নয়াদিল্লি: ভারত জোড়ো (Bharat Jodo Yatra) প্রায় শেষ পর্বে। রাজনীতিতে আসার পর রাহুল গান্ধীর (Rahul Gandhi) সবথেকে বড় কৃতিত্ব হিসেবে এই পদযাত্রাকে মনে করছেন অনেকেই। অভূতপূর্ব সাফল্য, অবিস্মরণীয় জনতার সাড়া, উৎসাহ-উদ্দীপনায় ভরপুর ভারত জোড়ো যাত্রার সাফল্যে ঈর্ষাণ্বিত বিজেপিও (BJP)। তা সত্ত্বেও প্রশ্ন উঠেছে, ভারত জোড়ো যাত্রার এই জনরব ভোটের মেশিনে প্রভাব ফেলবে কি? বিজেপিকে সরিয়ে কংগ্রেস (Congress) কি ক্ষমতায় ফিরতে পারবে? ৩৭ শতাংশ মানুষ এর উত্তরে ‘না’ বলেছেন।
‘মুড অফ দি নেশন’এর জনমত সমীক্ষা বলছে, ৩৭ শতাংশ মানুষ বিশ্বাস করেন রাহুল গান্ধীর সাড়ে তিন হাজার পদযাত্রার নজিরবিহীন সাফল্যেও তা ভোট মেশিনে গড়াবে না। গত সেপ্টেম্বরে কন্যাকুমারী থেকে শুরু করে বর্তমানে কাশ্মীরে থাকা রাহুলের ভারত জোড়ো যাত্রা প্রায় শেষ পর্যায়ে। কিন্তু, এই সাড়ে তিন হাজার কিমি পথ হেঁটে কংগ্রেস কিংবা রাহুলের কোনও লাভ হল কী?
আরও পড়ুন: BBC Documentary Ban: নিষেধাজ্ঞাকে থোড়াই কেয়ার, বিবিসি-র তথ্যচিত্রের স্ক্রিনিং করল কেরল কংগ্রেস
মুড অফ দি নেশনের জানুয়ারি পর্বে ৩৭ শতাংশ জনমত বলছে, যাত্রা আলোড়ন ফেলে দিলেও ভোটে জিততে কংগ্রেসকে কোনও সাহায্য করবে না। ইন্ডিয়া টুডে-সি ভোটার সমীক্ষায় ১ লক্ষ ৪০ হাজার ৯১৭ জনের মত সংগ্রহ করা হয়েছে। অতিরিক্ত ১ লক্ষ ৫ হাজার ৮ জনের সাক্ষাৎকার নিয়েছে সি ভোটার। সেগুলি বিশ্লেষণ করে এই সিদ্ধান্তে এসেছে সমীক্ষার ফল। সমীক্ষায় প্রকাশ, ২৯ শতাংশ মানুষ বিশ্বাস করেন, পদযাত্রা জনসম্পর্ক গড়ে তোলার পক্ষে আদর্শ ভূমিকা নিয়েছে। ১৩ শতাংশের মতে, রাহুল গান্ধীর পুনরুজ্জীবনের পক্ষে এই কর্মসূচি কাজে দিয়েছে। ৯ শতাংশের দাবি, ভারত জোড়ো যাত্রা করে কংগ্রেসের আখেরে কোনও লাভ হয়নি।
সেরা বিরোধী দলনেতা কে?
সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, তৃণমূল কংগ্রেস (TMC) নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) এবং আম আদমি পার্টির (AAP) অরবিন্দ কেজরিওয়াল (Arvind Kejriwal) জাতীয় নেতা হিসেবে রাহুল গান্ধীর চেয়ে ভালো। ২৪ শতাংশ মনে করেন, কেজরিওয়াল বিরোধী দলনেতা হিসেবে সেরা। অন্যদিকে ২০ শতাংশের বিশ্বাস মমতা এই পদে সবথেকে উপযুক্ত। রাহুল গান্ধীর পক্ষে রয়েছে মাত্র ১৩ শতাংশ জনমত।
বিরোধী জোট কি মোদিকে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারবে?
গতবছর জানুয়ারিতে ৪৯ শতাংশ মানুষ বিশ্বাস করতেন বিরোধীরা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে (PM Narendra Modi) চ্যালেঞ্জ জানাতে পারবে। কিন্তু একবছরের মধ্যে সেই চিত্রটি বদলে গিয়েছে। এবছর জানুয়ারির সমীক্ষা মতে, সেটা কমে ৩৯ শতাংশ হয়ে গিয়েছে।
আজ ভোট হলে কে জিতবে?
সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, এই মুহূর্তে ভোট হলে ৬৭ শতাংশ মানুষ বিজেপি সরকারের উপর সন্তুষ্ট। এনডিএ সরকার আর্থিক সমস্যা ও চীনের হুমকির উপর নিয়ন্ত্রণ কবজা করায় জনমত সরকারের পক্ষে গিয়েছে। লোকসভা ভোটের আর বছরখানেক অপেক্ষা। তার আগে এই সমীক্ষা মোদি সরকারকে অনেকটাই এগিয়ে রাখবে। সেই হিসেবে এই মুহূর্তে এই মুহূর্তে ভোট বিজেপি প্রায় ২৮৪টি আসন পাবে বলে সমীক্ষায় বলা হয়েছে। কংগ্রেস পেতে পারে ১৯১টি আসন। প্রধানমন্ত্রী মোদির কার্যদক্ষতার উপর ৭২ শতাংশ মানুষ খুশি ব্যক্ত করেছেন। অন্যদিকে ৬৭ শতাংশ মানুষ খুশি এনডিএর কাজে।
ফলে মুদ্রাস্ফীতি বা দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি হোক, কোভিড কিংবা বহিঃশত্রুর হুমকি, গত তিন বছরে মোদি প্রতিষ্ঠান বিরোধী জনমতকে নিজের থালায় টেনে নিতে সক্ষম হয়েছেন। প্রসঙ্গত, জনপ্রিয়তার নিরিখে গত অগাস্ট মাস থেকেই যা ১১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
এডিএ-র সাফল্য-ব্যর্থতা কী?
২০ শতাংশ মানুষ মনে করেন কোভিড নিয়ন্ত্রণে সরকার যা করেছে, তা উল্লেখযোগ্য। ৩৭০ ধারা বিলুপ্তির সাফল্যকে তুলে ধরেছেন ১৪ শতাংশ মানুষ। আর মাত্র ১২ শতাংশের ধারণা রামমন্দির (Ram Mandir) গঠন সরকারের সর্বোত্তম সাফল্য। সরকারের সবথেকে বড় ব্যর্থতা কী, এই প্রশ্নের জবাবে ২৫ শতাংশ মানুষের জবাব ছিল, বাজারদর। আর ১৭ শতাংশ উত্তর দিয়েছেন বেকারি রোধ করতে পারেনি সরকার। ৮ শতাংশের মতে, কোভিড নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ কেন্দ্র।
