কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: করোনা নিয়ে প্রতিদিনই মন কি বাত শোনাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু তিনি যতই বড় বড় কথা বলুক না কেন বিজেপি শাসিত তিনটি রাজ্যই রয়েছে দেশের করোনা সংক্রমণের শীর্ষে। প্রথম বিহার, দ্বিতীয় উত্তর প্রদেশ এবং তৃতীয় মধ্যপ্রদেশ। সম্প্রতি আইসিএমআর প্রকাশিত রিপোর্টে এমন তথ্যই উঠে এসেছে।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, করোনা সংক্রমণের হারে প্রথম বিহার। যেখানে ৭৫ শতাংশের ওপরে সংক্রমণ ছড়িয়েছে। তারপর দ্বিতীয় স্থানে যোগী রাজ্য। সেখানেও সংক্রমণের প্রসার ৭১ শতাংশ। এবং তৃতীয় স্থানে রয়েছে শিবরাজ সিং চৌহানের মধ্যপ্রদেশ। ভারতের মধ্যভাগের এই রাজ্যে সব থেকে দ্রুত বেগে ছড়িয়েছে সংক্রমণ। যার হার ৭৯ শতাংশ। পঞ্চম স্থানে রয়েছে প্রধানমন্ত্রী মোদির নিজের রাজ্য গুজরাট। ৭৫.৩ শতাংশ হারে সংক্রমণ ছড়িয়েছে বিজেপি শাসিত ভারতের পশ্চিমের রাজ্যটিতে।
আরও পড়ুন: সিবিআই তদন্তকে সন্দেহ করা অযৌক্তিক, উন্নাও কান্ডে সাফ জবাব আদালতের
রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, ৯৪৭ লক্ষ টি সংক্রমনের ঘটনা সামনে এসেছে বিহারে। উত্তরপ্রদেশে ১৬৮৯ টি এবং মধ্যপ্রদেশে ৬৭৪ টি ঘটনা সামনে এসেছে। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে ৬০৭ টি ঘটনা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ রয়েছে ষষ্ঠ স্থানে। বিহার, উত্তরপ্রদেশ ও মধ্যপ্রদেশের এই হার ছাপিয়ে গিয়েছে গোটা দেশের গড় হারকে।
‘আন্ডার কাউন্টিং ফ্যাক্টর’ এর হিসেবেও যথারীতি প্রথম তিন রাজ্যেই বিজেপি শাসিত। নীতীশ কুমারের বিহার প্রথম স্থানে রয়েছে। উল্লেখ্য, বিহারে নীতীশ কুমারের জেডিইউর সঙ্গে জোটে রয়েছে বিজেপি। তারপর যোগী রাজ্য ও শিবরাজ সিং চৌহানের মধ্য প্রদেশ রয়েছে দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে।
এই রাজ্যগুলি ছাড়াও পশ্চিমবঙ্গ, গুজরাট, মহারাষ্ট্র, দিল্লি, কর্ণাটক, তামিলনাড়ুর মতো একাধিক রাজ্যেও করোনার ব্যাপক সংক্রমণ চোখে পড়ে।
আরও পড়ুন: টানা চারদিন বাড়ল অ্যাকটিভ কেস, কোভিডের তৃতীয় ঢেউ নিয়ে শঙ্কা
করোনার সংক্রমণ রুখতে কোনওরকম প্রশাসনিক তৎপরতা দেখাচ্ছেনা যোগী সরকার। এমনই অভিযোগ ওঠে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে। স্বাস্থ্য পরিকাঠামো বেহাল দশা নিয়েও যোগীকে কাঠগড়ায় তোলে বিরোধীরা। গঙ্গা নদীতে মৃতদেহ ভাসার দৃশ্য দেখে চোখের জল ফেলেছিল দেশবাসী। গঙ্গার তীরে মৃতদেহের স্তুপ নিয়ে তীব্র সমালোচনা হলেও টুঁ শব্দটিও করেননি যোগী আদিত্যনাথ। যেন এক প্রকার ফুৎকারে উড়িয়ে দিয়েছিলেন সব অভিযোগ।
অন্যদিকে, পশ্চিমবঙ্গ, রাজস্থান, ঝাড়খন্ড, মহারাষ্ট্র কিংবা তামিলনাডুর মত রাজ্যগুলিতে ক্ষমতায় নেই বিজেপি। বাংলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হোক কিংবা তামিলনাড়ুর স্তালিন সরকার। করোনা আবহে সেই সমস্ত রাজ্য সরকার গুলিকে সমালোচনায় বিদ্ধ করতে কিন্তু পিছুপা হয়নি বিজেপি। কথায় আছে, অন্যের সমালোচনা করার আগে নিজের ঘরটাও দেখা উচিত। সেই কথাটাই বেমালুম ভুলে গিয়েছিল গেরুয়া শিবির।
এবার আইসিএমআর এর রিপোর্টটি প্রকাশ্যে আসায় কিছুটা হলেও মুখ পুড়ল মোদি-অমিত শাহের। এমনটাই মনে করছে বিশেষজ্ঞমহল।