কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: বেলা যত বাড়ছে, ততই দক্ষিণবঙ্গের পুরভোটে উত্তেজনার পারদ চড়ছে। অভিযোগের পাহাড়ের মধ্যেই রেয়াত করা হচ্ছে না মহিলাদেরও।
রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের ৩৮৯ নম্বর বুথে নির্দল প্রার্থী মহুয়া দাসের শাড়ি খুলে নেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। বহিরাগতরা ঢুকে ভোট লুঠ করে, বাধা দিতে গেলে তাঁর উপর হামলা হয় বলে অভিযোগ। ঘটনার খবর পেয়ে সংবাদমাধ্যমের প্রতিদনিধিরা এসে ছবি তুলতে গেলে তাঁদেরও মারধর করা হয়। ক্যামেরা কেড়ে নেওয়া হয়। গোটা ঘটনাটি পুলিসের সামনেই ঘটলেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলেই অভিযোগ। এই ওয়ার্ডে সব জায়গাতেই একইভাবে ভোট লুটের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে।
বর্ধমানেরক গুসকরার শান্তিপুর গোকুলসুন্দরী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৬ ও ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বুথে ব্যাপক অশান্তি বাধে। পুলিসকে লক্ষ্য করে জনতা ইট-পাটকেল ছোড়ে। তখন জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিস লাঠি চালায়। কিছু সময়ের জন্য এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা দেখা দেয়।
আরও পড়ুন: WB Municipal Election: নাম জানতে চাওয়ায় কলকাতা টিভির প্রতিনিধিকে ধাক্কা পুরুষ-মহিলার
মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর পুরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম প্রার্থীকে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। রাজপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১২১ নম্বর বুথের ঘটনা। প্রার্থীকে জঙ্গিপুর হাসপাতালে পাঠানো হয় চিকিৎসার উদ্দেশ্যে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় বিশাল পুলিসবাহিনী। ১২১ নম্বর বুথেরই সিপিএম প্রার্থীর এজেন্টকে অপহরণ করে নিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। অভিযোগের তির তৃণমূলের দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। এজেন্টকে তুলে নিয়ে যাওয়ার সময় বুথ চত্বরে কর্তব্যরত পুলিস নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে বলে অভিযোগ সিপিএম প্রার্থী জিয়াবুল শেখের। এই ঘটনাতেও বেশ কিছুক্ষণ উত্তেজনা তৈরি হয়। এই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে বেধড়ক মারধর করা হয় সিপিএম প্রার্থীকে।
আরও পড়ুন: West Bengal Civic Polls: বুথ জ্যাম, ছাপ্পা ভোটের বিক্ষিপ্ত অভিযোগ উত্তরবঙ্গের নানা কেন্দ্রে
বহরমপুর পুরসভার ১৩ নং ওয়ার্ডের মহাকালী পাঠশালার ৯১ ও ৯২ নং বুথে বিজেপি প্রার্থী অনির্বাণ বিশ্বাসকে মারধর করে রক্তাক্ত করে শাসকদল। অভিযোগের তির তৃণমূল কংগ্রেসের দিকে। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে তারা।
বসিরহাট পুরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থীকে মারধর, ছাপ্পা ভোটের অভিযোগে পুলিস এলেও তারা কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। এর প্রতিবাদে টায়ার জ্বালিয়ে রাস্তা অবরোধ করেন বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা।
হাওড়ার উলুবেড়িয়া পুরসভার ২৩ নং ওয়ার্ডের ৩৯ নং বুথে সিপিএম প্রার্থী রেহানা সুলতানার বুথ অফিস ভাঙচুরের অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে। অন্যদিকে, বনগাঁ থানার সামনে অবরোধ সিপিএম প্রার্থীর। বনগাঁর ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম প্রার্থী শিপ্রা বাইন সহ ওয়ার্ডের সিপিএম এজেন্ট ভোট কেন্দ্র ছেড়ে এসে বনগাঁ থানার সামনে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করল। শিপ্রাদেবী বলেন, অবাধে ভোট লুট চলছে। ভোটের নামে প্রহসন চলছে। আমাদের ভোটকেন্দ্রে থেকে কি লাভ! তাই আমরা বনগাঁ থানার সামনে এসে অবরোধে বসে পড়েছি৷
এদিকে, ইভিএম ভাঙচুর করার অভিযোগে গ্রেফতার বিজেপি প্রার্থী সুরেশ সিকদার। হরিণঘাটা পুরসভার ২ নং ওয়ার্ডের ১৫৩ বুথের ঘটনা। এজেন্ট সেখানে বসতে দেওয়া হচ্ছিল না, এই নিয়ে তাঁর সঙ্গে বচসা হচ্ছিল। সেই সময় তিনি ইভিএম ছুড়ে ফেলে ভেঙে দেন বলে অভিযোগ। এরপর পুলিস তাঁকে গ্রেফতার করে। বেলায় সেখানে ফের নতুন করে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে ইভিএম দেওয়া হয়েছে এবং ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে।