কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: কংগ্রেসের চিন্তন শিবির নিয়ে শতবর্ষপ্রাচীন দলকে কটাক্ষ তৃণমূলের। সোমবার তৃণমূলের মুখপত্র ‘জাগোবাংলা’র সম্পাদকীয়তে কংগ্রেসের বিজেপি-বিরোধিতা নিয়ে রাহুল গান্ধীকে তীব্র ভাষায় সমালোচনা করা হয়েছে। গত কিছুদিন ধরেই তৃণমূল প্রচার করছে, তারাই আসল কংগ্রেস। কারণ, সর্বভারতীয় কংগ্রেস এখন বিপজ্জনক বাড়ির মতোই জন-পরিত্যক্ত হয়ে গিয়েছে। বিজেপির বিরুদ্ধে সর্বশক্তি দিয়ে যদি কেউ লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন, তাঁর নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফলে, রাহুলের মুখে বিজেপি-বিরোধিতার কথা কিংবা কংগ্রেসই এখনও প্রধান বিরোধী মুখ, এসব কথা ধোপে টিকবে না।
সম্পাদকীয়তে লেখা হয়েছে, কংগ্রেসের নিজের ঘরই বিধ্বস্ত। এই অবস্থায় তারা অন্যের ভুল ধরার ফন্দি খুঁজছে। রাহুল গান্ধী ‘অন্য দল তো পরের কথা, দলেই কার্যত হ্যাটা হয়েছেন।’ তৃণমূল মনে করে, ‘কংগ্রেসই যে বিজেপির আসল বিরোধী সেটা খার এখন মানুষ বিশ্বাস করেন না। মানুষ নিজের অভিজ্ঞতা দিয়ে বুঝেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখন বিরোধী মুখ। বিজেপিও সেটাই মনে করছে’।
সম্পাদকীয়তে আরও লেখা হয়েছে, ‘রাজ্যে রাজ্যে কংগ্রেস কার্যত অপাংক্তেয়।…তাহলে তারা কী করে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করবে? বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কংগ্রেস বারবার ব্যর্থ হচ্ছে।’ বিজেপিকে আক্ষরিক অর্থে ধর্মীয় উন্মাদ বলে আখ্যা দিয়ে তৃণমূলের মুখপত্র লিখেছে, ‘…কঠিন লড়াইয়ের রাস্তায় নামতেই হবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই কাজটাই করছেন। রাহুল গান্ধীরা সেই কাজে ব্যর্থ হয়েছেন। এই সারসত্যটা রাহুল গান্ধীও বোঝেন। তবু নিজেদের দুর্বলতা ঢাকতে কংগ্রেসকে প্রধান বিরোধী বলা ছাড়া তাঁর অন্য উপায় আছে কী?’ সংসদে কংগ্রেস যে শক্তি-ভারসাম্যে অনেক পিছিয়ে, তাই নিয়েও রাহুলকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি তৃণমূল। মুখপত্রে লেখা হয়েছে, ‘…সাংসদ সংখ্যা কম থাকায় লোকসভার বিরোধী দলনেতার পদটিও সরকারিভাবে পাননি।’
আরও পড়ুন: Corona Updates India: দেশে নিম্নমুখী করোনা সংক্রমণের সংখ্যা, কমছে মৃত্যুর সংখ্যাও
‘চিন্তনের চিন্তা’ শিরোনামে লেখা সম্পাদকীয়তে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসকে একেবারে বাদ দিয়ে বিজেপি-বিরোধী জোট গঠনের সম্ভাবনা নেই বলেই মনে করা হয়েছে। ‘কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস ২০২৪শের লড়াইয়ের কথা ভাবছে না’ বলেও জানানো হয়েছে মুখপত্রে।
সুতরাং, রাহুল গান্ধীর বক্তব্যের বিরোধিতা করলেও সর্বভারতীয় স্তরে বিজেপি-বিরোধী মহাগাঁটবন্ধনে কংগ্রেসকেও যে ডাকা হবে, তা পরিষ্কার। এখন কংগ্রেসের সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করবে, তারা মমতার নেতৃত্বাধীন জোটে থাকবে, নাকি পৃথক লড়াই করে বিজেপি-বিরোধী ভোটভাগে মোদির দলের হাত শক্ত করবে।