কলকাতা: গোটা রাজ্য বোমা তৈরির হাবে পরিণত হয়েছে বলে দাবি করলেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। শনিবার ইকো পার্কে প্রাতঃভ্রমণের পর বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ বলেন, পশ্চিমবঙ্গকে আমি আফগানিস্তান বললে ববি হাকিমের কষ্ট হয়। আফগানিস্তান কেন, সিরিয়া হয়ে গিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। প্রতিটি ব্লকে ব্লকে বোমার (Bome) কারখানা তৈরি হচ্ছে। সেই বোমা সারা বাংলায় ছড়িয়ে পড়ছে। পার্শ্ববর্তী রাজ্যগুলিতেও পশ্চিমবঙ্গ (West Bengal) থেকে বোমা সাপ্লাই হচ্ছে।
দিলীপ ঘোষ যখন নিউটাউনে এই অভিযোগ করেন তার কয়েক ঘণ্টার পরেই মেদিনীপুরের এগরায় খাদিকুল গ্রামে বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নতমস্তককে এলাকাবাসীর কাছে ক্ষমা চান। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এই ঘটনায় আমরা খুবই দুঃখিত। এগরার ঘটনায় আমাদের চোখ খুলে দিয়েছে। অবৈধ বাজি কারখানার বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করবে প্রশাসন। মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, শব্দবাজি কারখানা অবৈধ। শব্দবাজি না করে সবুজ বাজি তৈরির দিকে নজর দিতে হবে। একইসঙ্গে বেআইনি বাজি কারখানা রুখতে সাধারাণ মানুষকেও এগিয়ে আসতে বলেন মুখ্যমন্ত্রী।
প্রসঙ্গত, বেশ কয়েকদিন ধরে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে একের পর এক বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। বোমা বারুদের গন্ধে ঘুম ভাঙছে রাজ্যবাসীর। এগরার ভয়াবহ বিস্ফোরণের পরই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে রাজ্যের প্রশাসনের নাকের ডগায় কীভাবে গজিয়ে উঠল একের পর এক বেআইনি বাজি কারখানা গুলি। শুধু এগরা নয়, শিরোনামে উঠে এসেছে বজবজের চিংড়িপোতা, চম্পাহাটির বাজির কারখানা। এগরা, বজবজ, মালদহ বিস্ফোরণের পর টনক নড়ল পুলিশের। বেআইনি বাজি রুখতে বিভিন্ন জায়গা চলছে এই অভিযান। ঘটনার পরেই রাজ্য পুলিশকে ছয় দফা নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সমস্ত পুলিশ সুপার এবং কমিশনারকে। সমস্ত বেআইনি বাজি কারখানার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। আর এরপর থেকে অভিযান নামে পুলিশ। একাধিক বাজি দোকান, ব্যবসায়ীর জায়গাতে অভিযান চালানো হয়েছে। বাজেয়াপ্ত হয়েছে প্রায় ২ লক্ষ ৬২ হাজার কেজি বাজি।
প্রতিদিন রাজ্যের কোনও না কোনও জায়গা থেকে ধরা পড়ছে বিপুল পরিমাণে নিষিদ্ধ বাজি। আর এই অভিযানে নেমেছে হাওড়া জেলার পুলিশও। এদিন ফের বিপুল পরিমান বাজি উদ্ধার করা হয়েছে জগৎবল্লভপুরের পাতিয়াল মালপাড়া গ্রাম থেকে। এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে হানা দিয়ে পুলিশ প্রায় সাড়ে ১৬ হাজার কেজি বেআইনি বাজি উদ্ধার করে। তাঁর বাড়িতে অবৈধ শব্দ বাজি-সহ বিভিন্ন ধরনের বাজি মজুত রাখা ছিল।এখানে একটি জঙ্গলের মধ্যে থেকে এই বাজি উদ্ধার হয়। দক্ষিণেশ্বর থেকে বিপুল পরিমান বাজি তৈরির মশলা উদ্ধার করা হল। প্রায় ৫০০ কেজিরও বেশি বাজি তৈরির মশলা উদ্ধার করা হয়।বারাসতে টালিখোলা আড়িববাড়ি এলাকা থেকে ২৫০ কেজি অবৈধ বাজি উদ্ধার করে বারাসত জেলা পুলিশ।
পুলিশি অভিযান শুরু হতেই আন্দোলনের পথে আতশবাজি ব্যবসায়ীরা। অভিযানের নামে হয়রানি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ বাজি ব্যবসায়ীদের। কাঁচামাল থেকে শুরু করে বিভিন্ন জিনিস নষ্ট করা হচ্ছে। এমনকি ব্যাপক ধরপাকড় করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ একাংশের ব্যবসায়ীদের। এই অবস্থায় আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে।