নয়াদিল্লি: রাফাল দুর্নীতি মামলায় নয়া মোড়। যুদ্ধবিমান চুক্তি ঘিরে নতুন করে বিচারবিভাগীয় তদন্ত করবে ফ্রান্স। সেই মতো নিয়োগ করা হয়েছে বিচারক। এই দুর্নীতির নয়া তদন্তের কথা প্রকাশ্যে আসতেই ভারতের রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে জোর চাপানউতোর। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের প্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি ঘিরে কেন্দ্রীয়কে সরকারকে বিঁধতে শুরু করেছে বিরোধী দলগুলি।
আরও পড়ুন: ৮৫ জন যাত্রী নিয়ে ভেঙে পড়ল বিমান
ভারতের আইনজীবী প্রশান্তভূষণ এই বিমান কেনা নিয়ে কোটি কোটি টাকা তছরুপের বিষয়ে তদন্তের দাবিতে আগেই সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিলেন। তৎকালীন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগেই এফআইআর অযৌক্তিক জানিয়ে মামলা খারিজ করে দেন। নতুন করে ফ্রান্স তদন্তে নামছে এটা জানার পরই প্রশান্তভূষণ জানিয়েছেন, এর থেকেই প্রমাণ হয় সেদিন তাঁর মামলা করার কারণ একেবারেই অযৌক্তিক ছিল না। গগেই এর নেতৃত্বে আদালত সরকারের দেওয়া তথ্যই মেনে নিয়েছিল। এরপর তাৎপর্যপূর্ণভাবে অবসর নিয়ে গগেই রাজ্যসভার সিটও পান। এই কথার পর থেকেই চাপে মোদি। তাঁকে একহাত নিয়েছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। তিনি জানিয়েছেন, দোষ কখনও চাপা থাকে না।
আরও পড়ুন: করোনায় মেয়াদ বাড়ল ওপেন ডিসটেন্স লার্নিং-এ :ইউজিসি
বিগত দু’মাস ধরে ফ্রান্সের ওয়েবসাইট ‘মিডিয়াপার্ট’ এ রাফাল চুক্তির সঙ্গে সম্পর্কিত একাধিক আর্থিক দুর্নীতির কথা প্রকাশ্যে এসেছে। তারপরই এই ঘটনার পুনরায় তদন্তের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মিডিয়াপার্টের রিপোর্টে উঠে এসেছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নতুন রাফালে চুক্তি ঘোষণার দুই সপ্তাহ আগেই আম্বানি ফরাসি বিমান নির্মাতা ডাসল্টের সঙ্গে একটি চুক্তি করেছিলেন। অনিল আম্বানির রিলায়েন্স গ্রুপের অংশীদারিত্বের সঙ্গে ডাসল্টকে ভারতে ৩৬ টি প্রস্তুত-উড়ানের বিমানের বরাত দেওয়া হয়েছিল, এই নতুন চুক্তিটির মূল্য ছিল ৬০ হাজার কোটি টাকা। এটি পূর্ববর্তী চুক্তিকে প্রতিস্থাপন করেছিল যেখানে ডাসল্টকে ভারতে ১২৬ রাফালে যুদ্ধবিমান সরবরাহ করতে হয়েছিল, যার মধ্যে ১০৮টি হিন্দুস্তান অ্যারোনটিকস লিমিটেড (এইচএল) দ্বারা প্রযুক্তি হস্তান্তর চুক্তির মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছিল। প্রাথমিক তদন্তে দেখা গিয়েছে, নতুন চুক্তি আগের চুক্তির চেয়ে তিনগুণ বেশি ব্যয়বহুল।
আরও পড়ুন: রেড রোডের বাস দুর্ঘটনায় গ্রেফতার চালক
বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ মনোজ কুমার ঝা বলেছেন, ‘রাফালে চুক্তিটি নতুন করে ফ্রান্সে তদন্ত শুরু হয়েছে। বিমানের দাম নির্ধারণ, সরঞ্জামাদি, প্রভৃতি নিয়ে অস্পষ্টতা থাকলে তা নিয়ে তদন্ত হোক। আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের অপেক্ষা করতে হবে।’ অন্যদিকে, কংগ্রেসের মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালা জানিয়েছেন, ‘আমরা চাই এই ঘটনার তদন্ত হোক। এবার আসল সত্যি সামনে আসবে।’