আর মাত্র কয়েকদিনের অপেক্ষা। তারপরেই শ্রেষ্ঠ রংয়ের উৎসব দোল (Dol Purnima) বা হোলি। দোল উৎসবের অপর নাম হল বসন্তোত্সব। ভারতীয় হিন্দু সমাজে এই দিনটির বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। আট থেকে আশি সকলে এই উৎসবে মেতে ওঠে। বাংলা ও ওড়িষা ছাড়াও ভারতের বিভিন্ন স্থানে দোল উৎসব (Dol Purnima) মহাসমারোহে পালিত হয়। কিন্তু জানেন কী ভারতের বেশির ভাগ জায়গাতেই রংয়ের উৎসবকে হোলি উৎসব(Holi Utsav 2023) বলা হয়। তবে এই দোল এবং হোলি মধ্যে একদিনের পার্থক্য থাকে। বাঙালিরা যেদিন দোল খেলেন তার পরের দিন হোলি পালিত হয়। দুটি আলাদা আলাদা দিনে একই উৎসব পালন করার পিছনে রয়েছে নানান কারণ। চলুন জেনে নেওয়া যাক।
দোলযাত্রা বা দোল পূর্ণিমা পালিত হয় রাধা ও কৃষ্ণের প্রেমের কাহিনির ওপর ভিত্তি করে। আর হোলি পালন করা হয় নৃসিংহ অবতারের হাতে হিরণ্যকশিপু বধ হওয়ার যে পৌরাণিক কাহিনি, তার ওপর ভিত্তি করে। হিন্দু পঞ্জিকা অনুসারে ফাল্গুন মাসের পূর্ণিমা রাতের পরের দিন দোল উৎসব পালন করা হয়। এই বছর দোল উৎসব পালিত হবে ৭ মার্চ এবং হোলি উৎসব পালন করা ৮ মার্চ। এর আগের দিন অর্থাৎ ৬ মার্চ ন্যাড়া পোড়া বা হোলিকা দহন নামে পরিচিত।
আরও পড়ুন:TET: ২০০৯-এর প্রাথমিকে ৩২৮ শূন্যপদে নিয়োগের নির্দেশ আদালতের
মনে করা হয়, দোলের দিন রাধা আর তাঁর সখীরা দল বেঁধে আনন্দে রং খেলায় মেতে উঠেছিলেন। তখন ভগবান কৃষ্ণ তাঁর মুখটি সুগন্ধি ফুলের কুড়ির রঙ দিয়ে গন্ধযুক্ত করলেন। সেদিনই কৃষ্ণ রাধার প্রতি তাঁর প্রেম নিবেদন করেছিলেন বলে মনে করা হয়। কথিত রয়েছে এই দিনেই রাধিকাকে ‘ফাগে’ (গুড়ো রং) রাঙিয়ে দিয়েছিলেন শ্রীকৃষ্ণ। শ্রীকৃষ্ণের জন্মভূমি হিসেবে পরিচিত মথুরা ও রাধার জন্মস্থান হিসেবে জগদ্বিখ্যাত বৃন্দাবনে ১৬ দিন ধরে এই দোল উৎসব পালিত হয়।
অন্যদিকে হোলি উৎসব হল ভগবান বিষ্ণুভক্ত প্রহ্লাদকে কেন্দ্র করে যিনি রাক্ষস রাজা হিরণাকশীপুর ধর্মপ্রাণ পুত্র। দৈত্যকুলের মধ্যে রাক্ষস রাজা হিরণ্যকশিপুর পুত্র প্রহ্লাদ ছিলেন পরম বিষ্ণুভক্ত। ছেলের এই বিষ্ণু ভক্তি দেখে পিতা হিরণ্যকশিপু ছেলেকে বধ করার চেষ্টা করেন। এই কাজে হিরণ্যকশিপুকে সাহায্য করেছিলেন তার বোন হোলিকা। প্রহ্লাদকে হত্যা করার জন্য হিরণ্যকশিপুর বোন হোলিকা প্রহ্লাদকে আগুনে পুড়িয়ে মারার প্রচেষ্টা করেন। সেই উদ্দেশে প্রহল্লাদকে নিয়ে আগুনে ঝাঁপ দেন কাশ্যপ কন্যা। তবে বিষ্ণুর কৃপায় আগুন প্রহ্লাদকে স্পর্শ করতে না পারলেও সেই আগুনে পুড়ে মারা যান হোলিকা। এরপর থেকেই অশুভের উপরে শুভ শক্তির জয় উদযাপনের জন্য সারা বিশ্বে এই হোলি পালিত হয়। বাঙালি তো বটেই অবাঙালিরাও হোলি উৎসব পালনের সময় নেড়া পুড়িয়ে রঙের উৎসবের সূচনা করে। দোলের আগেও একই রকমভাবে ন্যাড়াপোড়ার আয়োজন করা হয়। বলা হয়, ওই অগ্নিস্তূপে সমস্ত অশুভর আহুতি দেওয়া হয়।