নয়াদিল্লি: কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করলেন আন্দোলনকারী কুস্তিগিররা। দেখা করার পর কুস্তিগির বজরং পুনিয়া জানান, তাঁরা ফেডারেশন সভাপতি তথা বিজেপি এমপি ব্রিজভূষণ শরণ সিংয়ের বিরুদ্ধে নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেছেন। শনিবার বেশি রাতে অমিত শাহের দিল্লির বাসভবনে গিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলেন কুস্তিগিররা। রাত ১১টার সময় শুরু হওয়া বৈঠক চলে প্রায় ঘণ্টাখানেক। সেখানে পুনিয়া ছাড়াও ছিলেন সাক্ষী মালিক, সঙ্গীতা ফোগট এবং সত্যার্থ কাদিয়াঁ।
এই বৈঠককে কটাক্ষ করে আজ, সোমবার সকালে একটি টুইট করেছেন কংগ্রেস নেতা কপিল সিব্বাল। তাঁর ভাষায়, অমিত শাহ কুস্তিগিরদের সঙ্গে দেখা করলেন। সমাধানের পথ খুঁজতে সরকার কুস্তি করছে। আমার অনুমান, কাউকে গ্রেফতার করা হবে না। দায়সারা গোছের চার্জশিট দেওয়া হবে। ব্রিজভূষণকে জামিন দিয়ে দেওয়া হবে। এরপর ওরা বলবে বিষয়টি বিচারাধীন।
আরও পড়ুন: Heat Wave | আগামী ৫ দিন চলবে তাপপ্রবাহ, দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির পূর্বাভাস, জেনে নিন কোন কোন জেলায়
প্রতিবাদী কুস্তিগিরদের শাহ আশ্বস্ত করে বলেন, আইনের চোখে সকলেই সমান। আইনকে আইনের পথে চলতে দিন। সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পাঁচদিনের যে চরম সময়সীমা দিয়েছিলেন কুস্তিগিররা তা শেষ হয় গত সোমবার। তারপর থেকে তাঁরা অমিত শাহের সঙ্গে একটা বৈঠকের আর্জি জানিয়েছিলেন। তাঁদের অভিযোগকে সরকার উপেক্ষা করছে। বৈঠকের শেষে সাক্ষীর স্বামী সত্যার্থ বলেন, বৈঠকে কোনও সমাধানসূত্র মেলেনি।
তিনি আরও জানান, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছ থেকে যে ধরনের প্রত্যুত্তর আশা করা হয়েছিল, তা তিনি দিতে পারেননি। তাঁরা অবিলম্বে ব্রিজভূষণের গ্রেফতারির দাবি জানিয়েছিলেন। কিন্তু অমিত শাহ তার সদুত্তর না দিতে পারায় তাঁরা বৈঠক থেকে বেরিয়ে আসেন। ভবিষ্যতে আমাদের আন্দোলন কোন পথে যাবে, তা ঠিক করছি আমরা। তবে কোনওমতেই পিছু হটবেন না বলে জানিয়ে দেন তিনি। অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করার আগে কুস্তিগিররা কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুরের সঙ্গেও দেখা করেন। ঠাকুর তাঁদের অভিযোগের ভিত্তিতে স্বচ্ছ-নিরপেক্ষ তদন্তের আশ্বাস দেন।
এর আগে অলিম্পিক্স এবং বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে জেতা পদক গঙ্গায় বিসর্জন দিতে হরিদ্বার এসেছিলেন সাক্ষী মালিক (Sakshi Malik), বিনেশ ফোগট (Vinesh Phogat), বজরং পুনিয়া (Bajrang Punia)। হাজির হয়েছিলেন হর কি পৌরি ঘাটে। তাঁদের আটকান কৃষক নেতা নরেশ টিকায়েত (Naresh Tikait) এবং অন্যরা। কেন্দ্রীয় সরকারকে পাঁচদিনের সময়সীমা দেন ভারতের কৃতী কুস্তিগিররা। এর মধ্যে বিজেপি সাংসদ তথা ভারতের কুস্তি ফেডারেশনের (WFI) সভাপতি ব্রিজভূষণ শরণ সিংকে (Brij Bhushan Sharan Singh) গ্রেফতার এবং পদ থেকে বহিষ্কার না করা হলে তাঁরা আবার হরিদ্বারে আসবেন বলে জানিয়ে দিয়েছেন।
ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার অভিযোগ এনেছেন ভারতের মহিলা কুস্তিগিররা। তাঁর গ্রেফতার এবং কুস্তি ফেডারেশনের সভাপতি পদ থেকে বহিষ্কারের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চলছে। দিল্লির যন্তরমন্তরে অবস্থান বিক্ষোভ চালাচ্ছেন বিশ্ব মঞ্চে ভারতকে সম্মান এনে দেওয়া অ্যাথলিটরা। বহু সাধ্যসাধনার পর বিজেপি সাংসদের বিরুদ্ধে পকসো আইনে মামলা দায়ের করেছে দিল্লি পুলিশ। কিন্তু বহাল তবিয়তে আছেন ব্রিজভূষণ, গ্রেফতার তো দূর অস্ত, কিছুদিন আগে পকসো আইনকেই বদলে দেওয়ার হুমকি দেন তিনি।