কলকাতা: কলকাতায় জাতীয় গঙ্গা পরিষদের বৈঠকে উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদবকেই (Tejashwi Yadav) প্রতিনিধি হিসেবে পাঠাচ্ছেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার (Bihar CM Nitish Kumar)। ৩০ ডিসেম্বর ওই বৈঠকে পৌরেহিত্য করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Prime Minister Narendra Modi)। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, আরজেডি (RJD) সচেতনভাবেই তেজস্বীকে তুলে ধরতে চাইছে জাতীয় রাজনীতিতে(national politics)। তার জন্যই নীতীশের সিদ্ধান্তেই সিলমোহর দিয়েছেন দলের শীর্ষ নেতৃত্ব।
এই প্রথম বিহারের নবীন উপমুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রীয় সরকারের কোনও বৈঠকে রাজ্যের প্রতিনিধিত্ব করছেন। গত জুলাই মাস থেকে নীতীশ কুমার কেন্দ্রীয় সরকারের ডাকা অন্তত হাফ ডজন বৈঠক এড়িয়ে গিয়েছেন। এমনকী সম্প্রতি কলকাতায় পূর্বাঞ্চলীয় নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকেও তিনি হাজির ছিলেন না।
আরও পড়ুন: Demonetisation: নোটবন্দি ঘোষণার দিনও রিজার্ভ ব্যাঙ্কের বৈঠকে আপত্তিই জানিয়েছিলেন সদস্যরা
রাজনৈতিক মহলের মতে, তেজস্বী জাতীয় রাজনীতিতে ক্রমশই প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠছেন। আরজেডি সুপ্রিমো লালু প্রসাদের (RJD Supremo Lalu Prasad Yadav ) শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ। তাঁর বয়সও হয়েছে। এই অবস্থায় লালু চান, তাঁর ছোট ছেলে তেজস্বীই দলের হাল ধরুন। নীতীশও এখন তাঁর ডেপুটিকে খুব গুরুত্ব দিচ্ছেন। গত ১৩ ডিসেম্বর নালন্দায় (Nalanda rally) এক সভায় বলেছিলেন, ২০২৫ সালে বিহার বিধানসভা ভোটের (Bihar Legislative Assembly elections) প্রচারে মহাগাটবন্ধনের (mahagatbandhan-grand alliance) নেতৃত্ব দেবেন তেজস্বী। সূত্রের খবর, আরজেডি এখন থেকেই নীতীশের উপর চাপ দিয়ে রাখছে, যাতে তিনি ২০২৫ সালের ভোটে মুখ্যমন্ত্রী পদের দাবিদার না হয়ে ওঠেন।
নীতীশ কেন তেজস্বীকেই জাতীয় গঙ্গা পরিষদের বৈঠকে বিহারের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য বাছলেন?
জেডিইউ (JDU) সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রী এখন আরজেডিকে (RJD) খুশি রাখতে চান। কোনও মতেই তিনি লালুর দলকে চটাতে চান না। সে কারণেই তিনি তেজস্বীকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন। সম্প্রতি আরজেডির রাজ্য সভাপতি জগদানন্দ সিং ( RJD state president Jagdanand Singh) এ প্রসঙ্গে বলেন, নীতীশ এখন তুচ্ছ বিষয়ে গুরুত্ব দিতে চান না। তাঁর নজর উপরের দিকে (প্রধানমন্ত্রীর কুর্সি)। আরজেডির জাতীয় মুখপত্র সুবোধ কুমার বলেন, নীতীশ কুমার যাই ভেবে থাকুন, আসল কথা হল, তেজস্বীর প্রভাব এবং গুরুত্ব বাড়ছে বিহারে এবং জাতীয় স্তরে। তার জন্যই মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে কলকাতায় পাঠাচ্ছেন বিহারের প্রতিনিধি হিসেবে। সুবোধের দাবি, তেজস্বী গুরুত্ব পাওয়ার অধিকার অর্জনও করেছেন।
আরজেডির এক নেতা আবার ভিন্ন ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেন, নীতীশ কুমার এখনও প্রধানমন্ত্রীর মুখোমুখি হওয়া এড়াতে চাইছেন। প্রসঙ্গত, বিহারে বিজেপির হাত ছেড়ে নীতীশ কুমার কংগ্রেসের হাত ধরার পর থেকে নীতীশ বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতাদের মুখোমুখি হননি।
আরও পড়ুন: AITC Worker: পুরনো কর্মীদের দলে ফেরাতে এবার পথে নামার উদ্যোগ তৃণমূলের
জাতীয় গঙ্গা পরিষদ তৈরি হয় ২০১৬ সালে। ন্যাশনাল গঙ্গা রিভার বেসিন অথরিটি বাতিল হয়ে যাওয়ার পর এই পরিষদ গঠন করা হয়। ন্যাশনাল মিশন ফর ক্লিন গঙ্গা প্রকল্পের আওতায় রয়েছে এই পরিষদ। তার চেয়ারম্যান হলেন প্রধানমন্ত্রী। ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে পরিষদের শেষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। তিন বছর পর কলকাতায় ৩০ ডিসেম্বর বসতে চলেছে পরিষদের আগামী বৈঠক। পশ্চিমবঙ্গ, বিহার সমেত একাধিক রাজ্যের প্রতিনিধি এই বৈঠকে অংশ নেবেন। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৈঠকে থাকবেন বলে নিজেই জানিয়েছেন। সূত্রের খবর, গঙ্গার দূষণ, ভাঙন. দুই পারের সৌন্দর্যায়ন ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হবে।