসের মধ্যে পার্থক্য । বুঝিয়ে দিলেন, তৃণমূল কংগ্রেস নিজেদের টুইটারের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখেনি । তারা নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শকে সামনে রেখে লড়াই করে চলেছে ।
আজ তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেন গোয়ার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা চল্লিশ বছর ধরে কংগ্রেস রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকা লুইজিনহো ফালেইরো । সেই যোগদান অনুষ্ঠানেই অভিষেক স্পষ্ট করে দেন, গোয়ায় আগামী বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস একাই লড়াই করবে ।
পাশাপাশি, এক প্রশ্নের উত্তরে গোয়ার প্রাক্তন কংগ্রেস নেতা বলেন, বিজেপিকে হারাতেই তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন । ফালেইরোর এহেন মন্তব্যের পরই প্রশ্ন উঠতে শুরু করে, বিজেপিকে আটকাতে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে কেন যোগ দিলেন তিনি । সেই প্রসঙ্গ তুলেই অভিষেকের বক্তব্য, “গত সাত বছর ধরে দেখা গিয়েছে, বিজেপির বিরুদ্ধে কংগ্রেস বার বার পরাজিত হয়েছে । আর তৃণমূল কংগ্রেস বার বার জয়ী হয়েছে । এর থেকেই স্পষ্ট, বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য মানুষ কোন দলকে বেশি গ্রহণযোগ্য বলে মন করছে ।”
এর পরই অভিষেকের সংযোজন, “তৃণমূল কংগ্রেস টুইটের মধ্যে নিজেদের কাজ সীমাবদ্ধ রাখে না । তারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নীতি-আদর্শকে সামনে রেখে পথে নেমে মানুষের জন্য কাজ করে ।” সন্দেহ নেই, অভিষেকের নিশানায় যেমন ছিলেন রাহুল গান্ধি-কংগ্রেস, তেমনই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি । কারণ, মোদি এবং রাহুলকে একাধিক ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে টুইট করতে । শোক প্রকাশ থেকে শুভেচ্ছা সব ক্ষেত্রেই সোশ্যাল মিডিয়াতে সক্রিয় থাকতে দেখা গিয়েছে রাহুল-মোদিদের ।
প্রসঙ্গত, বঙ্গের সাম্প্রতিক বিধানসভা নির্বাচনে সমস্ত আসনের প্রার্থীরা ঘাসফুল ও পদ্মফুল প্রতীকে লড়েছিলেন বটে ! কিন্তু আসল লড়াই হয়েছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যে ৷ নির্বাচনী প্রচারে মমতা বিজেপির সমালোচনা যত করেছেন, তার থেকেও বেশি সরব হয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ৷ আবার মোদিও বারবার সভা করতে এসে বাংলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তৃণমূল নেত্রীকে কটাক্ষ করেছেন অনবরত ৷
তাই বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল আসন জয়ের নিরিখে ডাবল সেঞ্চুরি করার পর জাতীয়স্তরে মোদি বিরোধী মুখ হয়ে উঠেছেন মমতা ৷ তাঁকে ঘিরে নতুন করে দানা বাঁধতে শুরু করেছে মোদি বিরোধিতার জাতীয় রাজনীতি ৷ আঞ্চলিক হেভিওয়েট নেতারাও তাঁকে মধ্যমণি করে বিরোধী জোট গড়ার প্রচেষ্টা শুরু করেছেন ৷ তৃণমূলও জাতীয়স্তরে নিজেদের শক্তি বাড়াতে বিভিন্ন রাজ্যে সংগঠন তৈরিতে মন দিয়েছে ৷