ঝাবুয়া : আমাদের গরমপ্রধান দেশ। তাই হয়ত জলের প্রয়োজন বেশি। অথচ আমাদের দেশে জলকষ্টে ভোগে অনেক রাজ্য। ইতিমধ্যে জলবিহীন জেলা ঘোষণা হয়েছে দেশের অনেক রাজ্যেই। এমন অনেক গ্রাম আছে যেখানে স্নানের জল তো দূর, একটু খাবার জল পাওয়ার জন্য হাঁটতে হয়
মাইলের পর মাইল। দেশের অনেক রাজ্যের জেলায় জেলায় অবশ্য এটা অতি পরিচিত দৃশ্য। মধ্যপ্রদেশের এরকমই এক আদিবাসী অধ্যুষিত জেলা ঝাবুয়া। যেখানে এক বালতি জল আনতেও পেরোতে হয় বহু দূরের রাস্তা। তাও ঠা ঠা রোদে। এরকমই একদিনের ছবি তুলে ধরব আপনাদের সামনে।
আরও পড়ুন : হিন্দু মতে সব নিয়ম মেনে বিয়ে করলেন দুই ‘তুতো বোন’
৪৪ ডিগ্রি গরমের মধ্যে দিয়ে হাঁটছিল মেয়েটা। কর্কশ কাঁকর বিছনো রাস্তা পেরিয়ে হাঁটছিল সে। তার বাড়ি থেকে বেশ দূরে কুয়োটা। কিন্তু
সেই কুয়ো থেকে জল তোলার পদ্ধতি মনে করিয়ে দিতে পারে সার্কাসের কথা। সেই যে দড়ির উপর দিয়ে হাঁটার খেলাটা আছে না। একপা
একপা করে এগিয়ে যেতে হয়। খুব সতর্ক না থাকলে যেকোনও মুহূর্তে পা পিছলে যেতে পারে। ওই মেয়েটির কুয়ো থেকে জল তোলার
পদ্ধতিটাও খানিকটা সেরকমই।
না আছে কোনও পাঁচিল। না আছে কোনও ধরার জায়গা। কুয়োটা অবশ্য পুরোপুরি খোলা নয়। কাঠ দিয়ে ঢেকে রাখা। ওতে জল শুকোবে
কম। কাঠ বলতে অবশ্য গাছের গুঁড়ি। একটার পর একটা সারি দিয়ে রাখা। আর জল তুলতে হবে তারই মাঝখানে অল্প একটি খোলা জায়গা
দিয়ে। একটু এদিক ওদিক হলেই বিপদ। পা পিছলে একেবারে ২০ ফুট গভীরে।
আরও পড়ুন : Eid Mubarak: উৎসব জমে উঠুক শাহি টুকরার স্বাদে
আদিবাসী মেয়েটা অবশ্য একটুও ভয় না পেয়ে উঠে পড়ল গাছের গুঁড়িগুলোর উপর। অদ্ভূত কায়দায় মেয়েটি গাছের গুঁড়িগুলোর মাঝখানে
একটু জায়গা বের করে সেখান দিয়ে নামিয়ে দিল দড়ি-বালতি। আর একটু একটু করে তুলে আনল জল। এরকম করে দুটো কলসি জল ভরে
ফেলল সে। এত অনায়াস দক্ষতায় কাজটা করলো সে। এরপর দুটি কলসি নিয়ে বাড়ি ফেরার পালা তার। একইভাবে হেঁটে পাড়ি দেবে লম্বা
রাস্তা{ দিনে দুবার এই পথ পাড়ি দেয় সে। আর শুধু ওই মেয়েটিই নয়। তার পথের সঙ্গী আরও বহু মেয়ে। এভাবেই বিনা অভিযোগে
মাইলের পর মাইল রাস্তা হেঁটে জল আনতে যান তাঁরা। একটু জলের জন্য।