মুম্বই: পাকিস্তান-ভিত্তিক সন্ত্রাসবাদীদের (Pakistan-Based Terrorists) কালো তালিকাভুক্ত (Black List) করা নিয়ে বিরোধিতা প্রসঙ্গে চিনকে (China) সতর্ক করে দিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র (United States of America)। আর তা করা হল ভারতের মাটি থেকেই। মুম্বইতে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের সন্ত্রাস-দমন কমিটির বিশেষ বৈঠকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিদেশ সচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন (US Secretary of State Antony Blinken) বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, “সমস্ত প্রাসঙ্গিক পক্ষের এই প্রস্তাবে সমর্থন দেওয়া উচিত এবং কারওরই এই পথে বাধা হয়ে দাঁড়ানো উচিত নয়।” ব্লিঙ্কেনের বক্তব্য হল, আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদীদের নিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জ যে তালিকা তৈরি করেছে ১২৬৭ জনের, সেই তালিকার অধীনে আতঙ্কবাদীদের মনোনীত করার প্রস্তাবে সকল সদস্য দেশের সমর্থন দেওয়া উচিত।
১৯৯৯ সালে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদ (United Nation Security Council) এই বিষয়টি দেখার জন্য কমিটি গঠন করেছে। সেই কমিটিই ১২৬৭ জনের এই তালিকার বিষয়টি দেখভাল করে। কমিটি রাষ্ট্রপুঞ্জের যে কোনও সদস্য রাষ্ট্রকে আল কায়দা (Al Qaeda) কিংবা আইসিস (ISIS)-এর সঙ্গে যে কোনও গোষ্ঠীকে সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী হিসেবে তালিকায় অনুর্ভুক্ত করার অনুমতি দেয়।
আরও পড়ুন: Jammu & Kashmir: গ্রাম ছাড়লেন সোপিয়ানের শেষ কাশ্মীরি পণ্ডিত
মার্কিন বিদেশ সচিব মুম্বইতে যে বক্তব্য রেখেছেন, তা সরাসরি চিনের উদ্দেশেই করা হয়েছে বলে বক্তব্য আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ মহলের। কারণ, পাকিস্তান-ভিত্তিক জঙ্গি লস্কর-ই-তৈবা প্রধান হাফিজ সঈদকে কালো তালিকাভুক্ত করার প্রসঙ্গে ভারত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উভয়েই প্রস্তাব দিয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জের সামনে। কিন্তু চিন তার বিরোধিতা করেছে। সেই পরিপ্রেক্ষিতেই মার্কিন বিদেশ সচিবের এই মন্তব্য।
১৪ বছর আগে মুম্বইয়ে ভয়াবহ সন্ত্রাসবাদী হামলার কথা মনে করে ব্লিঙ্কেন বলেন, “২০০৮ সালের নভেম্বরে যে সন্ত্রাসবাদী হামলা হয়েছিল, মৃতদের মধ্যে ছয়জন মার্কিন নাগরিক ছিলেন।” মার্কিন বিদেশ সচিব আরও বলেন, “ভারত এবং যে সমস্ত দেশ সেদিন তাদের নাগরিকদের হারিয়েছে, আমরা তাদের সঙ্গে একজোট হয়ে দাঁড়াচ্ছি। কিন্তু আমাদের শোকপ্রকাশের চেয়ে আরও বড় কিছু করতে হবে। মুম্বই হামলার অপরাধী এবং তাদের মাস্টারমাইন্ডদের বিচারের আওতায় আনতে হবে, পীড়িত ও সারা বিশ্বের মানুষদের প্রতি আমাদের দায়িত্ব রয়েছে। এই জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ১৪ বছর ধরে ভারত এবং অন্যান্য অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করছে। কারণ এই সমস্ত হামলার চক্রীরা যদি শাস্তি না পায়, তাহলে সমস্ত জায়গায় সন্ত্রাসবাদীদের কাছে এই বার্তাই যাবে যে তাদের এই ধরণের ঘৃণ্য কাজকে মেনে নেওয়া হবে।”