কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: স্বামী শিবানন্দ (Swami Sivananda)। বয়স ১২৫। যোগ শাস্ত্রে অগাধ পাণ্ডিত্যের জন্য সোমবার পদ্ম পুরস্কার দেওয়া হল তাঁকে। বিশ্বের ‘প্রবীণতম’ (oldest Padma award winner) যোগ সাধক পুরস্কার নিতে সুদূর বারাণসী থেকে এসেছিলেন এদিন।
নাম ঘোষণা হতেই খালি পায়ে এগিয়ে এলেন স্বামী শিবানন্দ। পরনে সাদা খাটো ধুতি এবং কুর্তা। এর পরেই চমক। ১২৫ বছরের যোগগুরু (Yog Sevak) এগিয়ে গেলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (Prime Minister Narendra Modi) দিকে। প্রধানমন্ত্রী মোদিকে অভ্যর্থনা জানাতে হাঁটু গেড়ে বসলেন (bowing down)। যা দেখে প্রধানমন্ত্রীও তাঁর চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়ালেন। তিনিও নিচু হয়ে শ্রদ্ধা জানালেন যোগগুরুকে।
আবেগঘন হয়ে ওঠে গোটা পরিবেশ। উপস্থিত প্রায় সকলেই চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে তাঁকে শ্রদ্ধা জানান। হলঘর মেতে ওঠে হাততালির শব্দে। এরপর তিনি মঞ্চের মাঝে যান। সেখানেও একই ভাবে হাঁটু গেড়ে বসে প্রণাম করেন। এগিয়ে যান রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের(President Ram Nath Kovind) দিকে। পুরস্কার নেওয়ার আগে তাঁকেও মাথা নত করে প্রণাম করেন।
প্রবীণ এই যোগগুরুকে শ্রদ্ধা জানাতে রাষ্ট্রপতি কোবিন্দ তাঁর চেয়ার থেকে উঠে সিঁড়ির একধাপ নেমে আসেন। স্বামী শিবানন্দকে তাঁর হাত ধরে তুলে নেন এবং তারপর তাঁর হাতে পুরস্কার তুলে দেন।
#WATCH Swami Sivananda receives Padma Shri award from President Ram Nath Kovind, for his contribution in the field of Yoga. pic.twitter.com/fMcClzmNye
— ANI (@ANI) March 21, 2022
আরও পড়ুন- Pradeep Mehra Viral video: মধ্যরাতে নয়ডার পথে দৌড়চ্ছেন প্রদীপ, কারণ জানলে বিস্মিত হবেন!
স্বামী শিবানন্দ। বর্তমান ঠিকানা বেনারস, অসিঘাটের কাছে কবীর নগরে। পাসপোর্ট থেকে শুরু করে আধার কার্ড সবেতেই জ্বলজ্বল করছে জন্মতারিখ ৮ আগস্ট, ১৮৯৬। সরকারি নথিকে মান্যতা দিলে গতবছর আগস্টে ১২৫ পেরিয়েছেন শিবানন্দ বাবা। তাঁর জন্ম ১৮৮৭ সালের ৮ সেপ্টেম্বর, তামিলনাড়ুর তিরুনাভেলি কাছাকাছি পত্তামদাইর কুপ্পুস্বামীতে। ১৮৯৬ সালে তিনি কাশী পৌঁছেছিলেন। গুরু ওমকারানন্দের কাছ থেকে শিক্ষা গ্রহণের পর তিনি যোগ ও ধর্মে একজন মহান ব্যক্তি হিসেবে পরিচিতি পান।
১৯২৫ সালে তিনি বিশ্বভ্রমণ শুরু করেন। ২৯ বছর বয়সে তিনি লন্ডনে যান। এরপর টানা ৩৪ বছর ধরে ভ্রমণ চালিয়ে যান। আমেরিকা, ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়া, রাশিয়া ইত্যাদি দেশ ঘুরে যখন তিনি দেশে ফিরেছিলেন তখন ভারত ৯তম প্রজাতন্ত্র দিবস উদযাপন করছিল। এরপর থেকেই দীর্ঘ অধ্যাবসায় ও আত্মত্যাগে ভারতের যোগশাস্ত্রকে বিশেষ মাত্রায় পৌঁছে দেন তিনি। নিয়মিত শরীরচর্চা ও অনুশীলনের মধ্যে দিয়ে পেয়েছেন সুস্বাস্থ্য, হয়েছেন দীর্ঘায়ু। এখনও তিনি ব্রহ্মচর্যের নিয়ম মেনে চলেন। শুধুমাত্র সেদ্ধ খাবার এবং সবজি খান। অবশেষে ১২৫ বছর বয়সে এসে তিনি পদ্ম সম্মানে ভূষিত হলেন তিনি।