বড়ঞা: জীবনকৃষ্ণ সাহা (Jiban Krishna Saha) গ্রেফতার হতেই বিধায়কের বাড়ি চারপাশ ও এলাকা প্রায় জনশূন্য। সোমবার ভোরে নিয়োগ দূ্র্নীতি মামলায় (Recruitment Scam) বিধায়ক জীবন কৃষ্ণ সাহাকে তদন্তে অসহযোগীতার অভিযোগে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। তারপর থেকেই কান্নায় ভেঙে পরেছে মা। ছেড়েছে খাওয়া দাওয়া।
শুক্রবার দুপুরে সিবিআই (CBI) -এর আধিকারিকেরা শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্ত আসেন বিধায়কের বাড়িতে। তার পর থেকেই হাজারো কর্মী সমর্থক বিধায়কের বাড়ির চারপাশে উপস্থিত হয়েছিল। টানা ৭২ ঘন্টা সিবিআই নথি সহ মোবাইলের খোঁজে তল্লাশি চালায়। সোমবার বিকেল সিবিআইয়ের টিম বিধায়কের বাড়ি ছাড়ে। তার পর থেকেই বিধায়কের বাড়ি সহ আশেপাশের এলাকা প্রায় জনশূন্য। যে বাড়িতে দিনভর হাজারো মানুষের আনাগোনায় মুখোরিত হয়ে থাকত দিনরাত। বিধায়কের গ্রেফতারের পর শ্মশানপুরীতে পরিণত হয়েছে মুর্শিদাবাদের বড়ঞা বিধায়ক জীবন কৃষ্ণ সাহার বাড়ি।
আরও পড়ুন:Elephant Attack | খোদ বনদফতর কর্মীর বাড়িতে হাতির তাণ্ডব
বিধায়কের আন্দির বাড়ি থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে খড়গ্রামের পারুলিয়া গ্রামে ছেলের ভালো থাকার আর্তি জানাচ্ছে মা বেলা রানী সাহা। ছেলের থেকে দূরে থাকলেও জীবনের পাঠানো টাকা দিয়েই চলত চিকিৎসা ও নিজের প্রয়োজনের খরচ। কিন্তু জীবনের বাবার গলায় ছেলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উঠে এল। তৃণমূল বিধায়ক সম্পর্কে তাঁর বাবার দাবি, দীর্ঘদিন ধরেই ওর সঙ্গে কোনও যোগাযোগ নেই। আমার ব্যবসার নানা ভাবে ক্ষতি করতে চেয়েছে ছেলে। ছেলে যদি দুর্নীতি করে থাকে তাহলে সরকার তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিক। এনিয়ে আমার কিছু বলার নেই।
প্রসঙ্গত, নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে তদন্তে নেমে জীবন কৃষ্ণের নাম উঠে আসে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার হাতে। বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা (Jiban Krishna Saha) অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mandal) ঘনিষ্ঠ ছিলেন বলে জানা গিয়েছে। বিধায়কের নামে ৪টি ও তাঁর স্ত্রীর নামে ৩টি অ্যাকাউন্ট রয়েছে। এই অ্যাকাউন্টগুলিতে কত টাকা রয়েছে এবং লেনদেন সংক্রান্ত যাবতীয় নথি ব্যাঙ্কের কাছে চেয়ে পাঠিয়েছে সিবিআই। বীরভূমে জীবনের একাধিক সম্পত্তির হদিশও মিলেছে। তদন্তকারীরা গরু পাচারে জীবনের ভূমিকা খতিয়ে দেখছিলেন। সিবিআই সূ্ত্রে জানা গিয়েছে, বীরভূম থেকে গরু মুর্শিদাবাদ হয়েই পাচার করা হত। এই গরু যখন জীবনকৃষ্ণের এলাকা দিয়ে পাচারের জন্য নিয়ে যাওয়া হত, তখন তিনিও সেখান থেকে টাকা তুলতেন বলে জানতে পেরেছে সিবিআই। জীবনের বাড়ি থেকে নিয়োগ সংক্রান্ত প্রচুর নথি উদ্ধার হয়েছে বলে দাবি সিবিআই-এর। জীবনের মোবাইল ও পেন ড্রাইভেও এ সংক্রান্ত অনেক তথ্য রয়েছে বলে দাবি গোয়েন্দাদের। উদ্ধার হওয়া নথি থতিয়ে দেখছে গোয়েন্দারা।