ভোট পরবর্তী হিংসায় উত্তপ্ত পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ভগবানপুর ২ নম্বর ব্লক৷ ভোটের আগে থেকেই অর্জুননগর, বরোজ, জুখিয়া, বাসুদেববেড়িয়া এবং ইটাবেড়িয়া পঞ্চায়েতের বিভিন্ন এলাকায় বিজেপির সন্ত্রাসে তৃণমূল কর্মীরা ঘরছাড়া৷ বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ মাইতির নেতৃত্বে চলতে থাকা লাগাতার হিংসার শিকার তৃণমূল কর্মীরা৷ অত্যাচারে গুরুতর জখম হয়েছে পনেরো বছরের এক কিশোর৷ বিজেপির তরফে এই হিংসার ছবি দেখিয়েই দাবি করা হয়েছিল, এরা নাকি বিজেপির কর্মী৷ তৃণমূল নাকি তাঁদের ওপর অত্যাচার চালিয়েছেন৷ ঘটনা সামনে আসতেই বোঝা গিয়েছে, পুরোটাই উল্টো৷ জানালেন, তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ৷ তাঁরা শান্তি চান৷ কলকাতা টিভিকে জানালেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলার তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক তরুণকুমার জানা৷
কোথায় গণতন্ত্রের রক্ষাকবচ? সভ্যতার এ হেন সঙ্কট কে-ই বা দেখেছে আগে৷ সঙ্কটের শুরু ২০১৪ থেকে৷ কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসে বিজেপি৷ শুরু হয় গণতন্ত্রের নতিস্বীকার আর হিংসার বাড়বাড়ন্ত৷ না৷ বাংলায় ক্ষমতায় আসতে পারেনি বিজেপি৷ ভরাডুবিই হয়েছে৷ কিন্তু হারের পর মার হয়েছে লাগামছাড়া৷ আর মারমুখী বিজেপির সন্ত্রাসের বাড়বাড়ন্ত সবচেয়ে বেশি চোখে পড়ছে পূর্ব মেদিনীপুরে৷ শুভেন্দু অধিকারীর নির্বাচনী কেন্দ্রে, তাঁরই অনুরাগীরা বর্বরতার শেষসীমায় পৌঁছে গিয়েছেন অনায়াসেই৷ ভোট পরবর্তী হিংসার নামে কত গলাই না ফাটিয়েছেন শুভেন্দু৷ অথচ, বিধানসভা ভোটের পর থেকে এই পূর্ব মেদিনীপুরেই বিজেপির সন্ত্রাস লাগামছাড়া৷ ভগবানপুরে ঘরে ফিরতে পারছেন না মানুষ৷ ভোট পরবর্তী হিংসায় উত্তপ্ত পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ভগবানপুর ২ নম্বর ব্লক৷ ভোটের আগে থেকেই অর্জুননগর, বরোজ, জুখিয়া, বাসুদেববেড়িয়া এবং ইটাবেড়িয়া পঞ্চায়েতের বিভিন্ন এলাকায় বিজেপির সন্ত্রাসে তৃণমূল কর্মীরা ঘরছাড়া৷ ভগবানপুর বিধানসভার অন্তর্গত ৪০টিরও বেশি বুথে তৃণমূল পোলিং এজেন্ট বসাতে পারেনি৷ ভোটের ফল বেরনোর পর তৃণমূল কর্মীরা ঘরে ফিরতে শুরু করে৷ শুরু হয় নতুন সন্ত্রাস৷
ঘটনার পর এফআইআর করেছেন তৃণমূলের পূর্ব মেদিনীপুর জেলার তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক তরুণকুমার জানা৷ সেই সমস্ত বিজেপি নেতাদের নাম লিখিতভাবে জানানো হয়েছে, যাঁরা এই হিংসার সঙ্গে যুক্ত৷ বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ মাইতির নেতৃত্বে চলতে থাকা লাগাতার হিংসার শিকার তৃণমূল কর্মীরা৷ ঘটনায় যুক্ত ১০ জন বিজেপি কর্মীর নাম এফআইআরে উল্লেখ করা হয়েছে স্পষ্ট৷ নাম করা হয়েছে ২০-র বেশি তৃণমূল কর্মীরাও, যাঁরা অত্যাচারে ঘরছাড়া৷ তাঁদের অপরাধ একটাই৷ তাঁরা তৃণমূলে ভোট দিয়েছিলেন৷ চলেছে অকথ্য নির্বাচন৷ গুরুতর জখম হয়েছে পনেরো বছরের এক কিশোর৷
কলকাতা টিভির প্রতিনিধি কথা বলেছিলেন তৃণমূলের মুখপাত্র তথা সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের সঙ্গে৷ বিজেপির তরফে এই ছবি দেখিয়েই দাবি করা হয়েছিল, এরা নাকি বিজেপির কর্মী৷ তৃণমূল নাকি তাঁদের ওপর ওপর অত্যাচার চালিয়েছে৷ ঘটনা সামনে আসতে বোঝা গেল পুরোটাই উল্টো৷ তাঁরা শান্তি চান৷ কলকাতা টিভিকে জানিয়েছেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলার তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক তরুণকুমার জানা৷
বন্দুকের নলই তো হয় শক্তির উৎস৷ আঁচ করা যায়, যদি বিজেপি বাংলার গদিতে বসত, তা হলে হয়তো বিদ্বেষজনিত অপরাধে উত্তরপ্রদেশে পরেই নাম থাকত পশ্চিমবঙ্গের৷ হয়তো দলিত, সংখ্যালঘুরা শিকার হতেন অত্যাচারের৷ শাসকের নির্লজ্জতার ইতিহাস গড়া হত আবার৷ না, সে যাত্রায় বেঁচে গিয়েছে বাংলা৷ কিন্তু কোণায় কোণায় বিজেপি নামের একটি দল তার বর্বরতার ছাপ রেখে যাচ্ছে৷ এই একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়েও বড় বিস্ময় জাগে৷ ভয় হয়৷ যে কোনও সময় রাষ্ট্র যে কোনও কাউকে দাগিয়ে দিতে পারে রাষ্ট্রদোহীর তকমা৷ যে কোনও উপায়ে রাষ্ট্রের অপছন্দের কারও মুখ বন্ধ করে দেওয়া হবে৷ আর সেই মুখ বন্ধ করার ভাষা হবে ভয়ঙ্কর, মারা হতে হাতে৷ নিজেদের পরাভব ঢাকতে শরীরে বানিয়ে দেওয়া হবে দগদগে ক্ষত৷ আমরা দেখব, ‘গোপন হিংসা কপট রাত্রিছায়ে…’৷