একেই বলে রাজার জাত। আধুনিক পৃথিবীকে সভ্যতা ও শিক্ষার আলো দেখানো ইংরেজরা এবার রানির মৃত্যুশোকের মধ্যেও পরিবেশরক্ষায় সুসভ্য নাগরিকের পরিচয় রাখল। রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ মারা (Queen Elizabeth II’s Death ) যাওয়ার দিন থেকে বাকিংহাম রাজপ্রাসাদের (Buckingham Palace) চতুর্পাশে এসে জড়ো হচ্ছেন কাতারে কাতারে সাধারণ মানুষ। চোখের জলে রানির প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানানোর পাশাপাশি সঙ্গে করে আনছেন ফুলের স্তবক (bouquets of flowers)। কেউ আনছেন টেডি বিয়ার (Teddy Bear)। অথবা মোমবাতি (Candals)।
প্লাস্টিকে বা রঙিন মোড়ক দেওয়া সেই সব ফুলের স্তবকের পাহাড় জমছে বাকিংহাম প্রাসাদের চারপাশে। যার ফলে পরিবেশ দূষণের (Pollution) আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। আর তা দেখেই পরিবেশপ্রেমী কিছু মানুষ তা পরিষ্কার করতে হাত লাগিয়ে দিলেন। তাঁদের সেই মহতি কাজের ভিডিয়ো ভাইরাল হয়ে গেল সারা দুনিয়ায়। বলা বাহুল্য দুনিয়ার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পরিবেশ সচেতন সেইসব মানুষের প্রতি টুপি খুলে কুর্নিশ জানালেন সকলেই।
গত বৃহস্পতিবার ৯৬ বছর বয়সে প্রয়াত হন রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ। রাজপরিবারের রীতি অনুযায়ী এখনও তাঁর শেষকৃত্য (Funneral) হয়নি। তাই প্রায় প্রতিদিনই বাকিংহাম প্রাসাদের বাইরে রানির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আসছেন কচিকাঁচা থেকে প্রবীণ নাগরিকরা। সকাল থেকে দিনভর হাজার হাজার মানুষ বাকিংহাম প্রাসাদের বাইরের উদ্যানে এসে ফুল দিয়ে যাচ্ছেন, মোমবাতি জ্বালিয়ে যাচ্ছেন। সেইসব সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে টেডি বিয়ারও। পরিবেশপ্রেমীরা বলছেন, ফুলপাতা পচিয়ে নষ্ট করে ফেলা যাবে। কিন্তু, টেডি বিয়ার, প্লাস্টিক বা মোমবাতি সহজে পচনশীল নয়। এর ফলে মারাত্মক পরিবেশ দূষণের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। যে কারণে পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে তাঁরা স্বেচ্ছায় এগুলি পরিষ্কারের কাজে হাত লাগিয়েছেন।
VIDEO: People remove the plastic wrapping around the thousands of bouquets of flowers laid around Buckingham Palace in tribute to Queen Elizabeth II, who died on Thursday at the age of 96. pic.twitter.com/7gy4k4jFik
— AFP News Agency (@AFP) September 13, 2022
তাঁদের সেই কাজের একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়ে গিয়ছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে, স্বেচ্ছাসেবকরা ফুলের স্তবক থেকে প্লাস্টিকের পলিব্যাগ ও মোড়কগুলি খুলে ফেলছেন। শুধু তাই নয়, প্রতিবেশী এক বৃদ্ধা মহিলা তাঁদের সেই কর্মকাণ্ড দেখে নিজে থেকেই এগিয়ে এসেছেন সাফাইয়ের কাজে। তিনি বললেন, দেখলাম ওরা পরিষ্কারের কাজ করছে। তাই আমিও ওদের সাহায্য করতে চলে এসেছি। শ্রদ্ধা জানাতে আসা এক মহিলাও স্বীকার করেন, এভাবে প্লাস্টিক ও অপচনশীল পদার্থ শহরের পরিবেশের ক্ষতি করতে পারে। যাঁরা রানিকে শ্রদ্ধা জানাতে আসছেন, তাঁরা যেন এ ব্যাপারে সতর্ক থাকেন। বাকিংহাম প্রাসাদের পক্ষ থেকেও জনসাধারণকে প্লাস্টিকমুক্ত ফুল আনতে অনুরোধ জানিয়েছে।