চণ্ডীগড়: কৃষক আন্দোলন ভন্ডুল করতে পুলিশকে কৃষকদের মাথায় আঘাত করার নির্দেশ দিচ্ছেন মহকুমা শাসক৷ শনিবার হারিয়ানার কার্নাল জেলার ঘটনা৷ সেই নির্দেশের ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে৷ যা কেন্দ্র করে সামাজিক মাধ্যমে সমালোচিত হয়েছেন কার্নালের মহকুমা শাসক আয়ুশ সিনহা৷
এই সমালোচনা শুধু বিজেপি বিরোধী মানসিকতার লোকজনই করছে এমনটা নয়৷ বিজেপি সাংসদ বরুণ গান্ধিও সেই ভিডিও টুইটারে পোস্ট করেছেন৷ একই সঙ্গে তিনি লিখেছেন, আশা এই ভিডিওটি এডিট করা৷ আর তা যদি না হয়ে থাকে তাহলে আমাদের গণতান্ত্রিক দেশে সাধারণ নাগরিক সঙ্গে এমন আচারণ মেনে নেওয়া যায় না৷
আরও পড়ুন- মমতাকে অসম-ত্রিপুরায় রেড কার্পেটে স্বাগত জানানো হবে: হিমন্ত
I hope this video is edited and the DM did not say this… Otherwise, this is unacceptable in democratic India to do to our own citizens. pic.twitter.com/rWRFSD2FRH
— Varun Gandhi (@varungandhi80) August 28, 2021
শনিবার হরিয়ানায় কৃষক আন্দোলন ভন্ডুল করতে কার্নালের মহকুমা শাসক পুলিশকে লাঠি চার্জের নির্দেশ দিয়েছিলেন৷ নির্দেশে পরে পুলিশের থেকে ‘লাথ মারোগে না’ বলে উত্তর জানতেও চেয়ে ছিলেন৷ সেই নির্দেশ পেয়ে পুলিশ বিজেপির বিরুদ্ধে আন্দোলনকারী কৃষকদের উপর নির্বিচারে লাঠি চার্জ করে৷ বহু কৃষক জখম হয়৷ পরে জানা যায়, পুলিশের লাঠি চার্জে ১০ জন কৃষক গুরুতর জখম হয়েছেন৷ কৃষকদের অপরাধ ছিল যে, মুখ্যমন্ত্রী মনোহার লাল খাট্টার , রাজ্য বিজেপি প্রধান ওম প্রকাশ ধনকড়-সহ অন্যান্য বিজেপি নেতাদের উপস্থিতিতে অবরোধ করেছিল৷
আরও পড়ুন- ভোট পরবর্তী হিংসার শিকার তৃণমূলকর্মীর বাড়িতে গরহাজির CBI, প্রশ্নের মুখে নিরপেক্ষতা
ভাইরাল হওয়া ভিডিও-তে দেখা যাচ্ছে, কার্নালের মহকুমা শাসক আয়ুশ সিনহা একদল পুলিশের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন৷ পুলিশরা কী করবে তা নির্দেশ দিচ্ছেন৷ যাতে কোনও ভাবেই কৃষকরা ব্যারিকেডের ওপাশে যেতে না পারেন৷
আয়ুশ সিনহা পুলিশদের বলছেন, ‘এটা খুব সহজ সরল ব্যাপার যে কেউই হোক না কেন, তারা কেউই যেন ওখানে পৌঁছতে না পারে৷ যে কোনও মূল্যে কেউই যেন ওখানে যেতে না পারে৷ শুধু আপানারা লাঠি তুলবেন আর পেটাবেন……এটা খুবই পরিষ্কার, এর বাইরে আর কোনও নির্দেশের প্রয়োজন নেই৷ তাদের শুধু কঠোরভাবে আঘাত কর। আমি যদি একজনও বিক্ষোভকারীকেও দেখি, সঙ্গে সঙ্গে আমি দেখতে চাই মাথা-হাত পা গুড়িয়ে গিয়েছে৷’ এখানেই ভিডিও-টি শেষ হয়নি৷ মহকুমা শাসককে আরও বলতে শোনা গিয়েছে, ‘আর কোনও সন্দেহ আছে? প্রত্তুত্যরে পুলিশ দল উত্তর দেয়, না স্যার৷’
আরও পড়ুন-রাম ছাড়া অযোধ্যা কিছুই না, রাষ্ট্রপতির মন্তব্যে অসন্তুষ্ট বিরোধীরা
বরুণ গান্ধি ছাড়াও এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন রণদীপ সিং সুরজেওয়ালা৷ তিনি টুইট করে লিখেছেন, খাট্টার সাহেব আপনি আজকে হরিয়ানাবাসীর হৃদয়ে লাঠির বন্যা বইয়েছেন৷ আগামী প্রজন্ম কৃষকদের এই রক্ত ঝরার কথা মনে রাখবে৷ “
স্বারজ ইন্ডিয়ার প্রধান ও কৃষক নেতা যোগেন্দ্র যাদব বলেছেন, হরিয়ানা পুলিশের আসল চেহারা বেরিয়ে এসেছে৷ কৃষকরা ওখানে মুখ্যমন্ত্রী ও তাঁর দলের নেতাদের উপস্থিতির বিরোধিতা করছিলেন৷ এটাই হরিয়ানা পুলিশের আসল চেহারা৷”
আরও পড়ুন- একটানা ৬৬ বার স্কিপিং, ক্রীড়া দিবসে ফিট থাকার প্রমাণ দিলেন অনুরাগ ঠাকুর
শনিবার সকালে কার্নাল জেলার গুরুদ্বরা সাহিব অঞ্চলে জমাতের কথা ছিল প্রতিবাদী কৃষকদের৷ কিন্তু, কার্নালের জেলা শাসকের নির্দেশে পুলিশের লাঠিচার্জে তা সম্ভব হয়নি৷ কারণ, স্থানীয় কার্নাল জেলার শাসকের স্পষ্ট নির্দেশ ছিল, আমরা দু’দিন ধরে এখানে আছি৷ ঘুমায়নি৷ যে কোনও ভাবেই জমায়েত বন্ধ করতে হবে৷ এটা ওপেন ওর্ডার৷ মারোগে না লাথ!’ এরপরই পুলিশি তাণ্ডব শুরু হয়৷
আরও পড়ুন- আমেরুল্লাহ-র টুইট আটকাতে পঞ্জশিরে নেট বন্ধ করল তালিবান
পরে সোনিপাত জেলার জেলার পানিতক-রহতক জাতীয় সড়ক অবরোধ করে ‘কৃষকরা’৷ ধীরে ধীরে পরিস্থিতি জটিল হতে থাকে৷ দিল্লি কার্নাল তাজীয় সড়কের বাস্তারা ডোল প্লাজার কাছে ফের জমায়েত করে কৃষকরা৷ কার্যত কুরুক্ষেত্রে এলাকায় রাস্তা অবরোধ করে তাঁরা৷ সেখানেও পুলিশের লাঠিচার্জে প্রতিবাদী ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়৷