নয়াদিল্লি: ২৮ মে রবিবার দিল্লিতে নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধন (New Parliament) করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এই অনুষ্ঠানকে বয়কটের ডাক গিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস (TMC) এবং সিপিআই, আপ, আরজেডি। বিরোধী শিবিরের আরও বেশ কয়েকটি দলও এই অনুষ্ঠান বয়কট করতে পারে। তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন (Derek O’brien) টুইট করে জানিয়েছেন, রবিবারের অনুষ্ঠানে তাঁরা উপস্থিত থাকবেন না। তৃণমূলের পথে হাঁটে বিহারের ডেপুটি সিএম এবং আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদবও জানিয়েছেন, নতুন সাংসদ ভবনের অনুষ্ঠানকে বয়কট করবেন। আম আদমি পার্টির (Aam Aadmi Party) নয়া সংসদভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান বয়কটের ঘোষণা করেন।
নয়া সংসদভবন উদ্বোধন ঘিরে রাজনৈতিক মহলে তরজা জারি (New Parliament Building)। রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর পরিবর্তে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কেন উদ্বোধন করবেন, সেই প্রশ্ন তুলেছে বিজেপি বিরোধী প্রায় সব রাজনৈতিক দলগুলি। বিরোধী দলগুলির একাধিক নেতা দাবি তুলেছেন, নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধন প্রধানমন্ত্রীর নয় রাষ্ট্রপতি করা উচিত। এরই মধ্যে, তৃমমূল কংগ্রেস এবং সিপিআই এই অনুষ্ঠান বয়কট করার সিদ্ধান্ত নিল। তবে, এখানেই শেষ নয়। একই রাস্তায় হাঁটতে পারে বিরোধী শিবিরের আরও কয়েকটি দলও। তৃণমূলের দাবি, এই অনুষ্ঠান শুধুমাত্র প্রধানমন্ত্রী মোদির ‘আমি ও আমিত্বের উদযাপন’। তাই রাষ্ট্রপতিকে ব্রাত্য করে রাখা হয়েছে। আমরা অনুষ্ঠানটি বয়কট করার কথা ভাবছি। তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও ব্রায়েন টুইটে লিখেছেন, সংসদ ভবন শুধু একটা বিল্ডিং নয়, পুরানো ঐতিহ্য, মূল্যবোধ, পরম্পরা, নিয়ম কানুন এর সঙ্গে এই সব কিছু জড়িয়ে রয়েছে। এটা ভারতের গণতন্ত্রের ভিত্তি।
Parliament is not just a new building; it is an establishment with old traditions, values, precedents and rules – it is the foundation of Indian democracy. PM Modi doesn’t get that
For him, Sunday’s inauguration of the new building is all about I, ME, MYSELF. So count us out
— Derek O’Brien | ডেরেক ও’ব্রায়েন (@derekobrienmp) May 23, 2023
তৃণমূল কংগ্রেসের পথে হেঁটেছে কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়াও। সিপিআই-এর সাধারণ সম্পাদক ডি রাজা জানিয়েছেন, তাঁর দল নতুন সংসদ ভবন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে যোগ দেবে না। বিহারের ডেপুটি সিএম এবং আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদবও জানিয়েছে, নতুন সাংসদ ভবনের অনুষ্ঠানকে বয়কট করবেন। তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতির হাত দিয়ে উদ্বোধন না করিয়ে তাঁকে অপমান করা হয়েছে। সব বিরোধী দল একসঙ্গে মিলে এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: E-Governed State | দৃষ্টান্ত কেরল সরকারের, এবার সম্পূর্ণ তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর শাসন
কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গের মতে, শোভন-অশোভনের ধার ধারে না এই সরকার। রাষ্ট্রপতি এবং প্রাক্তন রাষ্ট্রপতিকে আমন্ত্রণ না জানিয়ে অবমাননা করা হয়েছে। সোমবারই এক টুইটে তিনি লিখেছিলেন, মনে হয় শুধুমাত্র ভোটব্যাঙ্কের কারণেই মোদি সরকার দলিত এবং উপজাতি সম্প্রদায় থেকে ভারতের রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হওয়া নিশ্চিত করেছে। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীও বলেন, নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধন রাষ্ট্রপতির হাত দিয়েই হওয়া উচিত।
সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court of India) নির্দেশ উপেক্ষা করে দিল্লির প্রশাসনকে ক্ষমতাহীন করার জন্য কেন্দ্র যে অর্ডিন্যান্স এনেছে। মঙ্গলবার নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) সঙ্গে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের (Arvind Kejriwal) বৈঠকে সেই অর্ডিন্যান্সই প্রাধান্য পেল। কেজরিওয়াল মনে করেন, রাজ্যসভায় যদি বিরোধীরা এই অর্ডিন্যান্স আটকে দিতে পারে, তাহলে ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের (General Elections 2024) আগে বিরোধীদের বড় জয় হবে। আবহে নয়া সংসদভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান বয়কটের সিদ্ধান্ত নিয়েছে আপ-ও। দলের নেতা সঞ্জয় সিং ট্যুইটে লেখেন, ‘রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে আমন্ত্রণ না জানিয়ে তাঁকে চূড়ান্ত অপমান করা হয়েছে। রাষ্ট্রপতির এই অবমাননার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে নয়া সংসদভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান বয়কটের সিদ্ধান্ত নিয়েছে আম আদমি পার্টি’। সিপিআই-এর ডি রাজা, এআইমিমের আসাদউদ্দিন ওয়াইসি এবং আরজেডি-র মনোজ কুমার ঝা-সহ বেশ কয়েকজন বিরোধী নেতা নতুন ভবনের উদ্বোধনের পরিকল্পনার সমালোচনা করেছেন।
লোকসভার আগে নয়া সংসদ ভবনের উদ্বোধনের মধ্যদিয়ে আরও বেশী করে প্রচারের আলোতে আসতে চাইছে প্রধানমন্ত্রী। ভোট ব্যাঙ্ক বাড়াতেই প্রধানমন্ত্রী নিজেই সব কৃতিত্ব নিতে উদ্যোগী হয়েছেন। এই ইস্যুকে হাতিয়ার করেই ফের একবার জোটের হাত শক্ত করতে উদ্যোগী বিজেপি বিরোধী দলগুলি।