নয়াদিল্লি: ভোট এলেই রুটিরুজি ছেড়ে ছুট লাগাতে হয় ‘দেশে’ অর্থাৎ গাঁয়ের বাড়িতে। একে তো বিস্তর খরচ, তায় ছুটি বা মজদুরির টাকা যায় গচ্চা। তল্পি গুটিয়ে ট্রেনে বা বাসে গুঁতিয়ে ফেরার ঝক্কিও চাড্ডিখানি কথা নয়। কারণ, ভোট না দিলে যদি নাম কাটা যায়! কিন্তু, এবার আর অতশত ঝামেলা পোহাতে হবে না। যেখানে কাজ করেন, সেখানেই ভোটকেন্দ্রে গিয়ে নির্বাচিত করতে পারবেন নিজের কেন্দ্রের প্রার্থীকে। এমনই নতুন ধরনের ভোট মেশিন বা ইভিএম (EVM) নিয়ে আসছে নির্বাচন কমিশন (ECI)। পরিযায়ী শ্রমিকদের (migrant worker) ভোটদানের কথা ভেবে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির কৌশলে এমনই আশ্চর্য প্রদীপ নিয়ে আসতে চলেছে কমিশন।
এমনিতেই যে কোনও নির্বাচনে তিনভাগের একভাগ ভোটার ভোট দিতে যান না। তার মধ্যে একটা বিরাট অংশ হচ্ছেন পরিযায়ী শ্রমিক। যাঁরা কাজের তাগিদে বাস করেন ভিন শহরে কিংবা ভিন রাজ্যে। দুর্গাপুজোর মতো ফি বছরের ভোট উৎসবে তাঁদের গাঁটের কড়ি খরচ করে আসতে হয় নিজের ভিটেয়। কারণ ভোটার তালিকায় সেখানেই তাঁর নাম আছে। এবার সে ঝক্কির হাত থেকে নিষ্কৃতি মিলতে চলেছে। যে যেখানেই থাকুন না কেন, সেখান থেকেই এবার এবার ভোট দেওয়া যাবে।
নতুন এই ইভিএম পরীক্ষামূলকভাবে দেখানোর জন্য নির্বাচন কমিশন সব রাজনৈতিক দলকে আহ্বান জানিয়েছে। যদিও এই পদ্ধতিতে কেবলমাত্র দেশের ভিতরে থাকা পরিযায়ী শ্রমিক বা ভিনরাজ্যে কর্মরতরা ভোট দিতে পারবেন। নির্বাচন কমিশন অবশ্য জানিয়েছে, এই নতুন ধরনের মেশিন চালু করার আগে অনেক আইনি ও প্রযুক্তিগত দিক খতিয়ে দেখার আছে।
নতুন ইভিএমের ভিতরে রয়েছে একটি রিমোট ইলেকট্রনিক ভোটিং (RVM) ব্যবস্থা। যাতে একসঙ্গে অনেকগুলি কেন্দ্রের প্রোগ্রামিং করা থাকবে। সর্বমোট ৭২টি কেন্দ্রের প্রোগ্রামিং করা যাবে একটি মেশিনে। যে ব্যক্তি যে কেন্দ্রের ভোটার, তাঁর ভোটদানকালে বোতাম টিপে সেই কেন্দ্রের প্রার্থী তালিকা ভেসে উঠবে তাঁর চোখের সামনে।
নির্বাচন কমিশন একটি প্রেস বিবৃতিতে জানিয়েছে, ২০১৯ সালের সাধারণ নির্বাচনে ভোট পড়েছিল ৬৭.৪ শতাংশ। কমিশনের উদ্বেগ দেশের প্রায় ৩০ কোটি মানুষই ভোট দেননি। কমিশনের মতে, অধিকাংশ মানুষই নতুন ঠিকানায় ভোটার কার্ড বদলি করতে চান না। সবথেকে সমস্যা হচ্ছে অন্যত্র কর্মরত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে। তাই এই নতুন মেশিন আনার চিন্তাভাবনা চলছে। রাজনৈতিক দলগুলিকে আগামী ১৬ জানুয়ারি এই আশ্চর্য প্রদীপ ঘষে দেখাবে কমিশন। তারপর সকলের পরামর্শ নেওয়া হবে এ ব্যাপারে।