নয়াদিল্লি: স্বাধীনতার ৭৫ বছর পরেও রাষ্ট্রদ্রোহ (Sedition) আইনের যৌক্তিকতা কোথায়? বৃহস্পতিবার কেন্দ্রকে এই প্রশ্ন করল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। অবসরপ্রাপ্ত সেনা অফিসার মেজর জেনারেল এস জি ভোম্ববাটকেরে রাষ্ট্রদ্রোহ আইনকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন।
আদালতের পর্যবেক্ষণ, এটি ঔপনিবেশিক আইন। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনকে দমন করার জন্য মহাত্মা গান্ধী, বাল গঙ্গাধর তিলকদের বিরুদ্ধে এই আইন প্রয়োগ করেছিল ইংরেজরা। বৃহস্পতিবার ভোম্ববাটকেরের মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতি এন ভি রমণা অ্যাটর্নি জেনারেলের কাছে এই আইনের যৌক্তিকতা নিয়ে ব্যাখ্যা চান। প্রধান বিচারপতি এন ভি রমণা, বিচারপতি এ এস বোপান্না এবং বিচারপতি হৃষীকেশ রায়ের বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হচ্ছে।
কেন্দ্রের আইনজীবী অ্যাটর্নি জেনারেল কেকে বেণুগোপালও সুপ্রিম কোর্টের বৃহস্পতিবারের পর্যবেক্ষণের সঙ্গে সহমত পোষণ করেন। বৃহস্পতিবার এই আইন নিয়ে প্রধান বিচারপতি একাধিক মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘এই আইনের অপব্যবহার আমাদের চিন্তার বিষয়। এই আইনকে কত খানি কার্যকরী করা হচ্ছে, তাও নিয়েও উদ্বিগ্ন সুপ্রিম কোর্ট। যদি কোনও সরকার তার বিরোধী শক্তির কথায় অসন্তুষ্ট হয়, তাহলে এই ধারা প্রয়োগ করে বসে।’
অবসরপ্রাপ্ত সেনা অফিসার মেজর জেনারেল এস জি ভোম্ববাটকেরে তাঁর আবেদনে লেখেন, ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২৪(এ) ধারা সংবিধানের ১৯(১)(এ), ১৪ এবং ২১ এই তিন অনুচ্ছেদের পরিপন্থী। ভারতীয় সংবিধানে দেশের নাগরিকদের বেশকিছু মৌলিক অধিকার দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২৪(এ) ধারা প্রয়োগের মাধ্যমে তাঁদের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে। স্বাধীন মতপ্রকাশের অধিকারকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করে এই আইন প্রয়োগ করা হচ্ছে।
এর আগে একাধিকবার রাষ্ট্রদ্রোহ (Sedition) আইন বাতিলের দাবিতে সরব হয়েছে রাজনৈতিক দলগুলি। রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে জেএনইউয়ের ছাত্র নেতা কানহাইয়া কুমারের বিরুদ্ধে চার্জশিট প্রসঙ্গে কংগ্রেস নেতা তথা প্রবীণ আইনজীবী কপিল সিব্বল বলেছিলেন, ‘ওই আইন অবিলম্বে বাতিল করা উচিত। শাসক শিবির ওই আইনকে নিজের স্বার্থে ব্যবহার করে থাকে।’ একাধিক মানবাধিকার সংগঠনও দীর্ঘদিন থেকে রাষ্ট্রদ্রোহ আইনের (ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২৪এ) ধারাটি বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছে।