জলপাইগুড়ি: ডুয়ার্স (Doors)। বাংলার পর্যটন মানচিত্রের অন্যতম গন্তব্যস্থল (Tourist Destination)। পাহাড়, নদী, বনজঙ্গল ও বণ্যপ্রাণ যাঁরা ভালোবাসেন, তাঁরা সময় পেলেই ছুটে চলে আসেন ডুয়ার্সের পার্বত্য এলাকায় প্রকৃতির মাঝে। শুধু বাংলার নয়, বাইরের রাজ্য থেকেও এখানে লোকজন ঘুরতে আসেন। এমনই সৌন্দর্য ডুয়ার্সের। গরম হোক কিংবা শীতকাল (Summer or Winter), বর্ষাকাল বাদ দিলে সারা বছরই এখানে পর্যটকদের ঢল নামে। পর্যটকদের জন্য সুখবর, ডুয়ার্সে এলে আরও একটি গন্তব্যস্থলে তাঁদের জন্য অপেক্ষা করছে জঙ্গলের নিরিবিলিতে একান্তে খানিকটা সময় কাটানোর। শান্ত পরিবেশে কটেজ এবং তাঁর সামনেই জঙ্গলের মনোরম শোভা।
আরও পড়ুন: Weather Update: মঙ্গলবারে নামল পারদ, কিন্তু বড়দিনে হতাশ করবে শীত!
ডুয়ার্সের জঙ্গল লাগোয়া অঞ্চলে নতুন গন্তব্যস্থল রাভা বস্তি (Rabha Basti)। জলপাইগুড়ি বনবিভাগের মোরাঘাট জঙ্গলের পাশেই অবস্থিত একাধিক বনবস্তি। এই বনবস্তিগুলিতে মূলত রাভা জনজাতির বসবাস (Rabha Tribal Cummunity)। এই সমস্ত বনবস্তি এলাকাতেই তৈরি করা হয়েছে একাধিক হোম-স্টে (Home-Stay)। রাভা জনজাতির মানুষজন মূলত কৃষিকাজ এবং পশুপালন (Agriculture and Animal Husbandry) করে জীবিকা নির্বাহ করেন। দারিদ্রতা (Poverty) একটা বড় সমস্যা তাঁদের কাছে। দরিদ্র ও পিছিয়ে পড়া (Poverty and Backward) রাভা জনজাতির মানুষ এই হোমস্টেগুলি নিয়েই স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন আর্থিক লাভের আশায়। উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, এর আগে পর্যটন ব্যবসার (Tourism Business) সাথে তাঁরা কোনওভাবেই যুক্ত ছিলেন না। আর এই কথা চিন্তা করেই পর্যটকদের আকর্ষণ করার উদ্দেশ্যে হোমস্টে শুরু করার আগে রাভা জনজাতির মানুষদের দার্জিলিংয়ে (Darjeeling) রাজ্য পর্যটন দপ্তর তরফে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।
মোগলকাটা এবং মেলা বনবস্তিতে মোট পাঁচটি হোমস্টে তৈরি করা হয়েছে। এই এলাকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অপরূপ। নোনাই নদীর পাশ দিয়ে বয়ে গিয়েছে এই মোড়াঘাট জঙ্গল। আর এই নদী এবং জঙ্গলকে কেন্দ্র করেই এই নতুন পর্যটন কেন্দ্রের ভাবনা। হাতি, বাইসন, লেপার্ড, ময়ূর সহ একাধিক বন্যপ্রাণী এবং বিভিন্ন রকমের পাখির দেখা মেলে এই এলাকায়। সেই কারণেই এই জঙ্গলকে কেন্দ্র করে জঙ্গল সাফারি (Jungle Safari) চালুর দাবি জানিয়েছেন রাভা বস্তির বাসিন্দারা। তাঁদের বক্তব্য, হোমস্টেগুলি তৈরি করা হয়েছে ঠিকই, তবে এখনও পর্যন্ত সেইভাবে পর্যটকদের পা পড়েনি এই এলাকায়। যদি এই জঙ্গলকে কেন্দ্র করে সাফারি চালু করা যায়, তাহলে পর্যটকদের আনাগোনা বাড়বে। নাহলে যে উদ্দেশ্যে এই হোমস্টে তৈরি করা হয়েছে, তা আদৌ সফল হবে কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। কিন্তু একটা কথা বলাই যায়, প্রচার পেলে ও পর্যটকদের আনাগোনা বাড়লে ডুয়ার্সের অন্যান্য পর্যটন কেন্দ্রকেও সমানে টেক্কা দিতে পারে এই রাভা বস্তি।