নয়াদিল্লি: মঙ্গলবার ভারতীয় জনতা পার্টির (Bharatiya Janata Party – BJP) সংসদীয় দলের বেঠক (Parliamentary Party Meeting) ছিল। বৈঠক চলাকালীন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi, Prime Minister of India) বিজেপি সাংসদদের উদ্দেশে ‘সামাজিক কাজে মনোনিবেশ (Focus On Social Work)’ করার বার্তা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, রাজনীতি করার চিরাচরিত ধারা (Traditional Way) বদলে গিয়েছে। দলের সাংসদদের (BJP MPs) জন্য তাঁর দাওয়াই, “সোশ্যাল ওয়ার্ক করুন, পলিটিক্স ঠিক অনুসরণ করবে।”
গত ১৩ মার্চ সংসদে বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয় পর্ব (Second Leg of Budget Session) শুরু হওয়ার পর এটি প্রথম সংসদীয় বৈঠক। সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুসারে, প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেছেন, উত্তরপূর্ব ভারতের রাজ্যগুলিতে সম্প্রতি বিজেপি ভালো ফল করেছে, তা দেখে বিরোধীরা ঘাবড়ে (Nervous) গিয়েছে এবং বিচলিত (Rattled) হয়ে পড়েছে। তিনি আরও বলেছেন, গুজরাতে (Gujrat) বিজেপি জেতার পর একই রকম প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছিল। প্রধানমন্ত্রীর স্পষ্ট কথা, “আমরা যত বেশি জিতব, ওদের আক্রমণ তত বেশি কঠোর হবে।” এরপর, বৈঠকে উপস্থিত বিজেপি সাংসদদের সতর্ক করে দিয়ে তিনি বলেছেন, “জোরদার লড়াইয়ের জন্য আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে।”
আরও পড়ুন: Mamata Banerjee | সিঙ্গুরের মাটি থেকে জোড়া ভোটের প্রচার শুরু মমতার
মোদি এমন সময়ে এই মন্তব্য করলেন, যখন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীকে (Rahul Gandhi, Congress Leader) ভারতের সংসদ থেকে অযোগ্য (Disqualified) ঘোষণা করায় বিরোধীরা প্রতিবাদ (Protest) করছে। ২০১৯ সালের একটি মানহানির মামলায় (Defamation Case) গুজরাতের সুরাট কোর্ট (Surat Court) দোষী সাব্যস্ত করেছে রাহুলকে, তার পরপরই লোকসভায় (Lok Sabha) অযোগ্য ঘোষণা করে তাঁর সাংসদ পদ কেড়ে নেওয়া হয়েছে। কংগ্রেসের নেতৃত্বে বিরোধীরা (Congress-Led Oppositions) এই নিয়ে বিক্ষোভ জানিয়েছে কেন্দ্রের মোদি সরকারের (Modi Govt) বিরুদ্ধে।
এবার বাজেট সেশনের অধিবেশন বারবার মুলতুবি (Adjourn) হয়েছে, লাগাতার প্রতিবাদ-বিক্ষোভ হয়েছে। এর আগে বিরোধীরা আদানি-হিন্ডেনবার্গ ইস্যুতে (Adani-Hindenburg Issue) বিরোধিরা যৌথ সংসদীয় কমিটির (Joint Parliamentary Committee – JPC) তদন্তের দাবি জানিয়েছে, আর এবার ক্ষমতা ও প্রতিষ্ঠানের অপব্যবহার করে কংগ্রেস নেতাকে অযোগ্য ঘোষণা করার অভিযোগ আনা হয়েছে কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন শাসকদলের বিরুদ্ধে।
আগামী বছর দেশে লোকসভা নির্বাচন (General Election 2024) রয়েছে। সেই দিকেই লক্ষ্য রেখে বিজেপি এগোতে চাইছে। বিজেপি সাংসদের মোদি বলেছেন, দলীয় নেতাদের প্রধান ফোকাস এখন সামাজিক কাজের উপর হওয়া উচিত, যা আখেরে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করে দেবে। এপ্রসঙ্গে ‘বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও (Beti Bachao, Beti Padhao)’ প্রকল্পের কথা তুলে ধরে তিনি উল্লেখ করেছেন, তিনি গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন রাজ্যে সাফল্য এনে দিয়েছিল। এই স্কিম সংশ্লিষ্ট রাজ্যে লিঙ্গ অনুপাতকে (Sex Ration) উন্নত করতে এবং দলের সম্পর্কে ধারণা পরিবর্তন করতে সাহায্য করেছে। বিজেপির পক্ষ থেকে সংবাদমাধ্যমকে বলা হয়েছে, মোদিজি লোকজনের মনজয় করতে চান এবং নির্বাচনী ক্ষেত্রে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে চান। যা কেবলমাত্র সামাজিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমেই সম্ভব। রাজনীতি আপনা থেকেই অনুসরণ করবে।
অ্যাকশন প্ল্যান
প্রধানমন্ত্রী মোদি দলের সাংসদদের নির্দেশ দিয়েছে, সামাজিক ন্যায় সপ্তাহ (Samajik Nyay Saptah/Social Justice Week) পালনের উপর মনোনিবেশ করতে বলেছেন। আগামী ৬ এপ্রিল বিজেপির প্রতিষ্ঠাতা দিবস (BJP Foundation Day) থেকে এটি শুরু হবে। ১৫ মে থেকে ১৫ জুনের মধ্যে বিজেপি সাংসদদের দেশের জনতার কাছে পৌঁছানোর কথা বলেছেন মোদিজি। কেন্দ্রীয় সরকারের কৃতিত্ব এবং গত ৯ বছরে বিজেপির ভালো ভালো কাজ সম্পর্কে মানুষকে অবগত করার জন্য প্রচার চালাতে বলা হয়েছে। এছাড়া, আরও অনেক পরিকল্পনা নিয়েছে বিজেপি।
