কাবুল: ১০ দিন হল আফগানিস্তানের মসনদে বসেছে তালিবান। কাবুলে কিছু মার্কিন সেনা রয়ে গেলেও গোটা দেশের দখল তালিবানের হাতে। ক্ষমতা দখল করেই আফগান সেনার অস্ত্রাগারের দখল নিয়েছে তালিবানরা। মার্কিন সেনা বাহিনীর কিছু অস্ত্রও লুঠ করছে তারা। এর ফলে কট্টরপন্থী সংগঠনটির হাতে এসেছে বিপুল পরিমাণ মার্কিন অস্ত্র।
ভারতের সেনা কর্তাদের অনুমান, সেই অস্ত্র পাকিস্তানে পাঠিয়ে দিচ্ছে তালিবান। পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই (ISI) পাকিস্তানে নানা হিংসাত্মক কার্যকলাপে ব্যবহারের পর তা পাঠিয়ে দেবে ভারতে। পাকিস্তানের মদতে ভারতের মাটিতে যেসব জঙ্গি সংগঠন সক্রিয় রয়েছে, তাদের কাছে পৌঁছে যেতে পারে সেই সব অস্ত্র। যা পরবর্তীকে ভারতের মাটিতে নাশকতার কাজে ব্যবহার করা হতে পারে।
দু’দশক যাবত আফগান বাহিনীকে M-16 এবং M-4 অ্যাসল্ট রাইফেল সহ সাড়ে ছ’লাখেরও বেশি ছোট অস্ত্র দিয়েছে আমেরিকান সেনা। সেই অস্ত্রই লুঠ করে তালিবান। প্রচুর পরিমাণে লাইট মেশিনগান, ৫০ ক্যালিবার আগ্নেয়াস্ত্র, স্নাইপার রাইফেলও (দূর থেকে লক্ষ্যভেদ করা যায় এমন বন্দুক) তালিবানদের হাতে এসেছে। আফগান অস্ত্রাগার থেকে বুলেটপ্রুফ সরঞ্জাম এবং নাইট ভিশন গগলসও লুঠ করেছে তালিবান।
আরও পড়ুন: ফিরল বামিয়ানের স্মৃতি, ঐতিহাসিক গজনি গেট ধ্বংস করল তালিবান
এই সব অস্ত্রই পাকিস্তান হয়ে ভারতে পৌঁছে যেতে পারে আশঙ্কা করা হচ্ছে। দেশের এক সামরিক অফিসার জানিয়েছেন, পাকিস্তানের আইএসআই-এর মদতপুষ্ট জঙ্গি সংগঠনগুলো তালিবানের জয়ের পর পর শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। ওই অস্ত্র আগে পাকিস্তানেই হিংসার জন্য ব্যবহৃত হবে। এর পর ভারতে অশান্তি সৃষ্টিকারী জঙ্গিদেরকে ওই অস্ত্র সরবরাহ করা হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে জঙ্গি মোকাবিলায় ভারতীয় বাহিনী পুরোপুরি তৈরি রয়েছে।
তালিবানরা কাবুল দখল করার পর পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের গলায় তালিবানদের সমর্থনের সুর শোনা গিয়েছে। আফগানিস্তানে তালিবানি-রাজ প্রসঙ্গে ইমরান বলেছিলেন, আপনি অন্যের সংস্কৃতি দখল করেন এবং মানসিকভাবে বশীভূত হন। যখন এটি ঘটে, মনে রাখবেন, এটি প্রকৃত দাসত্বের চেয়েও খারাপ। সাংস্কৃতিক দাসত্বের শিকল ছুড়ে ফেলা কঠিন কাজ। আফগানরা দাসত্বের শিকল ভেঙে ফেলেছে।
আরও পড়ুন: তালিবান প্রশ্নে চুপ কেন মুসলিম ল-বোর্ড, জাভেদের টুইটে তোলপাড় নেটপাড়া
এপ্রিল মাসে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের কথা ঘোষণা করেন৷ ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে এই প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার কথা৷ আমেরিকার ঘোষণায় শক্তিসঞ্চয় করতে শুরু করে তালিবানরা৷ এর পর গত তিন মাসে একের পর এক প্রাদেশিক রাজ্যগুলির দখল নিতে শুরু করে তারা৷ ১৫ অগস্ট কাবুলের দখল নেয় তালিবানরা। কাবুলে হামলা হবে না, এই শর্তেই তালিবানের সঙ্গে সমঝোতা হয় আফগানিস্তান সরকারের।