নয়াদিল্লি: আফগানিস্তানে মন্ত্রিসভা গঠন করেছে তালিবান৷ আর ঠিক সেদিনই ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের (Ajit Doval) সঙ্গে বৈঠক করেন সিআইএ প্রধান উইলিয়াম বার্নস (William Burns)৷ মার্কিন গোয়েন্দা প্রধান মঙ্গলবারই ভারতে আসেন৷ আফগানিস্তানে তালিবানের সরকার গঠনের সময় তাঁর ভারতে ছুটে আসা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে কূটনৈতিক মহল৷ বার্নস এবং দোভালের আলোচনার বিষয় জানা যায়নি৷ তবে এই মুহূর্তে আফগানিস্তান ছাড়া অন্য কোনও বিষয় নিয়ে বিশেষ মাথা ঘামাচ্ছে না শক্তিধর দেশগুলি৷ তাই ধরেই নেওয়া হচ্ছে, আফগানিস্তানে তালিবানের সরকার গঠন, তার সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া এবং নিরাপত্তাজনিত বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে দু’জনের মধ্যে৷
আরও পড়ুন: আমেরিকার ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ সিরাজুদ্দিন হক্কানি তালিবদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
তিন সপ্তাহ আগে কাবুলের পতনের পরই ভারত আফগানিস্তানের দূতাবাস থেকে তাদের কর্মীদের সরিয়ে নেয়৷ কিন্তু চীন ও পাকিস্তান এখনও তাদের দূতাবাস খোলা রেখেছে৷ এবং দুই দেশই তালিবানের সঙ্গে কাজ করার বার্তা দিয়েছে৷ জম্মু-কাশ্মীর ইস্যুতে তালিবান যে আগামী দিনে ভারতের মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠতে পারে সে ব্যাপারে মোদি সরকারের উদ্বেগ রয়েছে৷ তাই ইতিমধ্যে দিল্লির তরফে তালিবানকে বার্তা দিয়ে জানানো হয়েছে, আফগানিস্তানের মাটিকে যেন ভারত বিরোধী কার্যকলাপে ব্যবহার করতে না দেওয়া হয়৷
আরও পড়ুন: তালিবান নিয়ে দিশাহারা চিন-পাকিস্তান-রাশিয়া, দাবি আমেরিকার
এর পাশাপাশি আফগানিস্তানের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে পাকিস্তানের হস্তক্ষেপ নিয়ে চিন্তায় ভারত৷ মঙ্গলবার রাষ্ট্রসংঘে ভারতের প্রতিনিধি বিদিশা মৈত্র জানিয়েছিলেন, এখানে দাঁড়িয়ে পাকিস্তান ভারতের বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক ভাষণ দিচ্ছে৷ অথচ নিজেরাই ঘরের ভেতর এবং বাইরে ‘হিংসার সংস্কৃতি’ গড়ে তুলছে৷
আফগানিস্তানর তালিবানের সরকার গঠনের পর চিন্তায় আমেরিকাও৷ দেখা গিয়েছে আফগান মন্ত্রিসভায় যে ৩৩ জনকে ঠাঁই দেওয়া হয়েছে তাদের মধ্যে ১৭ জনের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে আমেরিকা৷ তালিবান মন্ত্রিসভায় স্থান পেয়েছে কুখ্যাত হাক্কানি নেটওয়ার্কের দুই নেতা৷ যাদের নাম এখনও রয়েছে আমেরিকার সন্ত্রাসবাদী তালিকায়৷ একজনের তো মাথার দামই ১ কোটি ডলার৷ তালিবান ক্ষমতায় আসায় চীন-পাকিস্তানের যতটা সুবিধা হয়েছে ততটাই চাপে পড়েছে ভারত-আমেরিকা৷ তাই কূটনৈতিক মহলের ধারনা, আফগানিস্তানের এমন সঙ্কটজনক অবস্থায় ভারতকে পাশে পেতে চায় ওয়াশিংটন৷ সেই জন্য বিভিন্ন স্তরে তারা ভারতের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে৷