কলকাতা টিভি ওয়েবডেস্ক: উন্নাও ধর্ষণ কাণ্ডে নয়া মোড়। ধর্ষিতার গাড়ি দুর্ঘটনায় সিবিআই তদন্তকে সন্দেহ করার কোনও কারণ নেই বলে জানাল দিল্লির এক আদালত। শনিবার বিচারক ধর্মের শর্মা এই মামলার শুনানিতে বলেন, সিবিআইয়ের তদন্তের গতি নিয়ে যে প্রশ্ন উঠছিল তা নিয়ে সন্দেহ করার কোনও কারণ নেই।
উল্লেখ্য ২০১৯ সালে উন্নাও কান্ডে ধর্ষিতা যখন দিল্লির এইমস থেকে ছাড়া পেয়ে নিজের বাড়ি উন্নাওতে ফিরছিলেন তখন রায়বেরেলির কাছে গিয়ে ট্রাকের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় তাদের গাড়ির। অভিযুক্ত বিজেপি বিধায়ক কুলদীপ সেঙ্গার তাঁকে হত্যা করার জন্যই এই চক্রান্ত করেছিলেন বলে অভিযোগ করেছিল ধর্ষিতা এবং তাঁর কাকা । তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই কেও তাঁরা জানিয়েছিল এই কথা। কিন্তু এই বিষয় যখন অভিযুক্ত কুলদীপ সেঙ্গার কে প্রশ্ন করা হলে তা তিনি অস্বীকার করেন। এমনকি ঘটনায় ধৃত ট্রাক ড্রাইভার এবং ট্রাকের মালিক কেউ জেরা করে সিবিআই। সেই জেরাতেও কুলদীপ সেঙ্গারের সঙ্গে কোনও ওই ঘটনার কোনও সম্পর্ক পাওয়া যায়নি। অর্থাৎ ঘটনাটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত নয় বলেই সিবিআইকে জানায় ধৃত ট্রাক ড্রাইভার এবং মালিক। ২০১৯ সালে উন্নয়নের বিজেপি বিধায়ক কুলদীপ সেঙ্গার তার দলবলের ধর্ষণের শিকার হন বছর ২৩ এর এক যুবতী। চিকিৎসার জন্য তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় দিল্লিতে। তারপর এইমস থেকে ছাড়া পাওয়ার পর পরিবারের লোকেদের নিয়ে ফিরছিলেন ধর্ষিতা যুবতী। অভিযোগ সেই সময়ে রায়বেরেলি কাছে এক ট্রাক দুর্ঘটনার কবলে পড়েন তাঁরা। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় যুবতীর দুই আত্মীয়ের। আহত হন ধর্ষিতা যুবতীর আইনজীবীও। এই ঘটনায় কুলদীপ সিঙ্গারের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন যুবতীর কাকা।
আরও পড়ুন: জাতীয় সড়কে IED উদ্ধার কাণ্ডে গ্রেফতার লস্কর জঙ্গি
সেই অভিযোগের ভিত্তিতে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। গত দুই বছর আগে এই তদন্তের নির্দেশ দিলেও বিভিন্ন কারণে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তদন্ত সেরে উঠতে পারেনি সিবিআই। কেনই বা তদন্তে এত দেরি হচ্ছে তা জানতে চেয়ে একাধিকবার সিবিআইকে প্রশ্ন করেছে সুপ্রিম কোর্ট। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল সুপ্রিমকোর্টের কাজের ধরন এবং সদিচ্ছা নিয়েও। যোগী প্রশাসনের বিধায়কের বিরুদ্ধে তদন্ত করতে কতটা সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে সিবিআইকে প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়েও। যদিও সেই সমস্ত তত্ত্বকে খারিজ করে দিয়ে শনিবার এমনটাই জানাল দিল্লির সেশন কোর্ট।
আরও পড়ুন: জাতীয় সড়কে IED উদ্ধার কাণ্ডে গ্রেফতার লস্কর জঙ্গি
উল্লেখ্য, যুবতী ধর্ষণের ও খুনের অভিযোগে কুলদীপ সেঙ্গারকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় দিল্লির আদালত। ২০১৭ সালে এক যুবতীকে ধর্ষণ ও পরবর্তীকালে তাঁকে জীবন্ত জ্বালিয়ে মারার অভিযোগ উঠেছিল তার বিরুদ্ধে। উত্তরপ্রদেশের উন্নাও কান্ড নিয়ে তখন যথেষ্টই শোরগোল পড়ে ছিল দেশের রাজনীতিতে। ধর্ষিতা যুবতীর পক্ষে দেশজুড়ে যখন আওয়াজ উঠছিল সেসময় উন্নাওতে কুলদীপ সিংগারের পক্ষে মিছিল বার করে বিজেপি। যা নিয়ে যথেষ্টই জলঘোলা হয়েছিল জাতীয় রাজনীতিকে। মামলার জল গড়ায় সুপ্রিমকোর্ট পর্যন্ত। তারই প্রেক্ষিতে গোটা ঘটনায় পূর্ণাঙ্গ তদন্তের জন্য সিবিআইকে নির্দেশ দেয় সর্বোচ্চ আদালত।