হলদোয়ানি ও নয়াদিল্লি: রেলের জমিতে (Railway Land) বেদখলকারিদের উচ্ছেদ নিয়ে উত্তরাখণ্ড হাইকোর্টের (Uttarakhand High Court) নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) জানানো আবেদনের আজ শুনানির সম্ভাবনা। হলদোয়ানিতে (Haldwani) রেলের ২৯ একর জমিতে জবরদখলকারীদের উচ্ছেদের নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। তারপরই বিক্ষোভে ফেটে পড়েন এলাকার বাসিন্দারা। প্রায় ৪০০০ ঘরদোর ভেঙে ফেলার আশঙ্কায় এখন শীতের রাতে দিনরাত এক করে প্রতিবাদ দেখাচ্ছেন। তাঁরা সেখানে প্রতিবাদ, প্রার্থনা ও সরকারি অফিসারদের কাছে কাকুতি-মিনতি জানিয়ে যাচ্ছেন।
এছাড়াও ওই এলাকায় রয়েছে চারটি সরকারি স্কুল, ১১টি বেসরকারি স্কুল, ব্যাঙ্ক, ২টি জলাধার, ১০টি মসজিদ, চারটি মন্দির। প্রচুর দোকানপাট, বাজারঘাট তো রয়েছেই। এলাকার মানুষের দাবি, কয়েক দশক ধরে তাঁরা এখানে বসবাস করছেন। দীর্ঘ মামলার পর গত ২০ ডিসেম্বর হাইকোর্ট রেলের জমি ফাঁকা করার নির্দেশ দেয়। তারপরই জেলা প্রশাসন সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দিয়ে এলাকার মানুষকে বাড়িঘর খালি করে দেওয়ার নোটিস দেয়। এর জন্য ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে বাসিন্দাদের।
আরও পড়ুন: Amit Shah: আজ ত্রিপুরায় ভোটের ঢাকে কাঠি অমিত শাহর, বিজেপির রথযাত্রার সূচনা
হলদোয়ানি স্টেশনের লাগোয়া ওই ২৯ একর রেলের জমিতে বছরের পর বছর ধরে বসবাস করছেন কয়েক হাজার মানুষ। গফুর বস্তি, ঢোলক বস্তি এবং ইন্দিরা নগর নামে বস্তি গড়ে ওঠে বাঁবুলপুরা এলাকায়। সরকারি কর্তারা এখনও মানুষকে সরে যাওয়ার জন্য আবেদন জানিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু স্থানীয়রা একচুলও সরতে নারাজ। প্রতিবাদে মোমবাতি ধরনা, অবস্থান এবং প্রার্থনা চলছে এলাকায়।
এর প্রতিবাদে সমাজকর্মী তথা আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ (Prashant Bhushan) সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন। আজ, বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় এবং বিচারপতি এসএ নাজির ও পিএস নরসিমার (Chief Justice DY Chandrachud and Justices SA Nazeer and PS Narasimha) বেঞ্চে শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে। বিজেপি সরকারকে দুষে সমাজকর্মী ও রাজনৈতিক দলগুলিও মাঠে নেমে পড়েছে। তাদের অভিযোগ, ওই এলাকার বাসিন্দাদের অধিকাংশই মুসলিম। তাই বিজেপি অভিসন্ধিমূলক চাল চালছে।
রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা প্রবীণ কংগ্রেস নেতা হরিশ রাওয়াত বলেন, উত্তরাখণ্ড একটি আধ্যাত্মিক রাজ্য। এহেন রাজ্যে যদি প্রায় ৫০ হাজার মানুষকে রাতারাতি বেঘর করে দেওয়া হয়, তবে তা হবে অত্যন্ত খারাপ। ওই লোকদের মধ্যে রয়েছে শিশু-মহিলা, বৃদ্ধ, প্রসূতি, মুমুর্ষু রোগীরাও। এর জবাবে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি দায়সারা গোছের জবাব দিয়ে বলেছেন, সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত সরকার মাথা পেতে নেবে।