বেঙ্গালুরু: চাঁদের (Moon) কক্ষপথে শনিবারই ঢুকে পড়েছিল চন্দ্রযান-৩ (Chandrayaan-3)। কক্ষপথে থেকে পৃথিবীর উপগ্রহের ভিডিও করল সেটি এবং রবিবার তা প্রকাশ করল ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো (ISRO)। ভিডিওর ক্যাপশনে লেখা হল, ২০২৩ এর ৫ আগস্ট লুনার অরবিট ইনসারশনের সময় চাঁদকে যেমন দেখল চন্দ্রযান-৩। ভিডিও পোস্ট করার পরে রবিবার রাতে চাঁদের কক্ষপথে আরও একধাপ এগোল ইসরোর মহাকাশযান।
গত ১৪ জুলাই শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান স্পেস সেন্টার এলভিএম-৩ রকেটে চেপে চাঁদের উদ্দেশে পাড়ি দিয়েছিল চন্দ্রযান-৩। প্রথমে পৃথিবীকে পাঁচবার প্রদক্ষিণ করে পৃথিবীর অভিকর্ষজ বলের মায়া কাটায় সেটি। মহাশূন্যে কিছুটা চলার পর চাঁদের কক্ষপথে ঢুকে পড়ে। এই প্রক্রিয়ার নামই লুনার অরবিট ইনসারশন (Lunar Orbit Insertion)। চাঁদকেও একাধিকবার প্রদক্ষিণ করবে চন্দ্রযান-৩। প্রথমে উপবৃত্তাকারে এবং চন্দ্রপৃষ্ঠের যত কাছে যাবে কক্ষপথ তত বৃত্তাকার হয়ে উঠবে। সবশেষে দক্ষিণ মেরুর দিকে সফট ল্যান্ডিং করবে।
আরও পড়ুন: মুখোমুখি লড়াই জুকারবার্গ ও মাস্কের, দেখতে মুখিয়ে দুনিয়া
The Moon, as viewed by #Chandrayaan3 spacecraft during Lunar Orbit Insertion (LOI) on August 5, 2023.#ISRO pic.twitter.com/xQtVyLTu0c
— LVM3-M4/CHANDRAYAAN-3 MISSION (@chandrayaan_3) August 6, 2023
প্রসঙ্গত, অ্যাপোলো-১১ (Apollo-11) সহ একাধিক পূর্ববর্তী মিশনে চাঁদে পৌঁছতে চারদিন লেগেছিল, কিন্তু ইসরোর যানের লাগবে ৪০ দিন। কেন এত দেরি? এর উত্তর নিহিত রয়েছে ইসরোর বেছে নেওয়া মহাকাশযানের গতিপথ এবং লঞ্চ ভেহিকলের সীমাবদ্ধতায়। অ্যাপোলো-১১ সহ সবক’টি অ্যাপোলো মিশনে সরাসরি গতিপথ ব্যবহার করেছিল যাকে মহাকাশ বিজ্ঞানের পরিভাষায় বলা হয় ‘ট্রান্সলুনার ইনজেকশন’ (Translunar Injection)। শক্তিশালী স্যাটার্ন ৫ (Saturn-5) মহাকাশযান অ্যাপোলো এয়ারক্রাফটদের পৃথিবীর কক্ষপথে পৌঁছে দিয়েছিল এবং সেখান থেকে একটি ইঞ্জিনের জ্বলনের সাহায্যে তাকে সরাসরি চাঁদের অভিমুখে পৌঁছে দেয়। এই উপায়ে কয়েকদিনেই চাঁদে পৌঁছে যায় নাসার যান।
কিন্তু চন্দ্রযান-৩-এর গতিপথ অন্যরকম। ইসরোর জিওসিনক্রোনাস লঞ্চ ভেহিকল মার্ক-৩ স্যাটার্ন-৫-এর মতো শক্তিশালী নয়, তার পেলোড ক্ষমতাও কম। সেই সীমাবদ্ধতার বিষয়টি বুঝেই চন্দ্রযান-৩-কে ক্রমান্বয়িক গতিপথে ছাড়া হয়। প্রথমে পৃথিবীকে একাধিকবার প্রদক্ষিণ করে এবং একাধিক ইঞ্জিনের জ্বলনের সাহায্যে তার গতিবেগ বাড়ানো হয় এবং চাঁদের অভিমুখে পাঠানো হয়। এই পদ্ধতিতে লঞ্চ ভেহিকল কম শক্তিশালী হলেও ক্ষতি নেই।