নয়াদিল্লি: বছর ঘুরলেই পঞ্জাব-উত্তরপ্রদেশে বিধানসভা নির্বাচন। এর মধ্যে পঞ্জাবে ক্ষমতায় রয়েছে কংগ্রেস। ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপির কাছে বড় চ্যালেঞ্জ সীমান্তবর্তী রাজ্য পঞ্জাব পুনরুদ্ধার। প্রধানমন্ত্রী আইন প্রত্যাহারের ঘোষণার সময় কৃষকদের স্বার্থের কথা বলেছেন। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, পঞ্জাব বিধানসভা ভোটে ভরাডুবির আশঙ্কা থেকেই বিতর্কিত ৩ কৃষি বিল প্রত্যাহারের কথা ঘোষণা করেছেন মোদি।
পঞ্জাবে কংগ্রেস ক্ষমতায় থাকলেও দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চিন্তায় রাখছে হাইকম্যান্ডকে। নভজ্যোত সিং সিধুর সঙ্গে দীর্ঘ বিরোধের জেরে গত ১৮ সেপ্টেম্বর মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেন প্রবীণ নেতা অমরিন্দর সিং৷ তারপর নতুন দল গঠনের কথা ঘোষণা করেছেন তিনি। অমরিন্দর আগেই জানিয়ে রেখেছিলেন, কৃষি আইন প্রত্যাহার করা হলে তাঁর দল বিজেপির সঙ্গে জোটের পথে হাঁটতে পারে।
ফলে পঞ্জাব দখলের লড়াইয়ে ক্যাপ্টেনকে পাশে পেতে পারে বিজেপি। যা কিছুটা হলেও অক্সিজেন দেবে তাদের। তবে ইতিমধ্যেই গেরুয়া শিবিরের চিন্তার বাড়িয়েছে অকালি দলের পদক্ষেপ। কৃষি আইনের প্রতিবাদে এনডিএ ছেড়ে বেড়িয়ে এসেছিল সুখবীর সিং বাদলের অকালি দল। সেই আইন প্রত্যাহারের পর বিজেপি মনে করেছিল, এনডিএ-র অন্যতম পুরনো জোটসঙ্গী অকালি দলকে পাশে পাবে তারা।
সেই আশায় জল ঢেলে দিয়েছেন স্বয়ং সুখবীর সিং। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কৃষি আইন প্রত্যাহারের ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তিনি ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছেন, বিজেপির সঙ্গে জোটের পথে হাঁটবে না অকালি দল। বিজেপি কৃষি আইন প্রত্যাহারকে হাতিয়ার করে ভোটের ময়দানে নামার কথা ভেবে রেখেছে। কংগ্রেস, অকালি দল, আপও কিন্তু হাত গুটিয়ে বসে নেই। তাদের স্ট্রাটেজিও তৈরি রয়েছে।
আরও পড়ুন: কৃষকরা ফসলে ন্যূনতম সহায়ক মূল্য পাবেন তো? প্রশ্ন কংগ্রেসের
আন্দোলন চলাকালীন ৭০০ কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের আত্মবলিদানকে হাতিয়ার করছে বিরোধী দলগুলি। এই প্রচার কিছুটা হলেও ব্যাকফুটে ঠেলে দেবে গেরুয়া শিবিরকে। কৃষকদের অন্যান্য দাবিদাওয়া নিয়েও সরব হতে শুরু করেছে বিরোধী দলগুলি। এ ছাড়াও কৃষক সংগঠনগুলির সমর্থন কোন দিকে যাবে তা এখনও স্পষ্ট নয়। পঞ্জাবে বিধানসভা ভোটে কৃষক সংগঠনগুলির অবস্থান নির্ণায়ক ভূমিকা নিতে পারে।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, বিতর্কিত তিন কৃষি আইন প্রত্যাহার করলেও পঞ্জাবে বিজেপির ভরাডুবির সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। সেই বিষয়টা আঁচ করেই অত্যন্ত পরিকল্পনা মাফিক গুরু পরবের দিন কৃষি আইন প্রত্যাহার করা হয়েছে। শিখদের মন জয়ের জন্য এই দিনটিকে বেছে নিয়েছে গেরুয়া শিবির। তবে কৃষক আন্দোলনের জেরে পঞ্জাবে ক্ষত এতটাই গভীর আকার ধারণ করেছে যে তা মেরামত করা বেশ কঠিন, ঠারেঠোরে সেটা বুঝছেন মোদি-শাহ।
আরও পড়ুন: সিঙ্গুর থেকে সিংঘু, ঐতিহাসিক অগ্নিপথ